|
|
|
|
মাওবাদী প্রশ্নে পাল্টা আক্রমণের পথে বিজেপি, নিশানায় সনিয়া
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী হামলায় কংগ্রেসের অভিযোগের জবাব দিতে এ বারে আসরে নামল বিজেপি। আর তাদের মূল নিশানা কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী।
ছত্তীসগঢ়ের ঘটনার পর থেকেই কংগ্রেস হাইকম্যান্ড বিজেপির সঙ্গে মাওবাদী আঁতাতের অভিযোগ তুলে আসছে। দলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা নিহত হওয়ার পর দলের নেতা-কর্মীদের আক্রোশ ও আবেগকে উস্কে দিয়ে কংগ্রেস আসন্ন বিধানসভা ভোটে রমন সিংহকে হারাতে মরিয়া। ইতিমধ্যেই রমন সিংহের ইস্তফার দাবিতে সুর চড়িয়েছে কংগ্রেস। আজ মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা সর্বদল বৈঠকও তারা বয়কট করে। কংগ্রেস নেতৃত্ব চাইছেন, এই ঘটনাকে সামনে রেখে রমন-বিরোধী হাওয়াকে কাজে লাগিয়ে ভোটের বৈতরণী পার হতে।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখেও প্রাথমিক ভাবে বিজেপি পাল্টা অভিযোগের পথে হাঁটেনি। কিন্তু গত কাল মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ সুকমার ঘটনায় নিহত কংগ্রেস নেতাদের পরিবার ও আহতদের সঙ্গে দেখা করার পর আজ থেকে পাল্টা আক্রমণের পথে নামল তারা। দলের তরফে ছত্তীসগঢ়ের দায়িত্বে থাকা নেতা জগৎ প্রকাশ নাড্ডা দিল্লিতে দলের সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে অভিযোগ করেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় পি চিদম্বরম মাওবাদী অধ্যুষিত রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় করে এই সমস্যা কড়া হাতে দমন করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু সনিয়া গাঁধী রাশ টেনে ধরাতেই তাঁকে পিছিয়ে আসতে হয়।
একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, মাওবাদীদের প্রতি সহানুভূতিশীল, এমন লোকেদেরও সনিয়া জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদে সামিল করেছেন।
বিজেপির অভিযোগ, এ বারের হামলার পরেও মাওবাদীরা তেলুগু ভাষায় চিঠি লিখেছে। কংগ্রেস শাসিত অন্ধ্রপ্রদেশ থেকেই মাওবাদীরা ছত্তীসগঢ়ে এসেছিল। ফলে কেন্দ্র যদি মাওবাদী দমনে নিরন্তর সাহায্য না করে, কোনও রাজ্য সরকারের পক্ষেই এই সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। সালওয়া জুড়ুমের কাণ্ডারী কংগ্রেস নেতা মহেন্দ্র কর্মার বাড়িতে গিয়ে গত কাল বিজেপি নেতারা সমবেদনা জানান। আজ দলের তরফে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা থাকা সত্ত্বেও দল নীতিগত ভাবে সালওয়া জুড়ুমকে সমর্থন করে। মহেন্দ্র কর্মার নামে দন্তেওয়াড়ায় একটি কলেজ খোলারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রমন সিংহ সরকার। একই সঙ্গে তাদের দাবি, রমন সিংহের উদ্যোগেই ছত্তীসগঢ়ের বড় অংশই মাওবাদী প্রভাবমুক্ত হয়েছে।
ছত্তীসগঢ় সরকার এখন যতই মাওবাদীদের দমনে কঠোর হওয়ার কথা বলুক, কংগ্রেস নেতৃত্ব জানেন, ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী সে পথে বিশেষ হাঁটতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে আদিবাসী এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। কংগ্রেস নেতৃত্ব তার সুযোগও নিতে চান।
এক সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যে নতুন প্রদেশ সভাপতি নিয়োগ করে নতুন করে বড় আকারে পরিবর্তন যাত্রা শুরু করে দিতে চাইছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে বিজেপিও পাল্টা অভিযোগ আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রমন সিংহ সরকার যে বিচারবিভাগীয় কমিটি গঠন করেছে, তা খতিয়ে দেখবে মাওবাদীদের এই হামলার পিছনে কংগ্রেসের কোনও অন্তর্দ্বন্দ্ব রয়েছে কি না। নাড্ডা আজ সেই ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, “কোন কংগ্রেস নেতা মাওবাদীদের হাতে আক্রান্ত হলেন, কে বেঁচে গেলেন, কেন বেঁচে গেলেন, আহত না হয়েও কে হাসপাতালে ভর্তি হলেন, কেন নিরাপত্তারক্ষী থাকা সত্ত্বেও তাঁদের সকলকে সঙ্গে নেওয়া হয়নি, কমিটি সবই খতিয়ে দেখবে।”
|
পুরনো খবর: পার্টি কংগ্রেস থেকে নজর ঘোরাতেই হামলা সুকমায় |
|
|
|
|
|