|
|
|
|
পরিবেশ রক্ষায় পরামর্শ
কুন্তক চট্টোপাধ্যায় • কলকাতা |
পরিবেশ রক্ষায় এ বার জঞ্জাল কমানোর দিকেই নজর দিতে বললেন বিজ্ঞানীরা। একই সঙ্গে বর্জ্যকে যাতে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা যায়, সে বিষয়টিও মাথায় রাখা প্রয়োজন বলে তাঁদের দাবি। পরিবেশবিদেরা বলছেন, শহরাঞ্চলে পরিবেশ দূষণ রোধে এই ব্যবস্থাই সব থেকে কার্যকরী হতে পারে। তবে এর সঙ্গেই খাদ্যশস্য ও জলের অপচয় কমাতে হবে বলে তাঁরা মনে করছেন।
বুধবার আন্তর্জাতিক পরিবেশ দিবসে কলকাতার এক বণিকসভার অনুষ্ঠানে রাজ্যের প্রাক্তন প্রধান পরিবেশ আধিকারিক প্রণবেশ সান্যাল জানান, কলকাতায় প্রতিদিন গড়ে মাথাপিছু ৬০০ গ্রাম করে গৃহস্থ বর্জ্য নির্গত হয়। এ ছাড়াও, বছরে ৭ লক্ষ টন চিকিৎসা বর্জ্য ও ২৬ হাজার টন বৈদ্যুতিন বর্জ্য তৈরি হয় বলেও তিনি জানান। প্রণবেশবাবুর মতে, গৃহস্থ বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ করে জৈব জ্বালানি তৈরি করা যায়। তবে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান বিনয়কান্তি দত্ত মনে করেন, জৈব জ্বালানি তৈরির ক্ষেত্রে এখনও সাধারণ মানুষের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। তাঁর কথায়, “আমরা দেখেছি, বিভিন্ন জেলায় খাটাল মালিকেরা গোবর গ্যাসের প্লান্ট বসানোর চেয়ে তা সরাসরি বিক্রিতে অনেক
বেশি আগ্রহী।”
|
পরিবেশ সচেতনতার ডাক। —নিজস্ব চিত্র |
পরিবেশবিদদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কলকাতা পুর-এলাকায় প্রতিদিন সাড়ে ৩ হাজার টন কঠিন বর্জ্য নির্গত হয়। তবে পুরসভার প্লান্টটি দিনে ৭০০ টন জঞ্জাল প্রক্রিয়াকরণ করতে পারে। পরিবেশবিদদের দাবি, জঞ্জাল প্রক্রিয়াকরণে প্লান্টটি যথেষ্ট পরিমাণে কাজ করছে না। বিষয়টি মেনে নিয়ে মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল) দেবব্রত মজুমদার বলেন, “ধাপায় আমাদের ওই একটি প্লান্ট রয়েছে। এই ধরনের প্লান্ট বসানোয় জায়গার সমস্যা রয়েছে।”
এ দিন বৈদ্যুতিন বর্জ্য বেড়ে যাওয়া নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশবিদেরা। তাঁরা বলছেন, ওই বর্জ্যে প্রচুর পরিমাণে সিসা, পারদের মতো ক্ষতিকারক ধাতু থাকে। এগুলি ঠিক মতো নষ্ট করা না হলে তা মাটির সঙ্গে মিশে খাদ্যশস্য ও ভূগর্ভের জলে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
খাদ্যশস্য ও জলের ব্যবহারের দিকেও নজর দেওয়া জরুরি বলে পরিবেশবিদদের দাবি। এ বছর রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিবেশ প্রকল্প (ইউনেপ) বিশ্ব পরিবেশ দিবসের বিষয় হিসেবে ‘থিঙ্ক, ইট অ্যান্ড সেভ’ নির্বাচন করেছে। পরিবেশ বিজ্ঞানী আশিস ঘোষ বলছেন, ভারতে ৩৭ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে। অথচ এ দেশেই প্রচুর খাদ্যশস্য নষ্ট হয়। সরকার খাদ্য কেনায় আরও সক্রিয় হলে শস্য নষ্ট হবে না। এবং অনেক বেশি মানুষ সস্তায় খাদ্যশস্য পাবেন।
এ দিনই একটি পরিবেশ সংগঠনের কর্মীরা রাজ্যে দূষণ নিয়ে সল্টলেকের পরিবেশ ভবনের সামনে সমাবেশ করেন। আয়োজকদের পক্ষে নব দত্ত জানান, কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলায় নানা রকম দূষণ বেড়েই চলেছে। কিন্তু এ নিয়ে সরকার-প্রশাসনের তরফে অবস্থার পরিবর্তনে বিশেষ ভূমিকা নেই। |
|
|
|
|
|