টাকা ফেরানোর আশ্বাস, জেলে অ্যানেক্স-কর্তা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাটোয়া |
ফের জেল হাজত হল অ্যানেক্স-কর্তা প্রসেনজিৎ মজুমদারের। সোমবার বর্ধমানের কাটোয়া আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে তিনি অবশ্য দাবি করেন, “আমি কারও সঙ্গে প্রতারণা করিনি। টাকা ফেরত দেবই।”
লগ্নি সংস্থা অ্যানেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ইন্ডিয়া) লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রসেনজিৎবাবুকে গত ১১ মে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর থেকে কাটোয়ায় নিয়ে আসা হয়েছিল। সে দিনই বিচারক তাঁকে ন’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তার মেয়াদ ফুরোতে এ দিন তাঁকে ফের আদালতে তোলা হলে কাটোয়ার এসিজেএম ১৪দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আগামী ২৮ মে-র মধ্যে পুলিশকে কেস ডায়েরি জমা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। |
আদালতে প্রসেনজিৎ।—নিজস্ব চিত্র। |
আদালতে পুলিশ জানিয়েছে, অ্যানেক্সের বিভিন্ন অফিসে গিয়েও তারা কোনও নথির খোঁজ পায়নি। সংস্থার সদর দফতর থেকেও কোনও নথি যোগাড় করা যায়নি। তদন্তে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির প্রসেনজিৎ প্রথম জীবনে ছোটখাটো নানা লগ্নি সংস্থার এজেন্ট ছিলেন। ২০০৭ সালে তিনি ‘অ্যালকেমিস্ট’ সংস্থার এজেন্ট হন। কিছু দিন পরে তিনি ‘ইউরো’ সংস্থার পরিচালন সমিতির সদস্য হন এবং সেই সমিতির সদস্য ও এজেন্টদের সঙ্গে নিয়েই ২০০৯-এর ৯ ডিসেম্বর গড়ে তোলেন অ্যানেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ইন্ডিয়া) লিমিটেড।
খোঁজখবর নিয়ে পুলিশ জেনেছে, এ রাজ্য ছাড়াও আসাম এবং বিহারে সংস্থার ২৪টি দফতরে হাজার তিরিশ এজেন্ট রয়েছেন। তাঁরা পুলিশকে জানিয়েছেন, রেকারিং ডিপোজিটের মতো প্রকল্পে পাঁচ বছর পর্যন্ত টাকা রাখলে ৭৫% সুদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সংস্থাটি। চার বছরে টাকা দ্বিগুণ, ১০ বছরে দশ গুণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হত। উত্তর চব্বিশ পরগনার নৈহাটিতে ৩৭ কাঠা জমি দেখিয়ে টাকা তোলা শুরু করেন প্রসেনজিৎবাবু। বর্তমানে তাঁর সংস্থার হাতে কয়েকশো বিঘা জমি রয়েছে।
এজেন্টরা পুলিশকে জানিয়েছেন, সংস্থাটি বাজার থেকে ৮৪ কোটি টাকা তুলেছে। সম্পত্তি রয়েছে মোটামুটি ২৫ কোটি টাকার। এজেন্টরা ইতিমধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। সম্প্রতি সোদপুর থেকে কাটোয়ায় এসে কিছু এজেন্ট দেখাও করে গিয়েছেন প্রসেনজিৎবাবুর সঙ্গে। তাঁদের অন্যতম অজিতকুমার দাস, সন্ধ্যা দেবনাথেরা বলেন, “উনি বলেছেন, জামিন পেয়ে বাইরে গেলেই আমানতকারীদের সমস্ত টাকা ফেরত। কী ভাবে দেবেন, সেটা উনিই ভাল বলতে পারবেন।”
|