সম্পাদকীয় ২...
চালাকির দ্বারা
খাদ্য সুরক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত বিধি অর্ডিন্যান্স হিসাবে চালু হইবে, না কি সংসদে পেশ করিয়া দেশের আইন রূপে মঞ্জুর হইবে, তাহা লইয়া রাজধানীতে বিস্তর জল্পনা চলিতেছে। দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার এখনই দেশের দরিদ্র জনসাধারণকে এই সুরক্ষার অধিকার বুঝাইয়া দিতে ব্যগ্র। অন্তত সেই ভাবেই প্রধান শাসক দল কংগ্রেসের নেতারা বিষয়টিকে তুলিয়া ধরিতেছেন। সে জন্যই অধ্যাদেশ জারির প্রশাসনিক প্রক্রিয়া অনুসরণের পক্ষে সওয়াল। এ ব্যাপারে বিরোধী দলের ক্রমাগত সংসদের অধিবেশন ভণ্ডুল করার প্রবণতার প্রেক্ষিতটিও শাসকরা টানিয়া আনিয়াছেন। পঞ্চদশ লোকসভার একের-পর-এক অধিবেশন যে বিজেপির বাধায় বানচাল হইয়াছে, তাহা উল্লেখ করিয়া মন্ত্রিসভার একাংশ অধ্যাদেশের পক্ষে সওয়াল করিয়াছে।
বিরোধীদের সংসদ অধিবেশন ভণ্ডুল করার অপচেষ্টা শাসকদের বীতশ্রদ্ধ, এমনকী মরিয়াও করিয়া তুলিতে পারে। কিন্তু তথাপি সংসদকে এড়াইবার প্রবণতা গণতান্ত্রিক নয়। অধ্যাদেশ মারফত শাসনপ্রণালী চালু রাখার মধ্যে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিসভাকে উপেক্ষা করার বিপথগামিতা নিহিত আছে। সংবিধানে অধ্যাদেশ জারির সংস্থান আছে ঠিকই, তবে তাহা আপত্‌কালীন পরিস্থিতির জন্য, যখন সংসদ অধিবেশনের অনেক দেরি, অথচ কোনও বিলকে আশু আইনে পরিণত করা আবশ্যক, ইত্যাদি। সংসদের বাদল অধিবেশনের এমন কিছু বিলম্ব নাই। তা ছাড়া, বাদল অধিবেশন আগাইয়াও আনা যায়। বিজেপি-সহ একাধিক বিরোধী দল সেই মর্মে দাবিও তুলিয়াছে। সুতরাং সরকার যদি সত্য-সত্যই খাদ্য সুরক্ষা আইন প্রবর্তনে তত ব্যাকুল হয়, তবে বাদল অধিবেশন আগাইয়া আনা কিংবা এ জন্য সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকিতেও অসুবিধা নাই। বিরোধী দলগুলি সকলেই মোটের উপর বিলটির পক্ষে, তাহা পাশ হইতেও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
তত্‌সত্ত্বেও কেন ইউপিএ নেতৃত্ব অর্ডিন্যান্সের পথে? সম্ভাব্য ব্যাখ্যা একটিই: সংসদে বিল লইয়া বিশদ আলোচনা ও বিতর্কের পর্বে বিজেপি-সহ অন্যান্য দল কিছু সংশোধনী আনিবে, উপরন্তু সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হওয়ার আগে যে বিতর্ক ও আলোচনায় বিরোধীরা অংশগ্রহণ করিবেন, তাহা বিলের কারিগর ও রূপকার হিসাবে কংগ্রেসের ‘কৃতিত্ব’ আংশিক ভাবে হ্রাস করিতে পারে। গত লোকসভা নির্বাচনে যেমন প্রথম ইউপিএ সরকার একশো দিনের কাজের প্রকল্পকে তাহার জনকল্যাণ কর্মসূচির মুখ্য অভিমুখ করিয়া তুলিয়াছিল, এ বার তেমনই খাদ্য সুরক্ষা বিলকে আসন্ন লোকসভা ভোটের প্রচারে কাজে লাগাইবার ভাবনা প্রবল। সংসদীয় প্রক্রিয়ায় আইনের মর্যাদায় ভূষিত হইলে খাদ্য সুরক্ষার জন্য সনিয়া গাঁধী কিংবা ইউপিএ কোনও বাড়তি কৃতিত্ব দাবি করিতে পারিবেন না। তাই অর্ডিন্যান্সের খিড়কি পথ। ইহা সুপথ নহে। চালাকির দ্বারা খাদ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা হওয়া উচিত নয়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.