দুর্যোগ মোকাবিলা নয়, মোর্চার নজর আন্দোলনেই
টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পাহাড়ে জিটিএ-র শাসক দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ব্যস্ত তাদের নিজেদের আন্দোলন নিয়ে। রাজ্য সরকার তাতে রীতিমতো বিরক্ত। মহাকরণ থেকে বারবার আন্দোলন প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানানোও হয়েছে। তারপরেও আন্দোলন প্রত্যাহৃত হয়নি। শুক্রবার খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “টানা বৃষ্টি চলছে। ধসে একজন মারা গিয়েছেন। অনেক ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়েছি। এই সময়ে দুর্যোগ মোকাবিলার উপরেই জোর দিতে হবে। আন্দোলনের জন্য তো অন্য সময় রয়েছে। পাহাড়ের সাধারণ মানুষও তাই চাইছেন।”
কিন্তু মোর্চা নেতারা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে লিখিত ভাবে অনুরোধ না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন প্রত্যাহারে অনড়। গরুবাথানে তৃণমূল নেতা খুশনারায়ণ সুব্বার বাড়িতে গত ২৩ মে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অভিযুক্ত মোর্চা কাউন্সিলর চন্দ্র ইয়নজন গ্রেফতার হন। তাঁর মুক্তির দাবিতে পাহাড়ের তিন মহকুমায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে মোর্চা নেতারা অনশনে বসেছেন। তা শুক্রবার ৬ দিনে পড়ল। কিন্তু এর মধ্যে গত চার দিনই পাহাড় জুড়ে বৃষ্টি চলছে। পাঁচিল ধসে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। জখমও হয়েছেন এক জন। ধসে বন্ধ হয়ে রয়েছে পাঙ্খাবাড়ির রাস্তাও। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে পাহাড়ি এলাকায়। ঘরদোর ভেঙে, চা বাগানে গাছ উপড়ে অন্তত ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে আশঙ্কা করছে জেলা প্রশাসন।
কিন্তু অধিকাংশ কাউন্সিলর আন্দোলন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় নানা এলাকায় ধস পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য জিটিএ তথা প্রশাসনের তরফে সব রকম সাহায্য মিলছে না বলে বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ। কিন্তু রাজ্যের মৌখিক অনুরোধে মোর্চা শীর্ষ নেতাদের একাংশ সাড়া দিতে রাজি হলেও দলের সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ ও তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুগামী বিনয় তামাংরা লিখিত আশ্বাস না পেলে আন্দোলন প্রত্যাহারে রাজি নন।
মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেছেন, “রাজ্য সরকার আন্দোলন তুলে নিতে অনুরোধ করেছে। দলের তরফে তা লিখিত দিতে বলা হয়েছে। না হলে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে না বলে দলের সভাপতি জানিয়েছেন।” তবে অনশনকারীদের শারীরিক অবস্থার তেমন অবনতি হয়নি।
মোর্চার এই অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগের সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ খাতি বলেন, “পাহাড়ে হচ্ছেটা কী? বাম আমলের মতো একদলীয় শাসন কায়েমের চেষ্টা হচ্ছে। দুর্যোগের মধ্যে আন্দোলন হচ্ছে। আমাদের মনে হয়, রাজ্য সরকারের উচিত ফের সিআরপি-র মতো কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা। কারণ, পাহাড়ের আবহাওয়ার মতো রাজনৈতিক পরিস্থিতিও ঘনঘন পাল্টে যায়। গোলমাল চরমে ওঠার আশঙ্কা থাকে। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা জরুরি।”
মোর্চারও অন্দরের খবর, ভরা পর্যটন মরসুমে এই পরিস্থিতিতে দলের ভূমিকায় সাধারণ মানুষ বিরক্ত। সে কারণেই মোর্চার সভাপতি তথা জিটিএ চিফ গুরুঙ্গ বিষয়টি নিয়ে আজ, শনিবার দলীয় বৈঠকেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রোশন অবশ্য বলেন, “সব কাউন্সিলর আন্দোলনে ব্যস্ত নন। তাই দুর্যোগ মোকাবিলায় কোনও সমস্যা হবে না।” দার্জিলিঙের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনও জানিয়েছেন, “দুর্যোগ পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য সব প্রস্তুতি রয়েছে। জিটিএ-এর প্রধান সচিব নিজেই বিষয়টি দেখছেন।”
এ দিন পুলিশ প্রহরায় বিনা বাধায় গরুবাথানের বাড়িতে পৌঁছেছেন খুশনারায়ণ সুব্বা।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.