উত্তর ২৪ পরগনার বিশরপাড়ায় দুষ্কৃতীদের হাতে নিহত কলকাতা পুলিশের কর্মী অসীম দামের পরিবারের লোকজন যাতে আদালতে না যান, সে জন্য দুষ্কৃতীরা অসীমবাবুর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভয় দেখিয়েছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অসীমবাবুর পরিবারের আরও অভিযোগ, আদালতে সাক্ষ্য দিতে গেলে তাদের পরিবারের সবাইকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গুলি করে খুন করা হবে বলে হুমকিও দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। যদিও অসীমবাবুর ভাগ্নি মামন ধর বলেন, “দুষ্কৃতী-হুমকিতে আমি ভয় পাইনি। ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্তের যেন কোনওভাবেই জামিন না হয়, সে জন্যই আমি আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসেছি।” পুলিশ জানায়, সোমবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ চার-পাঁচ জন দুষ্কৃতী অসীমবাবুদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে গুলি এবং বোমা ছোড়ে। |
মামন বলেন, “আমি ওষুধ কিনতে যাচ্ছিলাম। বাড়ির সামনে এসে দেখি, মুখে রুমাল বাধা চার-পাঁচ জন দাঁড়িয়ে। অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে ওরা বোমা ছুড়ল। আমি দরজা বন্ধ করে দিই।” মামনের পরিবার জানিয়েছে, তাঁরা গুলির আওয়াজ শুনেছেন। মিনিট দশেক তাণ্ডব চালিয়ে চলে যায় দুষ্কৃতীরা। খবর পেয়ে স্থানীয় ফাঁড়ি থেকে পুলিশ আসে। এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি বোমার খোল ও গুলির খোল উদ্ধার করেছে। মামনের বাড়ির সামনে বসানো হয়েছে পুলিশি প্রহরা। মামন জানান, ঘটনার আকস্মিকতায় তাঁরা এতই ভয় পেয়ে যান যে বহুক্ষণ দরজা খোলেননি। পুলিশ এসে ডাকাডাকি করার পরে তাঁরা দরজা খোলেন। ওই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও মামনের বাড়ির লোকেদের চোখেমুখে আতঙ্ক। মামনের মা সোমা ধর বলেন, “মেয়ে জেদ করে আদালতে গেল ঠিকই কিন্তু আমাদের খুব ভয় করছে। ফের হামলা হলে কী করব? আগে দু’বার হামলা হয়েছিল মাঝরাতে। ওই দিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ওরা বোমা-গুলি ছুড়ে চলে গেল।” অসীমবাবুর পরিবার জানিয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে তাদের বাড়ির সামনে রাত ১১টা থেকে পুলিশি প্রহরা থাকে। অসীমবাবুর পরিবারের অনুমান, দুষ্কৃতীরা তা বলেই রাত সাড়ে আটটা নাগাদ হামলা চালায়। বিধাননগর কমিশনারেটের এসিপি অনীশ সরকার বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। হামলাকারীদের মধ্যে কারও নাম ওই পরিবারের কেউ বলতে পারলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব।”গত বছরের ৮ মার্চ, দোলের দিন অসীমবাবুদের বাড়িতে ঢুকে মহিলাদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে এলাকার কিছু মদ্যপ যুবক। প্রতিবাদ করায় খুন হন অসীমবাবু। আট অভিযুক্তের মধ্যে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
|