|
|
|
|
প্রশ্নের মুখে এআইসিটিই-র এক্তিয়ার |
কোর্টের রায়ে ‘প্রযুক্তি’ কলেজের অনুমোদন স্থগিত
দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত • কলকাতা |
প্রযুক্তি শিক্ষা কেন্দ্রের ছাড়পত্র দেওয়ার দায় কার, এই প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে রাজ্যে থমকে গিয়েছে নতুন অনুমোদন। তৈরি হয়েছে প্রতি বছর অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশনের (এআইসিটিই) মান যাচাইয়ের অধিকার নিয়ে বিভ্রান্তিও। এআইসিটিই কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টেই আবেদন করেছেন তাঁরা।
সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী
(ক) বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ খোলার ক্ষেত্রে এআইসিটিই-র আলাদা অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। এ ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা শুধুই পরামশর্দাতার।
(খ) বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় থাকা এমসিএ এবং এমবিএ পাঠ্যক্রম পড়ানোর জন্যও এআইসিটিই-র আলাদা অনুমোদনের দরকার নেই।
এত দিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যানেজমেন্টের মতো বিভিন্ন ‘প্রযুক্তি’ পাঠ্যক্রমের স্বীকৃত স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দিতে বাধ্যতামূলক ছিল এআইসিটিই-র অনুমোদন। কিন্তু এই রায়ের পর সেই ছাড়পত্র ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যানেজমেন্ট কলেজ খোলা এবং প্রযুক্তি শিক্ষার বিভিন্ন পাঠ্যক্রম চালুর জন্য রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের কাছে একাধিক আবেদন জমা পড়েছে। কিন্তু এআইসিটিই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানোয় আপাতত প্রস্তাব স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় ও এআইসিটিই-র দ্বৈত নিয়ন্ত্রণের সমস্যা নিয়ে শিক্ষামহলে বিতর্ক অবশ্য দীর্ঘ দিনের। বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যানেজমেন্ট কলেজগুলির একাংশের দাবি, এআইসিটিই-র ছাড়পত্রের মাপকাঠি অনেক ক্ষেত্রেই অবাস্তব। যে কারণে এর বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে তারা। অন্য দিকে, শিক্ষাবিদদের একাংশ আবার এআইসিটিই-র নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি তুলে দেওয়ার বিরোধী। কলেজের পরিকাঠামো নিয়ে এআইসিটিই-র কড়াকড়ি মাঝে-মধ্যে যে সমস্যা তৈরি করে, তা মানছেন রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সব্যসাচী সেনগুপ্ত। সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং এআইসিটিই উভয়ের সীমারেখাই নতুন করে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। কিন্তু তা বলে এআইসিটিই-র নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি তুলে দেওয়ায় সায় নেই তাঁর। সব্যসাচীবাবুর মতে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হয়তো তেমন শঙ্কার জায়গা নেই। কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের ক্ষেত্রে ততটা নিশ্চিন্ত হওয়া যায় না।
এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইঞ্জিনিয়ারিং বা ম্যানেজমেন্ট কলেজ খুলতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতির পাশাপাশি রাজ্য ও এআইসিটিই-র অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু মূলত এমবিএ এবং এমসিএ পাঠ্যক্রমের ক্ষেত্রে এআইসিটিই-র কাছ থেকে অনুমোদনের এই বাধ্যবাধকতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই মামলা করেছিল তামিলনাড়ুর অ্যাসোসিয়েশন অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড প্রাইভেট কলেজ (এখন যার প্রভাব পড়ছে ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠ্যক্রমের উপরেও)। তার রায়েই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় থাকা প্রযুক্তি শিক্ষা কলেজের ক্ষেত্রে ইউজিসি-কে শুধুমাত্র পরামর্শ দিতে পারবে এআইসিটিই।
মামলার বিচার করতে গিয়ে এমবিএ পাঠ্যক্রমকে প্রযুক্তি শিক্ষা বলে মানতেই চায়নি সর্বোচ্চ আদালত। সে ক্ষেত্রে এআইসিটিই-র নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা নিয়ে আপত্তি তুলেছে তারা। এমসিএ-কে প্রযুক্তি শিক্ষা বলে মানলেও, তা দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছে ইউজিসি-কে। এআইসিটিই-র চেয়ারম্যান এস এস মন্থা অবশ্য দিল্লি থেকে ফোনে জানান, এই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছেন তাঁরা।
এই আইনি জটিলতায় তৈরি হওয়া দোলাচল পর্যালোচনার জন্য আজ (২৪ মে) বৈঠকের ডাক দিয়েছে এ রাজ্যের অ্যাসোসিয়েশন অফ প্রফেশনাল অ্যাকাডেমিক ইনস্টিটিউশন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ধূর্জটি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সেখানে সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে।
|
পুরনো খবর • এক্তিয়ার ছাড়াচ্ছেন কারিগরি
শিক্ষা অধিকর্তা, বিঁধল কোর্ট • পরিদর্শন এক্তিয়ারে পড়ে না, উচ্চশিক্ষা দফতরকে ভর্ৎসনা |
|
|
|
|
|