ঐক্যের বার্তাতেও বিরোধই প্রকট শীর্ষ দুইয়ের
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে দুই মন্ত্রীর অপসারণকে কেন্দ্র করে সনিয়া-মনমোহনের তীব্র মতান্তরের কথা ক’দিন আগে পর্যন্ত কংগ্রেস সূত্রেই বলা হচ্ছিল। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে এ সব কংগ্রেস তথা সরকারের ক্ষতি করছে বুঝতে পেরে আজ ক্ষত মেরামতে নামলেন সনিয়া গাঁধী। কেন্দ্রে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের চতুর্থ বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে কংগ্রেস সভানেত্রী দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিলেন, “প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিরোধীরা লাগাতার কুৎসা ছড়ালেও তিনি মর্যাদার সঙ্গেই নিজের দায়িত্ব পালন করছেন। আমরা তাঁকে শ্রদ্ধা করি এবং সকলেই তাঁর পাশে রয়েছি।”
অনুষ্ঠান মঞ্চে মনমোহনের হয়ে জোরালো সওয়াল করার পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবেও সনিয়া বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর মতান্তরের কাহিনি সংবাদমাধ্যমের সৃষ্টি। এর কোনও সত্যতা নেই।”
তবে সনিয়া আজ মনমোহনের পাশে দাঁড়ালেও আজ কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে মনমোহনের মেয়াদ ২০১৪ পর্যন্তই। লোকসভা ভোটে রাহুল গাঁধীকে সামনে রেখেই ভোটে যাবে কংগ্রেস। এর আগে ইউপিএ-র বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও এ বারই প্রথম মঞ্চে দেখা গেল রাহুলকে। এই উপস্থিতিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে দল।
তবে এখনই কোনও জল্পনা উস্কে না দিয়ে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে রাহুল এ দিনও বলেন, “আমি তো আগেই জানিয়েছি যে দলের কাজ করব। ২০১৪ সাল পর্যন্ত মনমোহন সিংহই প্রধানমন্ত্রী থাকবেন।”
ইউপিএ মঞ্চে প্রথম বার। ছবি: পিটিআই।
ভবিষ্যতের সমীকরণ যা-ই দাঁড়াক, সন্দেহ নেই কংগ্রেস সভানেত্রীর এই বার্তা আপাতত স্বস্তি দিয়েছে মনমোহনকে। কারণ শুধু বিরোধীরাই নন, সরকারের শরিক দলের নেতারাও ইদানীং পরোক্ষে তাঁর সমালোচনা করতে শুরু করেছেন। এমনকী, আজ সকালেও কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী তথা ইউপিএ-র শরিক নেতা শরদ পওয়ার বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আর একটু তৎপর ও আক্রমণাত্মক হবেন বলে অনেকে প্রত্যাশা করেন।” এই অবস্থায় আজ নৈশভোজের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, সনিয়া গাঁধীর এই বার্তায় কি তিনি আশ্বস্ত বোধ করছেন? জবাবে মনমোহন বলেন, “নতুন করে আশ্বস্ত বোধ করার কোনও বিষয় ঘটেনি। কারণ, কংগ্রেস সভানেত্রীর সঙ্গে কোনও বিষয়ে কোনও দিন আমার মতান্তর হয়নি। যে প্রচার চালানো হচ্ছিল তা সর্বৈব মিথ্যা।”।
যদিও রাজনীতির কারবারিদের মতে, মতান্তর যে হয়েছিল সেটাই স্পষ্ট হয়ে গেল দু’জনের বক্তব্যে। কারণ, মতান্তর না থাকলে এত চড়া সুরে সমন্বয় ও সুসম্পর্কের বার্তা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ত না।
সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার পরে অশ্বিনী কুমারকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানো নিয়ে টানাপোড়েন তৈরি হলে কংগ্রেস সূত্রে বলা হয়, সনিয়া অশ্বিনীর ইস্তফা চাইলেও মনমোহন রাজি নন। অশ্বিনীর ইস্তফার পরেও আবার কংগ্রেস সূত্রে বলা হয়, সনিয়ার চাপেই আইনমন্ত্রীকে সরাতে বাধ্য হলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু এর পরই কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব বুঝতে পারেন মতান্তরের বার্তায় দলের ক্ষতি। এতে লোকসভা ভোটের আগে বিরোধীরা আরও বেশি করে প্রচার করবে, প্রধানমন্ত্রীর কোনও কর্তৃত্ব নেই। আমলারা যেমন বেঁকে বসবেন। আরও মাথা তুলতে চাইতে পারে বিচারব্যবস্থা।
ইউপিএ-র বর্ষপূর্তির মঞ্চে আজ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কমল নাথ। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানের আগে এক সাক্ষাৎকারে পোড় খাওয়া এই কংগ্রেস নেতা বুঝিয়ে দিয়েছেন, মনমোহনে আস্থা অটুট থাকলেও রাহুলই দলের ভবিষ্যত। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কমল নাথ বলেন, “মনমোহন সিংহ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দশ বছর কাজ করছেন। তিনি তাঁর দায়িত্ব অত্যন্ত কুশলতার সঙ্গে পালন করেছেন। তবে দল ও সরকারের কাজে এখনই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন কংগ্রেসের সহসভাপতি রাহুল। এ বার তাঁকে সামনে রেখেই লোকসভা ভোটে যাওয়া উচিত কংগ্রেসের।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.