তৈরি হবে ‘ধান প্রদর্শনী ক্ষেত্র’
হেক্টর পিছু ধানের ফলন বাড়াতে প্রতি ব্লকে প্রশিক্ষণ
কৃষিকাজে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বাড়তি ফলন এই দুই লক্ষ্যকে সামনে রেখে পশ্চিম মেদিনীপুরে এ বার ১৩০টি ‘ধান প্রদর্শনী ক্ষেত্র’ তৈরি করবে কৃষি দফতর। ইতিমধ্যে জমি চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রের জন্য কমপক্ষে ১০০ হেক্টর জমি লাগবে। প্রদর্শনী ক্ষেত্রের জন্য চিহ্নিত জমির কৃষকদের বিনামূল্যে ধানের বীজ ও সার দেবে কৃষি দফতর, শেখাবে উন্নতর প্রযুক্তির ব্যবহার। জেলা কৃষি আধিকারিক নিমাইচন্দ্র রায় বলেন, “ফলন বাড়ানোই এর মূল উদ্দেশ্য। এর ফলে কৃষকেরা উন্নত প্রযুক্তি রপ্ত করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে দফতর থেকে সব রকম ভাবে সাহায্য করা হয়।”
এই উদ্যোগ অবশ্য এ বারই প্রথম নয়। কৃষি দফতরের উদ্যোগে বেশ কয়েক বছর ধরেই ‘ধান প্রদর্শনী ক্ষেত্র’ তৈরি করা হচ্ছে। এর জন্য দু’টি তহবিল থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ হয় বিজিআরইআই এবং এনএফএসএম। এ বার জেলায় যে ১৩০টি প্রদর্শনী ক্ষেত্র তৈরি করা হবে তার মধ্যে ১১০টির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ আসবে প্রথম তহবিল থেকে। বাকি ২০টির জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হবে দ্বিতীয় তহবিল থেকে। ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পৌঁছেছে।
১০০ হেক্টর জমিতে গড়ে ৩৫০ জন কৃষক চাষ করেন। কৃষি দফতর সূত্রে খবর, গত বছর এমন ক্ষেত্র তৈরির মাধ্যমে ৪৩,১০০ জন কৃষক উপকৃত হয়েছিলেন। এ বারও কমপক্ষে ৪২ হাজার কৃষক উপকৃত হবেন। নানা কারণে এখন জমিতে ফলন কমছে। কখনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য চাষ মাঝপথে নষ্ট হচ্ছে। কখনও জলের অভাবে চাষ করা যাচ্ছে না। এ বার জেলায় কিছুটা কম জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছিল। গত মরসুমে যেখানে চাষ হয়েছিল ৫ লক্ষ ৫২৫ হেক্টর জমিতে, এ বার সেখানে চাষ হয়েছে ৪ লক্ষ ৩০ হাজার ৪৯৫ হেক্টর জমিতে। সব জায়গায় ফলনও এক হয় না। কোথাও হেক্টর পিছু ৪০ কুইন্টাল ধান হয়। কোথাও ৪২ কুইন্টাল। তবে আমনের ধাক্কা কিছুটা সামাল দেওয়া গিয়েছে বোরোতে। গত মরসুমে যেখানে জেলায় বোরো চাষ হয়েছিল ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে। এ বার সেখানে চাষ হয়েছে ১ লক্ষ ৪৯ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে।
জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, “হেক্টর পিছু ধানের ফলন বাড়ানো খুবই জরুরি। না হলে আগামী দিনে সমস্যা হবে। আর ফলন বাড়াতে গেলে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া দরকার। ধান প্রদর্শনী ক্ষেত্রে একসঙ্গে ১০০ হেক্টর জমি জুড়ে চাষ হলে কৃষকেরাও ভালমন্দ বুঝতে পারেন। তাঁরা দেখতে পারেন, অন্য জমিতে কেমন ফলন হয়েছে, আর প্রদর্শনী ক্ষেত্রের জমিতে কেমন ফলন হয়েছে। এর ফলে উৎসাহিত হয়ে অনেকেই উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে চাষ করতে পারেন। যে বীজে এতদিন চাষ করে এসেছেন, তা ছেড়ে নতুন বীজে চাষ শুরু করতে পারেন। যাতে ফলন বেশি হয়।” অন্য এক আধিকারিকের বক্তব্য, “যেখানে সেচের জল মিলেছে, সেখানেই ভাল চাষ হয়েছে। হেক্টর পিছু ধানের উৎপাদনও ভাল হয়। তবে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে সর্বত্র স্বাভাবিক চাষ করা সম্ভব হয় না। মাটির নীচের জলস্তর নেমে গেলে তার প্রভাবও সেচের উপর পড়তে বাধ্য।” কৃষি দফতর সূত্রে খবর, হেক্টর পিছু ফলন বাড়াতে নানা পদক্ষেপই করা হচ্ছে। তারই অন্যতম কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া।

এই সংক্রান্ত অন্য খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.