সংস্থার নির্বিঘ্ন ব্যবসার দাবিতে পথে রোজ ভ্যালীর এজেন্টরা
ঙ্কিত, উদ্বিগ্ন আমানতকারীদের দীর্ঘ লাইন যখন রোজ ভ্যালীর অফিস ছেড়ে রাস্তায় উপচে পড়ছে, সে সময়েই সংস্থার এজেন্টরা নিজেদের এবং আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য পথে নামলেন। রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী না থাকায় ত্রিপুরার অর্থমন্ত্রী বাদল চৌধুরীর সঙ্গে আজ দেখা করেন এজেন্টদের রাজ্য কমিটির প্রতিনিধিরা। বাদলবাবুর কাছে রোজ ভ্যালী ফিল্ড ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে দাবি-দাওয়া সহ একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে। দাবি মূলত একটাই, রোজ ভ্যালীকে রাজ্যে নিরুপদ্রবে ব্যবসা করতে দিতে হবে।
আগরতলার আস্তাবল ময়দানে রোজ ভ্যালী ফিল্ড ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশনের কয়েক হাজার সদস্য আজ জমায়েত হন। ত্রিপুরার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ফিল্ডকর্মীরা বা এজেন্টদের একটি মিছিল শহর ঘুরে আরএমএস চৌমুহনিতে, রোজ ভ্যালী সদর কার্যালয়ের সামনে আসে। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সঞ্জীব সাহা জানান, রোজ ভ্যালীর ফিল্ড কর্মী হিসেবে কর্মরত ত্রিপুরার দেড় লক্ষাধিক কর্মী এবং অফিস কর্মীদের আর্থিক সুরক্ষা দেওয়া, রোজ ভ্যালীতে লক্ষ লক্ষ আমানতকারীর স্বার্থ সুরক্ষিত করার জন্য আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি। পাশপাশি, ‘আইনের’ দৃষ্টিতে রোজ ভ্যলী গোষ্ঠীর কোনও ‘ভুল-ত্রুটি’ থাকলে তাকে কী ভাবে শুধরে নিয়ে ফিল্ডকর্মী এবং আমানতকারীদের স্বার্থ আরও সুরক্ষিত করা যায়, সে বিষয়টিও যেন ‘মানবিক’ দৃষ্টিতে রাজ্য সরকার দেখেন, তাও আমরা অর্থমন্ত্রীকে জানিয়েছি।”
আগরতলার রাস্তায় রোজ ভ্যালীর এজেন্টরা। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র
ত্রিপুরায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ রোজ ভ্যালীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন বলে সংস্থার চেয়ারম্যান গৌতম কুণ্ডু আগেই জানিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, ত্রিপুরার অর্থনীতির সঙ্গে তাঁরা কী ভাবে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েছেন তাও। চেয়ারম্যানের কথার অনুরণনই আজ এজেন্টদের গলাতেও শোনা গিয়েছে। তাঁদের কথায়, সংস্থা ‘আইনি জটিলতায়’ বন্ধ হয়ে গেলে লক্ষাধিক ফিল্ডকর্মী তথা এজেন্ট ভয়াবহ আর্থিক অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে। আমানতকারীদের স্বার্থ বিঘ্নিত হবে। বিশাল সংখ্যক মানুষ আর্থ-সামাজিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে বলে এজেন্টদের আশঙ্কা।
তবে রোজ ভ্যালী প্রসঙ্গে ত্রিপুরার অর্থমন্ত্রী বাদল চৌধুরী রাজ্য সরকারের অবস্থান আজ আরও একবার পরিষ্কার করে দিয়েছেন। রোজ ভ্যালীর ফিল্ডকর্মীদের তরফে একটি প্রতিনিধি দল তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন, এ কথা স্বীকার করেই তিনি বলেন, ‘‘রোজ ভ্যালী যে ভাবে এখানে বাজার থেকে আমানত সংগ্রহ করছে, তা যে বেআইনি সেটা আগেই বলেছি। আরবিআই, সেবি ইত্যাদি কেন্দ্রীয় সংস্থার কোনও অনুমতি না থাকলে এ ধরনের ব্যবসা করা যায় না। রোজ ভ্যালীর সে অনুমতি নেই।’’ উল্লেখ্য, যে সব নন-ব্যাঙ্কিং আর্থিক সংস্থার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই অভিযোগ জমা পড়েছে, সে রকম ২৭টি সংস্থার তদন্তের ভার সিবিআইকে রাজ্য সরকার এ মাসেই দিয়ে দিয়েছে। তার মধ্যে রোজ ভ্যালী-র নামও রয়েছে। বাদলবাবু বলেন, ‘‘অভিযুক্ত বেসরকারি আর্থিক সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। আইন আইনের পথেই চলবে। রাজ্য সরকার সেখানে কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। দেখা যাক, সিবিআই কী রিপোর্ট দেয়।’’ রোজ ভ্যালী গোষ্ঠীর একটি সংস্থার বিরুদ্ধে রাজ্যের একটি আদালতে ইতিমধ্যেই মামলা শুরু হয়েছে। বাদলবাবু জানান, ‘‘ওই সংস্থার তরফে সাম্প্রতিক সংগৃহীত আমানতের হিসেবে গরমিল পাওয়া গিয়েছে। সংগৃহীত ১৯৬ কোটি টাকার মধ্যে ১১০ থেকে ১২০ কোটি টাকা কোথায় কী ভাবে রাখা বা খরচ করা হয়েছে, তার কোনও হিসেব সংস্থাটি দেখাতে পারেনি। ফলে একটি মামলা হয়েছে। আদালত সে মামলায় কী রায় দেয়, সেটাও দেখা দরকার।’’ আরবিআই বা সেবি’র মতো সংস্থার অনুমতি নিয়ে এবং রাজ্যের আইন মেনে যে সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান ত্রিপুরায় ব্যবসা করবে, তাদের বিষয়ে রাজ্য সরকারের যে কোনও আপত্তি নেই, সে কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.