লগ্নি টানতে বিহারে তালিকা হচ্ছে ইচ্ছুক জমিদাতাদের |
শিল্পের জন্য জমি নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্কের মধ্যেই জোরকদমে ইচ্ছুক জমিদাতাদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করল বিহার সরকার। এ নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করতে জেলা শাসকদের নির্দেশ দিয়েছে শিল্প দফতর।
জমির খোঁজে ২০১১ সালে ‘আও বিহার’ প্রকল্প চালু করেছিল নীতীশকুমার সরকার। সরকারের পরিকল্পনা ছিল, ওই প্রকল্পের মাধ্যমে ইচ্ছুক জমিদাতাদের কাছে পৌঁছনো যাবে। তখন তেমন সাড়া মেলেনি। এ বার অবশ্য এ নিয়ে প্রশাসন অনেকটাই আশাবাদী।
জমিদাতাদের কাছ থেকে সরাসরি জমি কিনেই শিল্প-স্থাপন করতে পারেন বিনিয়োগকারীরা---বিহারের শিল্পনীতি এমনই। আর এতেই সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে অনেক সংস্থাকে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্যে ১৮৮৮ থেকে ১৯১৫ সালের মধ্যে শেষবার জমির সমীক্ষা হয়েছিল। এরপর তেমন কোনও তথ্য সংগ্রহের কাজ না-হওয়ায় ভূমি দফতরের কাছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের জমির কোনও নতুন নথি নেই। কোথায়, কার কাছে শিল্পের জন্য কতটা জমি পাওয়া যেতে পারেতা খুঁজতে গিয়ে হয়রানি হচ্ছে অনেক শিল্পপতিরই। সমস্যার সুরাহায় এ মাস থেকেই আকাশ-পথে জমির সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। তিন বছরেই তা শেষ করা হবে।
একইসঙ্গে ‘আও বিহার’ প্রকল্পটিও চলবে সমানতালেই। প্রশাসন জানিয়েছে, ইচ্ছুক জমিদাতারা এই প্রকল্পে তাঁদের জমি বিক্রি অথবা লিজ দিতে পারবেন। রাজ্যজুড়ে সংগৃহীত জমি সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। তাতে সুবিধা হবে রাজ্যে শিল্প-স্থাপনে আগ্রহী সংস্থাগুলির। প্রয়োজনে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ইচ্ছুক জমিদাতাদের আলোচনার ব্যবস্থা করে দেবে সরকারই। তবে দু’পক্ষের কথাবার্তায় কোনওভাবেই হস্তক্ষেপ করবে না।
সরকারি সূত্রের খবর, ‘আও বিহার’ প্রকল্প নিয়ে রাজ্যজুড়ে প্রচার চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলিকে। জমির মালিকদের কাছে পৌঁছতে বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। একইসঙ্গে শিল্প দফতর জানিয়েছে, এই প্রকল্পের বিষয়ে যাতে কোনও সংশয় না-থাকে, সে জন্য জমি-মালিকদের সমস্ত তথ্য জানাতে হবে।
এই প্রকল্পে জমি দিতে গেলে দু’পক্ষকেই কয়েকটি শর্ত মানতে হবে। প্রশাসন জানিয়েছে, কেউ ইচ্ছামতো জমির দাম চাইতে পারবেন না। বিনিয়োগকারীকে যে দাম বলা হবে, তা অন্তত ছ’মাস পরিবর্তন করা যাবে না। শিল্প দফতরের প্রধান সচিব নবীন বর্মা বলেন, “আগে এই প্রকল্পে তেমন সাড়া মেলেনি। ফের এগতে চাইছি আমরা। সে জন্য রাজ্যেও বিভিন্ন প্রান্তে প্রচার শুরু হয়েছে।”
বিহারের একটি বণিকসভার সভাপতি পি কে অগ্রবাল বলেন, “সরকার জমি অধিগ্রহণ না-করায় বিনিয়োগে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। বিকল্প পথ খুঁজতে সরকারকে অনুরোধ করেছি। নতুন শিল্প-জোন তৈরির প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।”
শিল্পপতি সত্যজিৎ কুমারের কথায়, “এ রাজ্যে জমি জোগাড়ের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা কম। সমীক্ষা না-হওয়ায় জমি সর্ম্পকে নতুন তথ্যও সরকারের হাতে নেই। সমস্যা এড়াতে আমরা সরকারের মাধ্যমেই জমি নিতে চাই।”
|