|
|
|
|
মোদীর পালেই হাওয়া উপনির্বাচনে |
বিহারের হারেও খুশি বিজেপি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
কর্নাটকের ভোটের ফল কিছুটা স্বস্তি দিয়েছিল কংগ্রেসকে। কিন্তু সেই স্বস্তি বিশেষ স্থায়ী হল না। লোকসভা নির্বাচনের আগে আজ চার লোকসভা এবং চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে গো-হারা হারল তারা।
অন্য দিকে, চাঙ্গা হয়ে উঠেছে বিজেপি। বিশেষ করে গুজরাতের ফলে। সেখানে দু’টি লোকসভা এবং চারটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন হয়েছে। সব ক’টি আসন আগে কংগ্রেসের দখলে থাকলেও এ বার হইহই করে জিতেছে বিজেপি। এই জয় দলের প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর সম্ভাবনাও অনেকটাই বাড়িয়ে দিল বলে মনে করা হচ্ছে। দিল্লিতে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সম্মেলনে যোগ দিতে আসা মোদী আজ উজ্জীবিত স্বরে বলেছেন, “উপনির্বাচনের এই ফলে ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের স্পষ্ট বার্তা নিহিত। কেন্দ্রে কংগ্রেসের বিদায় এ বার আসন্ন।”
কংগ্রেস অবশ্য সাহসী মুখ দেখানোরই চেষ্টা করছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম থেকে শুরু করে দলীয় মুখপাত্র সন্দীপ দীক্ষিত সকলেই দাবি করেছেন, উপনির্বাচনের ফল দেখে লোকসভা ভোটে কী হবে, তা কখনওই বোঝা সম্ভব নয়। তা ছাড়া, উপনির্বাচনে বরাবর স্থানীয় বিষয় ও স্থানীয় প্রশাসনের বড় ভূমিকা থাকে। চিদম্বরমের কথায়, “বিট্টল রাড়ারিয়া যখন টোল প্লাজায় বন্দুক দেখিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছিলেন, তখন তিনি বিজেপি-র কাছে ছিলেন গুন্ডা। কিন্তু কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিতেই তিনি মোদীর কাছে রাতারাতি সাধু হয়ে গেলেন।
ফলে উপনির্বাচনে কার ভূমিকা কী ছিল, তা সকলেই জানেন।”
বিট্টল রাড়ারিয়ার হাতে ধরে বিজেপি যে শুধু পোরবন্দর লোকসভা কেন্দ্রটিই কংগ্রেসের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে তা নয়, বনসকান্থা আসনেও জিতেছে তারা। লিম্বাদি, মোরভাহাদাফ, জেতপুর এবং দোরাজি বিধানসভা আসন চারটিও এ যাত্রায় খুইয়েছে কংগ্রেস। ঘরোয়া আলোচনায় কংগ্রেস নেতারা বলছেন, ৬টি আসনই যে হাতছাড়া হতে চলেছে, সেটা তাঁরা আগেই বুঝতে পেরেছিলেন। তাঁদের যুক্তি, মাত্র ছ’মাস হল মোদী গুজরাতে ফের ক্ষমতায় এসেছেন। সেই জয়ের রেশ থাকতে থাকতেই উপনির্বাচন হওয়ায় এই ভরাডুবি।
গুজরাতে দলের এই বিপুল জয় যদি বিজেপি নেতাদের স্বস্তি দিয়ে থাকে, তা হলে বিহারে স্বস্তি দিয়েছে শরিক নীতীশ কুমারের দলের হার! মহারাজগঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে নীতীশের প্রার্থীকে হারিয়ে দিয়েছেন আরজেডি-র প্রভুনাথ সিংহ। প্রায় ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ভোটে জিতেছেন লালুপ্রসাদের দলের প্রার্থী। তবে এই আসনটি আরজেডি-র হাতেই ছিল। বিজেপি নেতাদের খুশির কারণ, তাঁরা মনে করছেন বিজেপি-র থেকে দূরত্ব তৈরি করলে ফল কী হতে পারে, নীতীশ এ বার তা টের পেলেন।
তবে একই সঙ্গে বিহারের সম্ভাব্য রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে কৌতূহল তৈরি করে দিয়েছে এই ফল। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি লোকসভা ভোটে লালুর সঙ্গে জোট গড়তে চাইবে কংগ্রেস? জবাবে কংগ্রেস নেতারা বলেন, সবটাই নির্ভর করছে নীতীশের উপর। অনেকের মতে, জাতীয় স্তরে মোদীর উত্থানের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় মুসলিম ভোটের একটা বড় অংশ হারিয়েছেন বিজেপি-শরিক নীতীশ। এখন তাঁকেই ঠিক করতে হবে, তিনি হিন্দু ভোটের আশায় বিজেপি-র সঙ্গেই থাকবেন, না মুসলিম ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখতে তাদের থেকে দূরত্ব তৈরি করবেন। নীতীশের সেই পদক্ষেপ দেখেই জোট সম্পর্কে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানাচ্ছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রের ফল দেখেও খুশি বিজেপি শিবির। ওই আসনে প্রার্থী না দিয়ে তৃণমূল নেত্রীকে বার্তা দিয়েছিলেন দলীয় সভাপতি রাজনাথ সিংহ। আজ সেখানকার ফল দেখার পরে বিজেপি নেতাদের অনেকেই দাবি, তাঁরা প্রার্থী দিলে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে জেতা কঠিন হতো।
পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা শাকিল আহমেদও বলেন, “আমরা বরাবরই বলেছি যে, বিজেপি-তৃণমূল আঁতাঁত করে চলছে। আজকের ফল সেটাই প্রমাণ করে দিল। বিজেপি-র কাঁধে ভর করে হাওড়ায় জিতল তৃণমূল। এটা নিশ্চয়ই রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষের নজর এড়িয়ে যাবে না।” |
|
|
|
|
|