|
|
|
|
পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
থানায় ধরে নিয়ে গিয়ে দুই কিশোরীর যৌন নিগ্রহে অভিযুক্ত ওসি পুলিশেরই হেফাজত থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েছে মেঘালয় পুলিশ।
এ নিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি প্রেম সিংহের প্রাথমিক রিপোর্ট অসম্পূর্ণ বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন (এনসিপিসিআর)। একই সঙ্গে রাজ্য পুলিশের কঠোর নিন্দাও করা হয়েছে। এনসিপিসিআর প্রতিনিধিরা মেঘালয়ে গিয়ে সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ করছেন। রাজ্য সরকারকে ওই ঘটনা নিয়ে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে কমিশন।
পুলিশ রিপোর্ট অনুযায়ী, সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধি করতে কিশোর-কিশোরীদের দলে টানছে গারো জঙ্গিরা। সে জন্য সন্দেহভাজন কিশোর-কিশোরীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ১৩ মার্চ আমপাতিতে রাস্তা থেকে দুই কিশোরীকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, জেরার অজুহাতে ওই থানার ওসি নুরুল ইসলাম তাঁদের যৌন নিগ্রহ করেন। পিস্তল দেখিয়ে সে কথা ফাঁস না-করার হুমকিও দেওয়া হয়।
৩১ মে ফের এক অভিযোগকারিণীর বাড়িতে চড়াও হন অভিযুক্ত ওই পুলিশ অফিসার। অভিযোগ, ঘরে কেউ না-থাকার সুযোগে ফের ওই কিশোরীর যৌন নিগ্রহ করা হয়। ঘটনার খবর ছড়াতেই, ডিএসপি বিজয় ছেত্রী অভিযুক্ত নুরুল ইসলামকে নিয়ে তুরা চলে যান। অভিযোগ, ইসলামকে হাজতে না রেখে সরকারি আবাসে রাখা হয়েছিল। পাহারায় ছিলেন সাব ইনস্পেক্টর পি লিনসিয়াং ও তিন কনস্টেবল।
রাজ্যের আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) এইচ নোংপ্লু বলেন, “আমপাতি থানার ওসিকে ওই থানার লক-আপে রাখা হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষুব্ধ হতে পারতেন। সে কারণেই তাকে তুরায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন সকালেই তাঁকে সরকারিভাবে গ্রেফতার করা হত। কিন্তু ভোরবেলা ওই সরকারি আবাসের পিছনের দরজা দিয়ে ইসলাম পালিয়ে যান।”
এর জেরে রাজ্যজুড়ে নারী ও শিশু অধিকার সংগঠনের আন্দোলন শুরু হয়েছে। গতকাল এনসিপিসিআর-এর প্রতিনিধিরা ডিজি-র সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রতিনিধিদলের সদস্য যোগেশ দুবে বলেন, “পুলিশের বক্তব্যে আমরা সহমত নই। নারী ও শিশু অধিকার আইনের ধারা পুলিশ অমান্য করেছে। রাজ্যের প্রধান সচিবকে এ নিয়ে তদন্ত চালিয়ে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।”
অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করার পাশাপাশি, দুই অভিযোগকারিণী এবং তাদের পরিবারের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বলেছে এনসিপিসিআর। গতকালই আদালত ইসলামের নামে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোশন ওরারজিরি পুলিশের ভুল স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, অভিযুক্তের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি অন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ইসলামকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। কর্তব্যে গাফিলতির জন্য এক ডিএসবি, দুই সাব ইনস্পেক্টর ও তিন কনস্টেবলকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
২০১১ সালে শিলং-এর একটি হোটেলে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহের পর খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার ফের চাকরিতে বহাল হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে এনসিপিসিআর। মাসতিনেক আগে ওই ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশকর্মী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। বর্তমানে তাকে রিজার্ভ পুলিশে কোয়ার্টার মাস্টার পদে বহাল করা হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে দ্রুত শাস্তি দেওয়ার কথা বলেছে কমিশন। |
|
|
|
|
|