দমকল কেন্দ্র বলতে একটি বড় গাড়ি এবং একটি পাম্প। সেটি নিয়েই প্রয়োজনে সারা শহর ঘুরে বেড়ান দমকল কর্মীরা। কালনা মহকুমার প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের ভরসা এটাই। তবে বড় গাড়ি হওয়ায় বাড়ির বা বাজারের সরু গলির মধ্যে ঢোকা সম্ভব হয় না, আবার একটাই মাত্র গাড়ি হওয়ায় শহরে দু’জায়গায় আগুন লাগলে এক দিক সামলাতে গিয়ে পুড়ে ছাই হয়ে যায় আরেক দিক। এমন অবস্থায় শহরের ঘিঞ্জি বাজারগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
সম্প্রতি কালনা মহকুমায় বেশ কয়েকটি অগ্নিকাণ্ড ঘটে গিয়েছে। তার মধ্যে মধুবন এলাকায় আগুন নেভাতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি বেগ পেতে হয়েছে কর্মীদের। রাস্তা সরু হওয়ায় ঘুরে ঘুরে একটি মাঠের মধ্যে দিয়ে পৌঁছতে হয়েছে ঘটনাস্থলে।
শহরের বেশ কিছু রাস্তা ফুটপাথের দখলে চলে যাওয়ায় সমস্যা আরও বেড়েছে। তবে বাজার এলাকাগুলিতেই সমস্যা সবচেয়ে বেশি। শহরের সবচেয়ে বড় চকবাজার। পাইকারি ও খুচরো বাজার দুটোই একসঙ্গে চলে এখানে। |
টিনের চাল আর প্লাস্টিকের ছাউনি ঘেরা সার সার দোকানে সারা দিন ভিড়। সরু গলির দু’পাশ দিয়ে দোকান থাকায় হাঁটাও দুষ্কর। তার উপরে রয়েছে আগুন জ্বালিয়ে রান্নাবান্নার কাজ। চকবাজার ছাড়াও ধাত্রীগ্রাম, সমুদ্রগড়, কালেখাঁতলা, কুসুমগ্রামেও রয়েছে ভিড়ে ঠাসা ঘিঞ্জি বাজার। আগুন লাগলে দমকলের গাড়ি পৌঁছনোর কোনও বন্দোবস্তও নেই। শুধু বাজার নয়, গ্রামের রাস্তাও অপরিসর। ঘরে আগুন লাগলে দমকলের গাড়ি ঢোকা সম্ভব নয় সেখানেও। দমকলকর্মীরা জানান, গলিতে ঢোকার জন্য ২ হাজার লিটার জল ধরার ক্ষমতাসম্পন্ন গাড়িও রয়েছে। কিন্তু তা রয়েছে দুর্গাপুরে। সরস্বতী পুজো, মহিষমদির্নী বা দুর্গাপুজোয় আগাম আবেদন জানিয়ে ওই গাড়ি আনানো হয়। উৎসব মিটলেই ফেরত চলে যায় গাড়ি। দমকলর্মীদের দাবি, সব সময়ের জন্য তাদেরও ওই রকম গাড়ির প্রয়োজন।
কালনা পুরসভার উপ-পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগের বক্তব্য, “শুধু দমকলের বড় গাড়ি নয়, শহরের অনেক রাস্তাতে এমনি গাড়ি ঢোকাও মুশকিল। পুরসভা তরফে তাই সেচ পুল ও শববাহী ছোট গাড়ি কেনা হয়েছে। দমকলেরও তেমন ছোট গাড়ি প্রয়োজন।”
গাড়ির প্রয়োজনের কথা স্বীকার করেছেন দমকলের কালনা শাখার ওসি অরিন্দম দেবনাথও। তিনি বলেন, “কালনা শাখায় একটি ছোট গাড়ির জন্য ঊধ্বর্র্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি, গাড়ি পেতে সমস্যা হবে না।” শহরে দমকলের আর একটি শাখা তৈরিরও চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। |