কমিশনের উদ্বেগ স্পর্শকাতর বুথও
দিন বদলে ৯, রাজ্য অনড় জেলাবিন্যাসে
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আর্জি মতো তৃতীয় দফার নির্বাচন ৯ জুলাই করাতে রাজি হলেও, জেলাবিন্যাসে নিজেদের মতেই অটল থাকছে রাজ্য সরকার। মহাকরণ সূত্রের খবর, আজ, সোমবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি পাঠিয়ে রাজ্য এই কথাই জানাবে।
রাজ্য সরকারের চিঠি হাতে না পেয়ে এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ কমিশন। কমিশন সূত্রে রবিবার বলা হয়, তৃতীয় দফার ভোটের দিন বদল এবং জেলাবিন্যাস নিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানিয়ে শনিবার রাজ্যকে তারা চিঠি পাঠিয়েছিল। তার জবাব না দেখা পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। তবে কলকাতা হাইকোর্ট যে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে পঞ্চায়েত ভোটের প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে, সে কথাও কমিশন মাথায় রাখছে। তাই জেলাবিন্যাস নিয়ে সহমত হওয়ার আগে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করা না গেলেও প্রস্তুতির কাজ কিন্তু এগিয়ে চলেছে পুরোদমে।
তারই অঙ্গ হিসেবে শনিবার ৯টি জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে। রবিবার তিনি বৈঠক করলেন বাকি ৮টি জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে। এই বৈঠকে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের কর্তারাও ছিলেন। পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আজ, সোমবার চূড়ান্ত পর্যায়ের বৈঠক হবে কমিশনে। সেখানে রাজ্যের পক্ষে স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায় এবং এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) বাণীব্রত বসুর থাকার কথা।
এ দিনের বৈঠকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তরফে স্পর্শকাতর বুথের যে তালিকা দেওয়া হয়, তা দেখে কমিশন অবাক। কমিশনের একটি সূত্র বলেন, পশ্চিম মেদিনীপুর এ বারে স্পর্শকাতর বুথের যে সংখ্যা উল্লেখ করেছে, তা আগের বারের বৈঠকে পেশ করা সংখ্যা থেকে অনেকটাই কম। এমনটা কেন হল, তা জানতে চেয়েছে কমিশন। কমিশনের সূত্রটি বলেন, স্পর্শকাতর বুথে যে পরিমাণ নিরাপত্তা দেওয়া হবে, তা সাধারণ বুথ বা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের থেকে অনেক বেশি। হাইকোর্টই এই সংখ্যা ঠিক করে দিয়েছে। স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা বেশি হলে নিরাপত্তারক্ষীও বেশি লাগবে। মাওবাদী অধ্যুষিত পশ্চিম মেদিনীপুরে এমন বুথের সংখ্যা বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক। হঠাৎ এ বারের বৈঠকে কী ভাবে তা কমে গেল, তাই নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে কমিশন।
প্রশাসনের একাংশ মনে করছে, জেলাবিন্যাসের মতো তাই নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন নিয়েও কমিশন-রাজ্য সরকার বিরোধ মাথাচাড়া দিতে পারে। কমিশনের সূত্র বলেন, বিভিন্ন জেলা প্রশাসন শনিবার ও রবিবার স্পর্শকাতর বুথের যে তালিকা জমা দিয়েছেন, সেগুলি এ বার নিজেদের তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখবেন তাঁরা। তখনই স্পষ্ট হয়ে যাবে, কোন জেলায় স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা কত কমেছে বা বেড়েছে। কমিশনের নিজস্ব তালিকাটি জেলাগুলির প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেই তৈরি করা হয়েছিল বলে কমিশন সূত্রে বলা হয়েছে।
জেলাবিন্যাস নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত মতৈক্য না হলে কি করবে কমিশন? কমিশনের একটি সূত্র জানান, ঠিক সময়ে পঞ্চায়েত ভোট করানোর জন্য সরকারের প্রস্তাব মেনে নিতে পারে কমিশন। সে ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই। দ্বিতীয় পথ অনুযায়ী, ফের আদালতে আবেদনও করতে পারে কমিশন। কেউ কেউ আবার বলছেন, রাজ্য পঞ্চায়েত আইনের ১৩৭ নম্বর ধারা মোতাবেক কমিশন নিজেদের ঠিক করা জেলাবিন্যাসের উপরে ভিত্তি করেই বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে। একেবারে নিরুপায় হলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার ওই ধারা প্রয়োগ করতে পারেন। কিন্তু সেই সংঘাতের পরিবেশ কমিশন তৈরি করবে বলে মনে করছেন না রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা।
রাজ্য প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা আবার জানাচ্ছেন, নির্বাচনী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে ওই ধারাটি প্রয়োগই করতে পারবে না কমিশন। সে ক্ষেত্রে ওই কর্তার আশঙ্কা, জেলাবিন্যাস নিয়ে রাজ্যের প্রস্তাব মেনে বিজ্ঞপ্তি জারি করলেও পরে কমিশন নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন নিয়ে ১৩৭ ধারার অস্ত্রটি প্রয়োগ করতে পারে।
তবে জেলাবিন্যাস বা রক্ষী মোতায়েন নিয়ে বিরোধ থাকলেও পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে যে অনিশ্চয়তা নেই, তা মীরা পাণ্ডে এ দিন আবার জানিয়ে দিয়েছেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক প্রশাসনিক কর্তা জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি কমিশন ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিতে পারে বলে মীরাদেবী ইঙ্গিত দিয়েছেন।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.