তাঁর থেকে অনেক কম নম্বর পাওয়া বন্ধুরাও স্কুলে ভর্তি হয়ে গিয়েছে। কেউ কেউ শুরু করে দিয়েছে পড়া। কিন্তু এখনও স্কুলেই ভর্তি হতে পারেনি মাধ্যমিকে ৬৪২ পাওয়া হাওড়ার শ্যামপুরের গুজারপুর এলাকার সৌম্যদীপ গুড়িয়া।
স্থানীয় সুরেন্দ্রনাথ বিদ্যাপীঠের ছাত্র সৌম্যদীপের বাবা মুকুলরঞ্জন গুড়িয়া একটি কাপড়ের দোকানের কর্মচারী। সামান্য বেতনে রোজকার খাবার জোগানো ভার। ছেলের পড়াশোনার জন্য অতিরিক্ত খরচ দুরের কথা, প্রয়োজনীয় বই, খাতা কেনার জন্য জন্যও দু’বার ভাবতে হত তাঁকে। তারপরেও রঙচটা ঘরে বইয়ের অক্ষরে বুঁদ থাকা
সৌম্যদীপ |
সৌম্যদীপ স্বপ্ন দেখা ছাড়েনি। এ বছর মাধ্যমিকে অঙ্কে তার প্রাপ্ত নম্বর ১০০। ভৌতবিজ্ঞানে পেয়েছে ৯৯, ইংরেজিতে ৯৩, জীবন বিজ্ঞানে ৯০। “কিন্তু কী হবে এত নম্বর পেয়ে? এর থেকে ছেলে যদি বাজে ফল করত তাহলে হয়ত সান্ত্বনা পেতাম।”অভিমান ঝরে পড়ছিল সৌম্যদীপের মা স্বপ্নাদেবীর গলায়। ফল বেরানোর পর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। প্রশংসা এসেছে প্রচুর। কিন্তু এখনও এগিয়ে আসেনি কারও সাহায্যর হাত।
শান্ত স্বভাবের কিশোর সৌম্যদীপের কথায়, “বাড়িতে এক শিক্ষক বিনা বেতনে পড়াতে আসতেন। স্কুলের শিক্ষকেরাও যথেষ্ট সাহায্য করেছেন। ভেবেছিলাম আরও অনেক পড়াশোনা করব। কিন্তু সেটা মনে হয় আর হবে না।”
এর মধ্যেও কিছুটা আশার কথা শোনালেন সুরেন্দ্রনাথ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক সুমনকল্যাণ মাইতি। তিনি বলেন, “সৌম্যদীপ স্কুলে ভাল ছেলে হিসেবেই পরিচিত। ওর আর্থিক অবস্থার কথা আমরা জানি। যাতে ওর ভর্তিটা কোনও টাকা না নিয়েই করা যায় তার জন্য চেষ্টা করব।”
ভর্তি না হয় হল। কিন্তু তারপর? উচ্চশিক্ষায় খরচ আসবে কোথা থেকে?
প্রশ্ন শুনে সৌম্যদীপের হতাশ চোখের কোণ চিকচিক উঠলেও কোনও শব্দ বের হয় না। |