পথ বদলে মেদিনীপুর উপকূলে নিম্নচাপ, চলবে বৃষ্টি
শেষ মুহূর্তে মতি বদল! আসলে গতি বদল।
মতিগতি দেখে বুধবার বেশি রাত পর্যন্ত মনে হচ্ছিল, বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ বাংলাদেশ উপকূল দিয়ে ওই দেশের স্থলভূমিতে ঢুকে পড়তে চায়। কিন্তু শেষ বেলায় রাস্তা বদলে বৃহস্পতিবার ভোরে সে ঢুকে পড়ল পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলে। ও-পার বাংলার বদলে এ-পার বাংলায় শুরু হল তার দাপট। জোরালো হাওয়া আর ঘনঘন বৃষ্টিতে ব্যাহত হল পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকার জীবনযাত্রা। নিম্নচাপ এ বার ধীরে ধীরে ঢুকে পড়বে স্থলভূমির ভিতরে। ক্রমশ কমতে থাকবে তার শক্তি। তবে নিঃশেষে মিলিয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত আবহাওয়ায় তার প্রভাব রেখে যাবে ওই নিম্নচাপ। এর ফলে আগামী কয়েক দিন দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছেন আবহবিদেরা।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, “শুক্রবার সব জেলাতেই ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের কোনও কোনও জেলায় (উপকূলবর্তী এলাকায়) অতি ভারী বৃষ্টিও হতে পারে।” আবহবিদদের পূর্বাভাস, আজ, শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। সেই সঙ্গে বৃষ্টি, মাঝেমধ্যে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। উত্তাল থাকবে সমুদ্র। তাই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
বুধবার পর্যন্ত ওই নিম্নচাপটির অভিমুখ যে-দিকে ছিল, তাতে আবহবিদদের মনে হয়েছিল, সেটি বাংলাদেশ উপকূল দিয়ে ঢুকে সরে যাবে মায়ানমারের দিকে। কিন্তু বুধবার রাতেই বায়ুপ্রবাহের গতিপথ বদলে যায়। নিম্নচাপটি বাংলাদেশ উপকূলের দিকে যেতে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়। তার অভিমুখ ঘুরে যায় পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলের দিকে। বৃহস্পতিবার ভোরে সে ঢুকে পড়ে পূর্ব মেদিনীপুরের স্থলভূমিতে। তার পরেই দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ায় পরিবর্তন হয়। ঝোড়ো হাওয়া বইতে থাকে। বাড়ে বৃষ্টির তীব্রতাও। তবে নিম্নচাপের অভিমুখ বদলে যাওয়ায় আপাতত মায়ানমারে থাকা মৌসুমি বায়ুর উপরে তার কোনও প্রভাব পড়বে না বলে জানান আবহবিদেরা। এক আবহবিদের কথায়, “এমন নিম্নচাপ এক সপ্তাহ পরে তৈরি হলে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বর্ষার শুরুটা খুবই ভাল হত।”
আকাশ মেঘলা থাকায় বৃহস্পতিবার দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই নীচে নেমে যায়। এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের চেয়ে সাত ডিগ্রি কম। দফায় দফায় বৃষ্টি হওয়ায় আর্দ্রতাও ছিল কম। ফলে মাঝ-জ্যৈষ্ঠেও পরিবেশ ছিল ভরা শ্রাবণের মতো।
আবহাওয়া দফতরের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ ছিল, নিম্নচাপটি আরও কয়েক দিন বাংলাদেশের উপকূলে স্থায়ী হলে মৌসুমি বায়ু নির্দিষ্ট তারিখের আগেই উত্তর-পূর্ব ভারতে ঢুকে পড়তে পারে। এমনকী শনিবারের মধ্যেই উত্তরবঙ্গে বর্ষার আগমনের আশা দেখছিল তারা। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিম্নচাপটির গতিপ্রকৃতি দেখে আবহবিদদের মনে হয়েছে, সেটি উত্তর দিকে কিছুটা এগিয়ে তার পরে একেবারেই দুর্বল হয়ে যাবে। উত্তরবঙ্গ অবশ্য পুরোপুরি বঞ্চিত হবে না। নিম্নচাপের শক্তি ক্ষয় হতে থাকলেও তার প্রভাবেই শুক্রবার থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানাচ্ছে হাওয়া অফিস।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.