খাতা-কলমের হিসেবেই বর্ষা আসতে আরও অন্তত ১২ দিন বাকি। এর মধ্যেই প্রাক্-বর্ষার বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল দক্ষিণবঙ্গে। সৌজন্যে বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, আগামী তিন দিন মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি পাবে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা।
এ বছর গ্রীষ্ম তেমন প্রখর হয়নি পশ্চিমবঙ্গে। তার রুদ্ররোষ দেখা গিয়েছে খুব কমই। জ্যৈষ্ঠ মাসের ১৪ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এক বারের জন্যও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের সীমা ছাড়ায়নি। তাপপ্রবাহ যা কিছু হয়েছে, তা চৈত্রমাসে অর্থাৎ বসন্তে। সেটা যেমন ঠিক স্বাভাবিক ছিল না, সচরাচর দেখা যায় না গ্রীষ্মের এমন প্রসন্নতাও। বৈশাখও এ বার কখনওই তেমন রুদ্রমূর্তি ধরেনি গ্রীষ্মের আর যে-ক’দিন বাকি, তাতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়াবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে আবহবিদদেরই।
আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, আন্দামানে জোরদার বর্ষা এসে গিয়েছে। মৌসুমি বায়ু পৌঁছে গিয়েছে মায়ানমারেও। আবহবিদদের আশা, মায়নামার দিয়ে বর্ষা ১ জুনের মধ্যে ঢুকে পড়বে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। ওই একই সময়ে কেরল দিয়েও বর্ষার ঢুকে পড়ার কথা। অর্থাৎ বায়ুপ্রবাহের গতিপ্রকৃতি যা, তাতে বর্ষা নিয়ম মেনেই এগোচ্ছে। আগামী কয়েক দিন এই নিয়ম মানলে ৮ জুন নাগাদ তার গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়ার কথা।
প্রাক্-বর্ষার পরিস্থিতি তৈরির কৃতিত্ব অনেকটাই নিম্নচাপের। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, সপ্তাহখানেক ধরে বিহার থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা বিস্তৃত রয়েছে। তার প্রভাবে বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প ঢুকছিল দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে এবং তা ঘনীভূত হয়ে মেঘ তৈরি করছিল। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে উত্তর বঙ্গোপসাগরের একটি নিম্নচাপ। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ মঙ্গলবার বলেন, “নিম্নচাপের প্রভাবে আগামী ৪৮ ঘণ্টা দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বৃষ্টি হবে। উপকূল সংলগ্ন জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে বৃষ্টি হতে পারে উত্তরবঙ্গেও।” |