|
|
|
|
জেলা নেতাদের কলকাতায় তলব |
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে লাগাম দিতে সক্রিয় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
আসন্ন নির্বাচনে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রাশ টানতে উদ্যোগী হল তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। নেতৃত্বের স্পষ্ট বার্তা, দ্বন্দ্ব ভুলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের ঐক্যবদ্ধ চেহারা তুলে ধরতে হবে। প্রার্থী নিয়ে মতবিরোধ কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। জেলা পরিষদের আসনে কে প্রার্থী হবে, তা ঠিক করবেন রাজ্য নেতৃত্বই। জেলা থেকে প্রস্তাব যাবে রাজ্যে। সেই প্রস্তাবে চূড়ান্ত সিলমোহর দেবে রাজ্য। রাজ্য যাঁকে অনুমোদন করবে, তিনিই জেলা পরিষদের আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। দলীয় সূত্রে খবর, বুধবার রাতে কলকাতার নিজাম প্যালেসে তৃণমূল কংগ্রেসের সদর কার্যালয়ে দলের জেলা নেতাদের নিয়ে এক জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকে ছিলেন তিন সাংসদ মুকুল রায়, সুব্রত বক্সী এবং শুভেন্দু অধিকারী। ছিলেন জেলার তৃণমূল বিধায়কেরা এবং প্রথম সারির নেতারা। ওই বৈঠকেই এই বার্তা দেন রাজ্য নেতৃত্ব।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে মোট ৪৭০১টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৬০ শতাংশ আসনে কে দল মনোনীত প্রার্থী হবে, তা নিয়ে দলের অন্দরে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে বলে জেলা তৃণমূলেরই এক সূত্রে খবর। সেই দ্বন্দ্ব মেটাতেই ওই বৈঠক বলে খবর। তৃণমূলের এক জেলা নেতা বলেন, “বুধবার রাতের বৈঠকে রাজ্য নেতৃত্ব বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছেন। জেলায় সেই মতোই পদক্ষেপ করা হবে।”
রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে মেদিনীপুরে এক বৈঠক হয়। আগে জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য দলীয় স্তরে টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছিলেন। সেই টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা বৈঠকে ছিলেন। ঠিক ছিল, জেলা পরিষদের আসনে কে কে প্রার্থী হবেন, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে। তা হয়ও। তবে এ ক্ষেত্রেও বেশ কিছু আসন নিয়ে তীব্র মতবিরোধ হয়। কিছু আসনের জন্য ৩-৪টি নামও উঠে আসে। যা নিয়ে সহমতে পৌঁছনো যায়নি। দলীয় সূত্রে খবর, যে আসনগুলো নিয়ে সহমতে পৌঁছনো গিয়েছে, তা যেমন জানানো হচ্ছে তেমনি যেখানে সহমত হয়নি সেটাও জানানো হচ্ছে। এরপর রাজ্য নেতৃত্বই এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
অন্য দিকে, বুধবার রাতের বৈঠকের প্রেক্ষিতে গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির আসনগুলোয় কারা প্রার্থী হচ্ছেন, তা-ও জানানো হচ্ছে রাজ্য নেতৃত্বকে। পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। প্রায় প্রতিটি ব্লকেই নেতৃত্বের মধ্যে কমবেশি মতবিরোধ রয়েছে। একদিকে রয়েছেন মুকুল রায়ের অনুগামীরা। উল্টো দিকে, শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা। নারায়ণগড়, কেশপুর, গড়বেতা মতো ব্লকে আবার এই দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে।
ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতের সব থেকে নীচের স্তর গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে কে দলের মনোনীত প্রার্থী হবে, তা নিয়েও চলছে দড়ি টানাটানি। এই অবস্থায় বহু আসনে দল মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলেরই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর মনোনীতরা প্রার্থী হতে পারেন বলে তৃণমূলের অন্দরেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। দলের জেলা নেতৃত্ব অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, কিছু ক্ষেত্রে মতবিরোধ রয়েছে। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে দল ঐক্যবদ্ধ ভাবেই লড়াই করবে। |
পুরনো খবর: বিরোধী প্রার্থীদের বাধা, নির্বিঘ্ন হল না প্রথম দিন |
|
|
|
|
|