পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে নিজের জন্মভূমি শাসনে যাবেন বলে জানিয়ে দিলেন উত্তর ২৪ পরগনা ভেড়ি এলাকার বিতর্কিত সিপিএম নেতা মজিদ আলি ওরফে মজিদ মাস্টার। মঙ্গলবার, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বামফ্রন্টের প্রার্থিতালিকা প্রকাশের দিন সে কথা জানিয়ে মজিদ বলেন, “শাসন আমার খাসতালুক নয়, জন্মভূমি। যেখানে যাওয়ার যাব। কোথাও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে মনে করলে গোপনেই কাজ করব।” ডিএমের দফতরে সর্বদল বৈঠকে এ দিন মজিদের জন্য নিরাপত্তার দাবি জানায় বামেরা। তবে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট বক্তব্য মেলেনি প্রশাসনের।
বেশ কিছু দিন ধরে শাসন-ছাড়া মজিদ। গত বিধানসভা ভোটের আগে আলিমুদ্দিনে গিয়ে বেশ কয়েক জন প্রথম সারির রাজ্য নেতার সঙ্গে দেখা করেছিলেন শাসনের এক সময়ের দোর্দন্ডপ্রতাপ এই নেতা। যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সিপিএম দুষ্কৃতীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূল। কিছু দিনের মধ্যেই খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত মজিদ গ্রেফতার হন। দলের ভাবমূর্তি পরিচ্ছন্ন রাখতে মজিদকে গ্রেফতারের নির্দেশ আসে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকেই। কিন্তু এ দিনের ঘটনাক্রম বুঝিয়ে দিল, শাসনের ভেড়ি এলাকায় রাজনীতিতে বামফ্রন্ট এখনও মজিদ মাস্টারের উপরেই নির্ভর করছে। সিপিএম নেতা অমিতাভ নন্দী এ দিন বলেন, “উনি (মজিদ) আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। নিজের এলাকায় ফিরে উনি যাতে ভোটের প্রচার করতে পারেন, সেই দাবি জানানো হয়েছে প্রশাসনের কাছে।” বাম শরিক দলগুলিও মজিদকে সামনে রেখে শাসনে ভোটে লড়ার প্রয়োজনীয়তার কথা বলছে।
এর আগে জেলা তৃণমূল পর্যবেক্ষক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক মজিদকে হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, শাসনে গেলে জনরোষের শিকার হতে পারেন মজিদ মাস্টার। মজিদ বলেন, “আমার ধারণা উনি (জ্যোতিপ্রিয়) আমাকে স্নেহ করেন। আমার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাই এ কথা বলে থাকবেন।” যা শুনে জ্যোতিপ্রিয়বাবুর পাল্টা মন্তব্য, “গত ৩৪ বছরে শাসনে ৯২ জন খুন হয়েছেন। সে সবের পিছনে ওঁর মদত ছিল। শাসনে ঢুকলে আমরা ওঁর উপরে আক্রমণ করব না।
তবে এলাকার মানুষই প্রতিবাদ জানাবেন। ওঁকে খুনের আশঙ্কাও আছে। সে জন্যই ওই এলাকায় যেতে বারণ করেছি।” বামফ্রন্টের প্রার্থিতালিকায় নাম নেই মজিদের। মঙ্গলবার বারাসতে সিপিএমের জেলা পার্টি অফিসে বামফ্রন্টের সাংবাদিক বৈঠকেও হাজির ছিলেন না তিনি। তবে ওই অফিসে বসেই পরে মজিদ দাবি করেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনে ভোট হলে শাসন-সহ বারাসত ২ ব্লকে ৭০ শতাংশের বেশি ভোট পাবে বামেরা।
|