|
|
|
|
রথের রশি হাতে নিলেন মোদী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা নিয়ে বিজেপির মধ্যে যতই দ্বন্দ্ব থাকুক, তিনি কিন্তু নিজের লক্ষ্যে অটল। দিল্লিতে এসে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের রাশ কার্যত নিজের হাতেই তুলে নিলেন মোদী।
কালই মনমোহন সরকারের দ্বিতীয় জমানার চতুর্থ বর্ষ পালন হবে। সে বিষয়ে দলের বক্তব্য কাল সকালেই যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করে জানাবেন অরুণ জেটলি ও সুষমা স্বরাজ। সেই বিষয়টি স্থির করতে আজ দিল্লিতে সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক ডাকা হয়। এই বোর্ডের সদস্য হওয়ার পরে এই প্রথম বৈঠকে যোগ দিলেন মোদী। সেখানে দলের রণকৌশল সম্পর্কে মোদী শুধু নিজের মতামত দিয়েই ক্ষান্ত হননি, সন্ধ্যায় সঙ্ঘ ও বিজেপির যোগসূত্রকারী রামলালের বাড়িতে দলের সব সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্রকে নিয়ে পৃথক বৈঠকও করেন। দল এখনও তাঁকে প্রচার কমিটির প্রধান হিসাবে ঘোষণা না করলেও মোদী আজ রাজনাথ সিংহের টিমের সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসে বুঝিয়ে দিলেন, লোকসভার রাশ তাঁরই হাতে। জুন মাসের গোড়ায় গোয়ায় দলের কর্মসমিতির বৈঠকে লোকসভা ভোটের প্রচার কৌশল স্থির হবে। সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে তা নিয়ে সবিস্তার আলোচনা হয়।
আজ সকালে দিল্লির মাটি ছোঁয়ার পর থেকেই সক্রিয় মোদী। দিল্লিতে পা রেখেই ছুটে গিয়েছেন লালকৃষ্ণ আডবাণীর সঙ্গে দেখা করতে, যিনি এখনও তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করার পক্ষপাতী নন। এবিপি নিউজ-নিয়েলসেন সমীক্ষায় স্পষ্ট, প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মানুষ সব থেকে বেশি পছন্দ করছেন মোদীকেই। কিন্তু এখনই ভোট হলে বিজেপি তার বর্তমান শরিকদের নিয়ে সরকার গড়ার অবস্থায় থাকবে না। আর নীতীশ কুমারের মতো শরিক তো বটেই, সম্ভাব্য শরিকদের মধ্যেও মোদীর গ্রহণযোগ্যতা নেই।
কিন্তু মোদী শিবির মনে করেন, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী এক বার দেশজুড়ে প্রচারে নামলে ভোটের হাওয়া ঘুরে যাবে। বর্তমান শরিকদের নিয়েই সরকার গড়ার কাছাকাছি অবস্থায় পৌঁছে যাবে বিজেপি। তাই আডবাণীর মতো দলে তাঁর প্রধান বিরোধীর মন জয়ের চেষ্টায় আজ দিল্লিতে নেমে সটান তাঁর বাড়িতে পৌঁছে যান মোদী। পরে টুইট করে জানান, ‘আডবাণীর সঙ্গে আমার বৈঠক খুবই ভাল হয়েছে। এ বারে নিতিন গডকড়ীর বাড়িতে যাচ্ছি।’ সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক শেষ হওয়ার পরই সভাপতি রাজনাথের বাড়িতে যান মোদী। রাজনাথ নিজেই টুইটারে সেই বৈঠকের ছবি প্রচার করেছেন। এর পর মোদী যান অটলবিহারী বাজপেয়ীর আশীর্বাদ নিতে। সন্ধ্যায় রামলালের বাড়িতে টিম-রাজনাথের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানে নিজের ঘনিষ্ঠ সাধারণ সম্পাদক অমিত শাহ থেকে শুরু করে রবিশঙ্কর প্রসাদ, ধর্মেন্দ্র প্রধানদের মতো নেতারা।
বিজেপি সূত্রের মতে, মোদীর দিনভর এই সক্রিয়তার পিছনে রাজনাথ ও সঙ্ঘেরও সমর্থন রয়েছে। নয়তো সঙ্ঘ-প্রতিনিধির বাড়িতে এ ভাবে দলীয় বৈঠক করতে পারতেন না মোদী। সেখানে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের কৌশল কী হবে, তা নিয়েই আলোচনা করেন তিনি। ৬০ শতাংশ যুব ভোটারের কথা মাথায় রেখে মোদী সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে জোর দেন স্যোশ্যাল মিডিয়াকে আরও দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করার ওপরে। বিজেপির এক নেতার মন্তব্য, “ক’মাস আগে দিল্লিতে দলের জাতীয় পরিষদের বৈঠকে তাঁর অঘোষিত অভিষেক হয়েছিল। আজ আরও একধাপ উত্থান ঘটল তাঁর। এবং সেটিও অঘোষিত।” |
|
|
|
|
|