সারদা কাণ্ডে সিবিআই-তদন্ত চেয়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে একসঙ্গে দু’টি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল। একটি মামলা করেছেন হুগলি জেলার দুই কংগ্রেস নেতা প্রতিমকুমার সিংহরায় ও আবু আব্বাসউদ্দিন। অন্য মামলাটির আবেদনকারী জনৈক সুব্রত চট্টরাজ। ওঁদের আবেদনে অবশ্য শুধু সারদা নয়, নিয়ম না-মানা সমস্ত অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে সিবিআই-তদন্ত চাওয়া হয়েছে।
 সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা দাখিল হয়েছে। সেটি প্রথমে চলছিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণকুমার মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চে। কিন্তু প্রধান বিচারপতি গত সপ্তাহে বেঞ্চ বদলে দিয়েছেন। নতুন ডিভিশন বেঞ্চে মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য হয়েছে ৩ মে। শুনানির ‘বিলম্বে’ ক্ষুব্ধ আবেদনকারীর কৌঁসুলি সুব্রত মুখোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার ডিভিশন বেঞ্চকে বলেছিলেন, হাইকোর্ট মামলা খারিজ করে দিক, তিনি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে চান।
এ দিন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ দুই আবেদনকারীর আইনজীবী শুভাশিস ভৌমিক বলেন, মামলার বিষয়বস্তু মূলত তিনটি। সারা দেশে সারদার মতো কতগুলো অর্থলগ্নি সংস্থা রয়েছে, কেন্দ্র তার তালিকা প্রকাশ করে জনসাধারণকে জানিয়ে দিক। নিয়ম লঙ্ঘনকারী সব ক’টি সংস্থার বিরুদ্ধে যাবতীয় তদন্ত সিবিআই করুক। সিবিআই তদন্ত হলে তা যাতে শীর্ষ আদালতের তত্ত্বাবধানে হয়, সে মর্মেও আবেদন করা হয়েছে। আর্জিতে বলা হয়েছে, মামলার তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট সময়ে সময়ে আদালতে পেশ করতে হবে। আর তদন্ত শেষে ওই জাতীয় অপরাধ রুখতে আইনানুগ কী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সুপ্রিম কোর্টই তা যেন স্থির করে দেয়।
পাশাপাশি জনস্বার্থ আবেদনকারীদের তরফে সুপ্রিম কোর্টকে জানানো হয়েছে, সেবি বা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কোনও রাজ্য সরকারকে কোনও সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বললেও সংশ্লিষ্ট সরকার অনেক সময়ে গড়িমসি করছে। এই পরিস্থিতিতে শীর্ষ আদালত এমন একটি বিশেষ তদন্ত সংস্থা গড়তে দিল্লিকে নির্দেশ দিক, যা স্বাধীন ভাবে এই ধরনের অর্থ লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারে। আবেদনকারীরা চান, এমন কঠোর দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ভাবে কারবার খুলে প্রতারণা করার সাহস না পায়।
সারদার মতো অর্থ লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের দাবিতে সম্প্রতি সরব হয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। এ দিন সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা রুজু হয়েছে মূলত তাঁরই উদ্যোগে। মান্নান এ দিন বলেন, “অর্থ লগ্নি সংস্থাগুলোর সঙ্গে কোটি কোটি আমানতকারীর ভাগ্য জড়িয়ে। অসাধু মালিকেরা গরিব, অসহায় মানুষকে প্রতারণা করে চলেছে। কোনও রাজ্য সরকার তাদের কারবার চালাতে মদত দিয়েছে।”
এ অবস্থায় সিবিআই তদন্ত ছাড়া বিকল্প নেই বলে দাবি করেন মান্নান। |
