|
|
|
|
বর্জ্যের ঠিকানা পথেঘাটেই, নিস্তার খুঁজছেন নগরবাসী
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
বহু টাকা ব্যয় করে কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে দুর্গাপুর শহরে। অথচ এখনও আনাচে-কানাচে জমছে জঞ্জাল। বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বুধবার, বিশ্ব পরিবেশ দিবসের সকালে শহরের বিভিন্ন অংশে দেখা গিয়েছে জঞ্জালের ডাঁই। মাছি ভনভন। নোংরা প্লাস্টিক বাতাসে উড়ছে।
রায়ডাঙা, শ্যামপুর হোক বা অভিজাত এলাকা সিটি সেন্টার। ছবিটা একই। রাস্তার পাশে জমছে আবর্জনা। পুরসভার হেলদোল নেই। সকালে এই সমস্ত এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, দুর্গন্ধের হাত থেকে রক্ষা পেতে জমা আবর্জনার পাশ দিয়ে নাক ঢেকে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। নেতাজি সুভাষ পল্লির একটি রাস্তার ধারে জমা আবর্জনার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন বেসরকারি ইস্পাত কারখানার কর্মী মিলন দাঁ। তিনি বলেন, “বেশ কয়েক দিন আবর্জনা জমার পরে পুরসভার গাড়ি এসে নিয়ে যায়। তত দিন এ ভাবেই সবাই যাতায়াত করেন।” |
নেতাজি সুভাষপল্লির রাস্তায় জমে আবর্জনার স্তুপ। —নিজস্ব চিত্র। |
দুর্গাপুর স্টেশনের পাশে সেন মার্কেটেও একই চিত্র। আবর্জনার স্তুপ ঘেঁটে খাবার জোগাড় করছে গবাদি পশু। তাতে আবর্জনা ছড়িয়ে পড়ছে আরও। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পুরসভা থেকে নিয়মিত সাফাই না হওয়ার জন্যই এই পরিস্থিতি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, জঞ্জাল সাফাইয়ে পুরসভার কোনও গাফিলতি আছে কি না তা জানতে তিনি তথ্য জানার অধিকার আইনের শরণাপন্ন হন। পুরসভার তরফে জবাব আসে, শহরের সর্বত্র নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই করে তারা। তিনি বলেন, “অথচ শহর ঘুরলেই অন্য ছবি চোখে পড়ে।” তাঁর অভিযোগ, কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার দায় পুরসভার।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় জওহরলাল নেহেরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশন প্রকল্পের আর্থিক বরাদ্দে এবং একটি বেসরকারি সংস্থার লগ্নিতে ২০১০-এ দুর্গাপুরের শঙ্করপুরে কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। উদ্বোধন করেন রাজ্যের তৎকালীন নগরোন্নয়ন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। কেন্দ্রটি গড়ে ওঠার পরে পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। তার আগে পর্যন্ত দুর্গাপুর পুরসভা বাড়ি-বাড়ি বর্জ্য সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়ে ফেলত দুর্গাপুর সরকারি মহাবিদ্যালয়ের কাছাকাছি একটি জায়গায়। পুরসভার মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় অবশ্য এমন অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি জানান, শহরের বেশ কিছু জায়গায় বাড়ি-বাড়ি গিয়ে বর্জ্য সংগ্রহ করার ব্যবস্থা রয়েছে। অন্যত্র বিশাল ধাতব ডাস্টবিন রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে বাসিন্দারা সকালে বর্জ্য ফেলে যান। পুরসভার গাড়ি একটু বেলার দিকে তা সংগ্রহ করে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, “সচেতনতার অভাবে এখনও কেউ-কেউ রাস্তার ধারে জঞ্জাল ফেলে দেন। ফলে পুরো শহর জঞ্জালমুক্ত করে তোলা যাচ্ছে না। তবে চেষ্টা চালাচ্ছি।” |
|
|
|
|
|