|
|
|
|
দাবি নিয়ে সরব হন, বাসিন্দাদের বললেন গৌতম
অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
সার্কিট বেঞ্চ হোক অথবা শহরে ঢোকার মুখে মোহিতনগর রেলগেটে উড়ালপুল তৈরি, সব দাবিতেই আরও বেশি করে জলপাইগুড়িবাসীকে সরব হওয়ার পরামর্শ দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। শুক্রবার জলপাইগুড়ির আর্ট গ্যালারিতে তিন ঘণ্টা ধরে চলা নাগরিক কনভেনশনের শুরুতেই অবশ্য মন্ত্রী বলে নেন, “মন্ত্রী হিসাবে আসিনি। রাজনীতির কথাও বলব না। সাধারণ মানুষ হয়ে জলপাইগুড়ির কথা শুনব।”
স্বাভাবিকভাবেই সার্কিট বেঞ্চ থেকে মোহিতনগরে উড়ালপুলের প্রসঙ্গ শুরুতে উঠে। সে প্রসঙ্গেই ভিড়ে ঠাসা আর্ট গ্যালারির দর্শক-শ্রোতাদের গৌতমবাবুর পরামর্শ, স্বাধীনতার পরে এতগুলি বছর চলে গেল জলপাইগুড়ির মানুষ অনেক ধৈর্য্যশীল। হাইকোর্টের অনুমোদন, রাজ্য সরকারের উদ্যোগের পরেও কেন জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চ তৈরিতে পদে পদে বাধা আসবে? কেন শহরে ঢোকার পথ বন্ধ করে থাকা রেলগেটে উড়ালপুল তৈরি হবে না, আর কেনই বা এতদিন র্স্পোটস কমপ্লেক্স অর্ধনির্মিত হয়ে পড়ে থাকবে? আপনাদের আরও বেশি সরব হতে হবে। রাজ্য সরকারের কাছে দাবি আমি পৌঁছে দেব। কিন্তু জলপাইগুড়িবাসীকে আওয়াজ তুলতে হবে। মনে রাখবেন শিশু না কাঁদলে তাকে খাবার দেওয়া হয় না। |
|
শুক্রবার জলপাইগুড়িতে নাগরিক কনভেনশনে গৌতম দেব।—নিজস্ব চিত্র। |
শহরের গুণীজন, শিক্ষাবিদ, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, ডান-বাম বিভিন্ন গণ সংগঠনের সদস্য, আইনজীবী, চিকিৎসক সকলেই ছিলেন। বিকেল সাড়ে চারটে থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত টানা দাঁড়িয়ে থেকে নাগরিকদের প্রশ্ন শুনে, লিখে, প্রতিটির উত্তর দেন গৌতমবাবু।
প্রায় দু’ঘণ্টা কনভেনশন চলার পরে যেমন গৌতমবাবু বলেই ফেললেন, “বিশ্বাস করুন, খুব একটা খারাপ ছাত্র ছিলাম না। কখনও এভাবে টানা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়নি। মন্ত্রীর কথা শুনে তখন আর্ট গ্যালারিতে তুমুল হাসি আর হাততালি।”
রাজনৈতিক সৌজন্যও বজায় রাখারা চেষ্টা করেন তিনি। যখন শহরের বিভিন্ন গলিতে নামকরণের বোর্ড লাগানোর প্রস্তাব অথবা জলবদ্ধতার সমস্যার কথা এসেছে। তখনই কংগ্রেসের দখলে থাকা পুরসভার প্রসঙ্গ তুলে গৌতমবাবু বলেছেন, “পুরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলব। ওঁরাও তো কাজ করছেন।” রাস্তা সংস্কার থেকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস সব প্রসঙ্গেই তাঁর কাছে প্রস্তাব গিয়েছে। জলপাইগুড়ি শহরে ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নতি, বিভিন্ন মহিলা কলেজের নিরাপত্তা, তিস্তা ও করলা নদীর পাড় সাজা, কর্মাস কলেজে কলাবিভাগের পাঠক্রম চালু, শহরে যোগাযোগে বিকল্প পথ, ক্রীড়া চর্চা নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন গৌতমবাবু। দীর্ঘ কনভেনশনের পরে ক্রীড়াবিদ সন্টু চট্টোপাধ্যায় হোক কিংবা শিক্ষাবিদ আনন্দগোপাল ঘোষ। সকলেই বললেন, “একজন মন্ত্রী শহরে এসে এতক্ষণ সব কথা শুনলেন, উত্তর দিলেন এমনটা আগে কখনও হয়নি। এ দিন শহরবাসী গৌতমবাবুকে নতুনভাবে চিনলেন। ওঁর প্রতিশ্রুতিতে ভরসা রাখছি।”
কনভেনশনের আগে শহরের ফণীন্দ্রদেব ইন্সটিটিউশনের নবম শ্রেণির ছাত্র জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন মন্ত্রী। জয়দীপের অপমৃত্যুর তদন্ত নিরপেক্ষভাবে যাতে করা হয় তার আশ্বাস দিয়েছেন গৌতমবাবু। |
|
|
|
|
|