শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফের দাদাগিরির অভিযোগ উঠল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে।
দিন সাতেক আগে পরীক্ষায় নকল করতে বাধা দেওয়ায় ঘুষি মারা হয়েছিল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতের এক শিক্ষককে। সেই ঘটনা নিয়ে বাইরে মুখ না-খোলার জন্য তাঁকে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। ওই শিক্ষকের পাশে দাঁড়ানোয় এ বার এক ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ উঠল। জখম ছাত্র প্রসেনজিৎ দাসকে আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। দু’টি ঘটনাতেই জড়িয়েছে রবীন্দ্রভারতীতে টিএমসিপি-র ইউনিট সভাপতি তথা পর্যবেক্ষক বিশ্বজিৎ দে (বাপ্পা) এবং তাঁর তিন সঙ্গীর নাম। ওই চার জনের বিরুদ্ধে কাশীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ নথিভুক্ত করার কথা স্বীকার করেছেন ডিসি (নর্থ) গৌরব শর্মা। তিনি বলেন, “প্রসেনজিৎ নামে ওই ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়েরই চার ছাত্রের বিরুদ্ধে কাশীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। মূলত তাঁকে মারধর করা হয়েছে বলেই অভিযোগ।” এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিশ্বজিৎ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “পুরো ঘটনাটিই সাজানো।” |
হাসপাতালে আহত প্রসেনজিৎ দাস।—নিজস্ব চিত্র। |
অভিযোগ, গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ পার্ট টু পরীক্ষা চলাকালীন এক ছাত্রীকে নকল করতে বাধা দেওয়ায় শিক্ষক প্রদীপ দাসকে মারধর করেন বিশ্বজিৎ এবং বাংলা স্নাতকোত্তর স্তরের এক ছাত্র। সংস্কৃত বিভাগের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র প্রসেনজিৎ এর প্রতিবাদে অন্য ছাত্রছাত্রীদের একজোট করার চেষ্টা করছিলেন। তাই তাঁর উপরে হামলা চালানো হয়। অন্য পড়ুয়ারা জানান, মারধরে গুরুতর আহত প্রসেনজিৎকে আর জি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়।
চিকিৎসকেরা জানান, ওই ছাত্রকে এমন ভাবে মারা হয়েছে যে, তিনি বমি করতে শুরু করেন। তাঁর পেটে, মাথায় এবং হাতে চোট লেগেছে বলেও চিকিৎসকদের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের শয্যায় বাঁ হাতের কনুই থেকে কব্জি পর্যন্ত ব্যান্ডেজ জড়ানো অবস্থায় শুয়ে ছিলেন প্রসেনজিৎ। ডান হাতে স্যালাইন চলছে। বলেন, “আমি আগে টিএমসিপি-ই করতাম। কিন্তু এখন আর কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই। ওদের আচরণ মেনে নিতে পারিনি বলেই টেলিফোনে বন্ধুদের বিষয়টা জানাচ্ছিলাম। সেই জন্য ওরা আমাকে এ ভাবে মারল!”
হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রসেনজিতের হাতে এক্স-রে, মাথায় স্ক্যান করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পেটে আলট্রা-সোনোগ্রাফি করিয়েছেন চিকিৎসকেরা। বারবার বমি হওয়ায় তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
প্রসেনজিৎকে মারধরের কথা কানে এলেও ঠিক কী ঘটেছে, এখনও তিনি তা জানতে পারেননি বলে মন্তব্য করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সুব্রত ঘোষ। তিনি বলেন, “খবরটা পেয়েছি। কিন্তু পুরো বিষয়টি না-জেনে কিছু মন্তব্য করতে পারছি না। তবে শুনেছি, প্রদীপবাবুকে মারার ঘটনার সঙ্গে প্রসেনজিতের ঘটনাটি যুক্ত।” |