মাওবাদী আতঙ্ক ‘ভুলিয়ে’ পর্যটকদের নেতারহাটে ফেরাতে তৎপর ঝাড়খণ্ড।
এ কাজে প্রশাসন পাশে নিয়েছে সেখানকার জঙ্গল-পাহাড়ের সাধারণ মানুষকেই। ‘মাওবাদী-দূর্গ’ বলে চিহ্নিত লাতেহার জেলার ওই পর্যটন কেন্দ্রে জঙ্গিদের ‘অনুপ্রবেশ’ রুখতে নতুন ছকও তৈরি করেছে সরকার।
লাতেহারের জেলাশাসক আরাধনা পট্টনায়ক জানান, নেতারহাটের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে জীবিকার অভাব রয়েছে। দরিদ্র বাসিন্দাদের টাকার ‘প্রলোভন’ দেখিয়েই এতদিন নিজেদের দলে টেনেছে জঙ্গিরা। সেই পথটাই আটকাতে চাইছে প্রশাসন। জেলাশাসক বলেন, “নেতারহাটের বিভিন্ন জায়গায় পার্কিং-লট, ক্যাফেটেরিয়া, হস্তশিল্পের দোকান গড়বে সরকার। সে সবের দায়িত্ব থাকবে স্থানীয়দের হাতে। এ ভাবেই তাঁদের রোজগারের ব্যবস্থা করা হবে। সে ক্ষেত্রে পর্যটকদের সুবিধা-সমস্যার দিকে খেয়াল রাখবেন গ্রামবাসীরাই।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, নেতারহাটকে ‘সাজানোর’ প্রথম পর্যায়ের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। সংস্কার হয়েছে ‘ম্যাগনোলিয়া সানসেট পয়েন্ট’। জঙ্গলে লাতেহার জেলা পরিষদের বাংলোটিরও সংস্কার হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নেতারহাটের পাহাড়ের ওই ‘সানসেট-পয়েন্ট’ থেকে সূর্যাস্ত সবচেয়ে সুন্দরভাবে দেখা যায়। এত দিন ভাঙাচোরা একটি কাঠামোতে দাঁড়িয়েই সূর্যাস্ত দেখতেন পর্যটকরা। সেই জায়গাটিই এ বার মার্বেল দিয়ে সাজানো হয়েছে। সানসেট-পয়েন্টের উন্নয়নের কাজ শেষ হলে সাজানো হবে ‘সানরাইজ পয়েন্ট’টিও। |
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, নেতারহাটে সৌন্দর্য্যয়নের কাজের জন্য লাতেহার জেলা প্রশাসনকে রাজ্যের পর্যটন দফতর থেকে ইতিমধ্যেই ৮ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক জানান, ‘সানসেট-পয়েন্টের’ পাশেই একটি পার্কিং লট তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যেই সেখানে একটি ‘কফিশপ’ তৈরি করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ছোটদের জন্য রয়েছে খেলার জায়গাও। প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে, পার্কিং-লট, কফিশপ, ছোটদের পার্ক-সহ নতুন গড়ে তোলা পরিকাঠামোগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকবে গ্রামবাসীদের হাতেই। সে সব কাজের তদারকিতে ‘ম্যাগনোলিয়া সানসেট-পয়েন্ট ডেভেলপমেন্ট কমিটি’ নামে একটি সংস্থাও গঠন করা হয়েছে। জেলাশাসক আরও জানিয়েছেন, নেতারহাটের বিভিন্ন জায়গায় হস্তশিল্প কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। সেখানে স্থানীয় মহিলাদের হাতের কাজ শেখানোর ব্যবস্থা করা হবে।
লাতেহার জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানান, পর্যটকদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য বেতলা থেকে নেতারহাট যাওয়ার রাস্তা মেরামতির কাজ শেষ হয়েছে। তবে রাজ্যের অন্য প্রান্ত থেকে নেতারহাট যাওয়ার রাস্তা— গুমলা রোড এখনও ভাঙাচোরাই। |