|
|
|
|
দাপট চলবে আর্দ্রতার |
ঘূর্ণাবর্তের সৌজন্যে
জ্যৈষ্ঠেই ঘোর শ্রাবণমেঘ
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
 |
|
কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমের পরে ফের একটু স্বস্তি। সৌজন্য ঘূর্ণাবর্ত। অবদান আছে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখারও।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আকাশ জুড়ে মেঘের ঘনঘটা। বাতাসে সোঁদা গন্ধ। ভরা জ্যৈষ্ঠে হঠাৎ যেন শ্রাবণের ছোঁয়া। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, নিম্নচাপ অক্ষরেখা ও ঘূর্ণাবর্তের জোড়া ফলাতেই তৈরি হয়েছে বৃষ্টির পরিবেশ। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় নামে বৃষ্টিও। আগামী ৪৮ ঘণ্টা রাজ্যে আবহাওয়ার পরিস্থিতি এমনই থাকবে বলে আবহবিদেরা মনে করছেন।
আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর সঙ্গেই একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে ঝাড়খণ্ড এবং সংলগ্ন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে। তার প্রভাবেই সাগর থেকে জলীয় বাষ্প ঢুকেছে দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে। এবং তা সম্পৃক্ত হয়ে মেঘে পরিণত হয়েছে।
এ দিনের উপগ্রহ-চিত্রে আবহবিদেরা দেখেছেন, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে আকাশের একটা বড় অংশ ঘন মেঘে ঢাকা। এমন পরিস্থিতি আগামী দু’তিন দিন চলবে বলেই মনে করছেন আবহবিজ্ঞানীরা।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, “নিম্নচাপ অক্ষরেখাটি বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকে আছে। আগামী দু’দিন বাংলাদেশ সংলগ্ন দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হবে। আকাশও মেঘলা থাকবে।”
হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, কলকাতা ছাড়াও উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বৃষ্টি হবে উত্তরবঙ্গের তরাই-ডুয়ার্সেও।
আবহবিদেরা বলছেন, চলতি মরসুমে রাজ্যে, বিশেষত কলকাতায় সে-ভাবে গরম পড়েনি। দু’চার দিনের বেশি গ্রীষ্মের রুদ্রমূর্তি দেখা যায়নি। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে তাপপ্রবাহ হয়েছিল ঠিকই। বাঁকুড়ার তাপমাত্রা উঠে গিয়েছিল ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ৪০ ডিগ্রির কাছে উঠে গিয়েছিল মহানগরের তাপমাত্রাও। তার পর থেকে দু’-এক বার পশ্চিমের জেলায় তাপপ্রবাহ হলেও সেই পরিস্থিতি তেমন স্থায়ী হয়নি। আর মহানগরে সে-ভাবে থাবা বসায়নি গরম। মাঝেমধ্যে অবশ্য আর্দ্রতার দাপটে কাহিল হয়ে পড়েছিলেন নগরবাসী। বৃহস্পতিবার কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৮ ডিগ্রি, স্বাভাবিকের তুলনায় এক ডিগ্রি কম। সর্বাধিক আর্দ্রতা ৯২ শতাংশ।
আবহবিদেরা জানান, নিম্নচাপ অক্ষরেখা বিস্তৃত থাকায় জলীয় বাষ্প দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে ঢুকেছে। বেড়েছে আর্দ্রতাও। এখনকার নিম্নচাপ অক্ষরেখাটির জন্যই কয়েক দিন ধরে মাঝেমধ্যেই আকাশ মেঘলা হয়ে যাচ্ছিল। ছিল প্যাচপেচে গরম। রোদের তেজ তেমন না-থাকলেও বেজায় ঘাম হতে থাকায় কাহিল হয়ে পড়ছিলেন সাধারণ মানুষ। নিম্নচাপ অক্ষরেখাটি শক্তিশালী হয়ে ওঠায় শুরু হয়েছে মেঘের আনাগোনা।
তবে মেঘের দৌলতে রোদের রক্তচক্ষু কিছুটা এড়ানো গেলেও ভ্যাপসা গরম থেকে এখনই স্থায়ী ভাবে রেহাই মিলছে না। আবহবিজ্ঞানীরা বলছেন, আকাশ মেঘলা থাকায় রাতের তাপমাত্রা কমবে না। দাপট চলবে আর্দ্রতারও। সব মিলিয়ে রাতে অস্বস্তি বাড়বে।
নির্দিষ্ট সময়সূচি মেনে বর্ষা ইতিমধ্যেই ঢুকে পড়েছে আন্দামান সাগরে। কিন্তু পূর্ব ভারতে তার আসতে এখনও দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় লাগবে বলে জানাচ্ছেন আবহবিদেরা। দিল্লির মৌসম ভবন বলছে, জুনের ৩ তারিখ নাগাদ কেরলে বর্ষা ঢুকতে পারে। বাংলায় সে আসবে তারও পরে। স্বাভাবিক নিয়মে চললে সাধারণ ভাবে বর্ষা এ রাজ্যে পৌঁছয় জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে। এখনও সেই পরিস্থিতি আসেনি বলে আবহবিজ্ঞানীরা জানান। |
|
|
 |
|
|