আক্রমণ বিজেপিকে
ভোটের দামামা বাজালেন সনিয়া
ংসদীয় রাজনীতিতে যাবতীয় অস্থিরতা ও নেতিবাচক পরিস্থিতির জন্য বিজেপিকে দায়ী করে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের শেষ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান থেকেই লোকসভার ভোট-প্রচার শুরু করে দিলেন সনিয়া গাঁধী। এ-ও বোঝাতে চাইলেন, বিরোধীদের ‘অপপ্রচারে’ তিনি ভীত নন। বরং তিনি হতাশ। কারণ, বিজেপি সংসদে অচলাবস্থা তৈরি করায় খাদ্য নিরাপত্তা ও জমি বিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করাতে পারেনি সরকার। অথচ সেগুলি নিয়ে রাজনৈতিক ভেদাভেদ থাকতেই পারে না। কারণ, “সেগুলির সঙ্গে জীবন ও জীবিকা জড়িয়ে রয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষের।”
সনিয়া যে আগ্রাসী হবেন, তা আগে থেকেই বলা হচ্ছিল। কৌশলী কংগ্রেস সভানেত্রী আজ সেটাই করেছেন। ইউপিএ-র বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান থেকে বার্তা দিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন, বিজেপির বাধাতেই গরিব মানুষের মুখে অন্ন সুনিশ্চিত করতে পারছে না সরকার। তাঁর কথায়, “বিজেপি ও এনডিএ-র কাছে বিনীত অনুরোধ, তাঁরা যেন খাদ্য নিরাপত্তা ও জমি বিল সংসদে পাশ করাতে দেন।” যার অর্থ এই দুই বিল নিয়ে অর্ডিন্যান্সের পথে হাঁটবে না সরকার। বরং বিজেপি সংসদে অচলাবস্থা তৈরি করলে সেটাই ভোটের অস্ত্র হবে কংগ্রেসের।
ভোটের আগে আজ কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের মনোবল বাড়ানোরও চেষ্টা করেছেন সনিয়া। বস্তুত দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের শুরু থেকে এ যাবৎ উপর্যুপরি দুর্নীতির অভিযোগে কংগ্রেসের মনোবল যে তলানিতে এসে পৌঁছেছে তা তাঁর কাছেও স্পষ্ট। কংগ্রেস সভানেত্রী আজ বলেন, “দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে সবারই উদ্বেগ রয়েছে। কিন্তু এ কথাও মনে রাখতে হবে যে দুর্নীতির সঙ্গে কোনও আপস করেনি সরকার। এ নিয়ে সরকারের লুকোনোরও কিছু নেই। তাই রক্ষণাত্মক হওয়ার প্রশ্ন নেই।” উল্টে সনিয়া বুঝিয়ে দেন, এ বার বিরোধীদের পাল্টা জবাব দেওয়ার সময় আসন্ন। তাঁর কথায়, সরকারের বিরুদ্ধে বহু মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রচার চালানো হচ্ছে। উদ্দেশ্য, মানুষকে বিভ্রান্ত করা। ইউপিএ সরকার নিয়ে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করা। দৃঢ় ভাবে এর মোকাবিলা করতে হবে।
বুধবার ইউপিএ-র চার বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে সাফল্যের খতিয়ান
হাতে প্রধানমন্ত্রী ও কংগ্রেস সভানেত্রী। ছবি: পিটিআই।
অত ঝাঁঝালো ভাষায় বিজেপিকে আক্রমণ না করলেও, এনডিএ জমানার সঙ্গে ইউপিএ জমানার গত ন’বছরের তুল্যমূল্য বিশ্লেষণ করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। একের পর এক পরিসংখ্যান তুলে জানান, আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়ছে। মুদ্রাস্ফীতি কমছে। শীঘ্রই অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “ইউপিএ সরকার এমন পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়।” তবে শেষ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে আগের সব বছরগুলির মতো জাঁকজমক বিশেষ ছিল না। ৭ নম্বর রেসকোর্স রোডে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের পঞ্চবটীতে এর আগে বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান মঞ্চে শরিকদের জন্য স্থান সংকুলান নিয়ে সঙ্কট হত। এমনকী গত লোকসভা ভোটের আগে ইউপিএ সরকার থেকে বামেরা সমর্থন প্রত্যাহারের পরেও জমজমাট ছিল সে বারের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান। কিন্তু গত এক বছরে তৃণমূল কংগ্রেস-সহ ৪ শরিক ইউপিএ ছেড়েছে। ফলে শরদ পওয়ার ও অজিত সিংহের মতো দুই ছোট দলের শরিক নেতা এবং লালু প্রসাদ-রামবিলাস পাসোয়ানকে দিয়েই আজ মঞ্চ ভরাতে হয়েছে। এমনকী সাম্প্রতিক কালে সংসদে যে দুই সমর্থক দলকে বার বার ইউপিএ-র জিয়নকাঠি হিসাবে দেখা গিয়েছে, সেই সপা-বসপা-র শীর্ষ দুই নেতা-নেত্রী মুলায়ম-মায়াবতী কেউই নৈশভোজে আসেননি। বসপা-র তরফে শুধু উপস্থিত ছিলেন মায়াবতীর আস্থাভাজন সতীশ মিশ্র। আর ছিলেন সপা থেকে বেরিয়ে যাওয়া দুই সাংসদ অমর সিংহ এবং জয়া প্রদা।
তবে সেই ভাঙা হাটেও সাহসী মুখ তুলে ধরে ত ত্রুটি রাখতে চাননি কংগ্রেস নেতৃত্ব। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কমলনাথ বলেন, নিন্দুকেরা যাই বলুন এটা উদযাপনেরই মুহূর্ত। এর আগে মাত্র দুটি সরকার ৯ বছর পূর্ণ করেছে। সেই রেকর্ড ছুঁল ইউপিএ। আর সনিয়ার মতোই প্রত্যয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “২০১৪ সালেও ভোটে জিতে ফের ক্ষমতায় আসবে ইউপিএ। এ ব্যাপারে কোনও সংশয় নেই।”

প্রধানমন্ত্রীর মুখে ইকবাল
দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের শেষ বর্ষপূর্তিতে নতুন আশার সন্ধানী প্রধানমন্ত্রী। ন’বছর প্রধানমন্ত্রিত্বের পর কেমন লাগছে? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে মনমোহন সিংহ উর্দু কবি ইকবালকে উদ্ধৃত করে বলেন, “সিতারো সে অগে জহাঁ অর ভি হ্যায়, অভি ঈশক কে ইমতিহান অর ভি হ্যায়।” যার অর্থ, এর বাইরেও পৃথিবীটা রয়েছে, রয়েছে আরও অনেক পরীক্ষাও। আগামী লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী এ হেন মন্তব্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর সরকারকে এক থেকে দশের মধ্যে কত দেবেন, জিজ্ঞেস করেছিলেন সাংবাদিকরা। তবে এই মূল্যায়নের ভার তিনি মানুষের হাতেই ছাড়তে চান।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.