|
|
|
|
কোন্দলে কাটল আক্রমণের সুর |
মোদী এগোলে কী হবে, পিছু টানছেন সুষমারা
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
বর্ষপূর্তিতে মনমোহন সিংহ সরকার ও সনিয়া গাঁধীকে আক্রমণ শানানোই ছিল লক্ষ্য। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে পরোক্ষ মতবিরোধের জেরে বেরিয়ে এল বিজেপি-র অন্দরের কলহই।
গত কালই স্থির হয়েছিল, আজ সুষমা স্বরাজ ও অরুণ জেটলি ইউপিএ-র বর্ষপূর্তির দিনে সরকারের ব্যর্থতার খতিয়ান তুলে ধরে সাংবাদিক বৈঠক করবেন। সেই বৈঠকে প্রথম বার যোগ দিতে আমদাবাদ থেকে উড়ে এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সঙ্ঘ ও বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ মোদীকেই লোকসভা নির্বাচনের আগে ধাপে ধাপে তুলে ধরার নকশা তৈরি করেছে। সেই মোতাবেক গত কালই দিল্লিতে ঝটিকা সফরের মাঝেই লোকসভার প্রচারের রাশ নিজের হাতে তুলেছিলেন মোদী। প্রচার কমিটির প্রধান হিসাবে মোদীর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হওয়ার আগেই।
কিন্তু আজ সাংবাদিক সম্মেলনে সুষমা স্বরাজ পরোক্ষে মোদীর বিরোধিতাই করে বসলেন। স্মরণ করিয়ে দিলেন, জোট রাজনীতিই এখন বাস্তব। এবিপি নিউজ-নিয়েলসেন সমীক্ষাতেও দেখা গিয়েছে, ইউপিএ জমি খোয়াতে শুরু করলেও বিজেপি সরকার গড়ার অবস্থায় পৌঁছচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে বিজেপি-র অন্য শরিকদেরও প্রয়োজন। কিন্তু নীতীশ কুমারের মতো শরিকদের কাছে যেমন মোদীর গ্রহণযোগ্যতা নেই, অন্য অনেক সম্ভাব্য শরিক দলেরও গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রশ্নে আপত্তি রয়েছে।
বিজেপি-র নিচু তলা থেকে শুরু করে নেতৃত্বের একটি বড় অংশ মনে করছেন, এই মুহূর্তে মোদীর জনপ্রিয়তায় ভর করা ছাড়া আর কোনও গতি নেই। এই আবহেও সুষমা সাংবাদিক বৈঠকে তিন-তিন বার একই কথা বলে বুঝিয়ে দিয়েছেন, মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করার ক্ষেত্রে তাঁর কতটা আপত্তি রয়েছে। তাঁর কথায়, “বিজেপি ভোটের আগে আদৌ কাউকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করবে কি না কিংবা করলেও কাকে করা হবে, সেটি উপযুক্ত সময়েই সংসদীয় বোর্ডে স্থির হবে।” বিজেপি-র এক মোদীপন্থী নেতার কথায়, “এমন নয় যে, সুষমা স্বরাজ এ কথা আগে কখনও বলেননি। কিন্তু আজ সাংবাদিক বৈঠক ডাকা হয়েছিল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণের কৌশল ঘোষণা করতে। সেখানে চাইলে তিনি অনায়াসেই ওই প্রসঙ্গ এড়িয়ে যেতে পারতেন। মঞ্চে তাঁর পাশে জেটলি বসে থাকলেও কিন্তু তিনি তার উত্তর দেওয়ারই প্রয়োজন মনে করেননি। এমনকী, সাংবাদিক বৈঠকে যখন সুষমাকে প্রশ্ন করা হল, লালকৃষ্ণ আডবাণী কি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, তার ইতিবাচক জবাব দিয়েছেন তিনি। কিন্তু মোদীর নাম উঠতেই দোহাই দিয়েছেন নিয়মের।”
দলের অনেকই ভাবছেন, আডবাণী-সুষমার মতো নেতারা মোদীর বিরোধিতা করলেও তাঁরা জানেন জনপ্রিয়তার নিরিখে মোদীই তাঁদের মধ্যে শীর্ষে। সমীক্ষাও তাই বলছে। কিন্তু এই নেতারা শরিক সংগ্রহের বিষয়টি সামনে এনে মোদীকে ঠেকাতে চাইছেন। বিজেপি-র এই অন্তর্কলহকে উস্কে দিয়ে কংগ্রেসের নেতা সঞ্জয় নিরুপম বলেন, “বিজেপি এত মোদী-মোদী করছে, তাঁর দল কি তাঁকে গ্রহণ করবে? বিজেপি আগে সেই প্রশ্নের জবাব দিক।”
বিভিন্ন সমীক্ষার ফল দেখে মোদীপন্থী নেতারা উদ্বেগে রয়েছেন। মোদীকে তুলে ধরলেও সরকার গড়তে বাড়তি আসন কী ভাবে আসবে? বিজেপি-র কাছে স্পষ্ট জবাব নেই। দলের এক শীর্ষ নেতা আজ বলেন, “অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময়েও বিজেপি দু’শোর কোঠা পেরোয়নি। এই অবস্থায় একমাত্র মোদীকেই তুলে ধরলে যদি দেশ জুড়ে তাঁর পক্ষে একটা হাওয়া ওঠে তবে বাড়তি আসন ছিনিয়ে আনা সম্ভব হবে।”
|
পুরনো খবর: রথের রশি হাতে নিলেন মোদী |
|
|
|
|
|