কেলেঙ্কারির আঁচ লাগতে দেব না, বললেন মমতা
র্মসঙ্কট। ধর্মযুদ্ধও বটে।
দু’বছর পূর্তির লগ্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এখন সেই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
সারদা কেলেঙ্কারি এবং ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা লগ্নি সংস্থাগুলির লাগামহীন রমরমার সঙ্গে এই প্রথম সরাসরি জড়িয়ে গিয়েছে মমতার কাছাকাছি থাকা একাধিক ব্যক্তির নাম। যাঁদের মধ্যে তৃণমূল সাংসদ থেকে বড় মাপের নেতা অনেকেই আছেন। মমতার পক্ষে যা খুব স্বস্তিকর হতে পারে না। কারণ তাঁর সৎ, নিষ্কলঙ্ক ভাবমূর্তির সঙ্গে এটা একেবারেই বেমানান। এখানেই ধর্মসঙ্কটে পড়ে গিয়েছেন তিনি। আর এই সঙ্কট থেকে দল ও সরকারকে রক্ষা করতে চলছে তাঁর প্রাণপণ চেষ্টা। যাকে বলা চলে, ধর্মযুদ্ধ।
কার্যত এমনই এক পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়ে আজ, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তৃতীয় বছরের যাত্রা শুরু করলেন মমতা। তার আগে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে জোরের সঙ্গে দাবি করলেন, ‘সব অপপ্রচার’। তাঁর দল ও সরকারের গায়ে কোনও কেলেঙ্কারির কালি তিনি লাগতে দেননি, দেবেন না। তবে তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তাঁর ছাড় নেই।
একটি নির্বাচিত সরকারের স্বাভাবিক মেয়াদ পাঁচ বছর। দু’বছর তার আয়ুষ্কালের অর্ধেকও নয়। কিন্তু প্রতিটি বছর তার আগের এবং পরের বছরের কর্মধারার সঙ্গে যোগসূত্রে বাঁধা থাকে। গত বারের মতো এ বারেও সাফল্যের দীর্ঘ তালিকা হাতে নিয়ে প্রচার শুরু করেছে সরকার। সেখানে স্বাভাবিক ভাবেই দাবি করা হয়েছে: শিল্প, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা থেকে শুরু করে মাথাপিছু আয়ের হিসেব সব ক্ষেত্রে অগ্রগতির ছবি স্পষ্ট।
যদিও অনেকের মতে, উন্নয়নের অন্যতম শর্ত শিল্পায়ন নিয়ে সরকারের ভূমিকা দু’বছরেও খুব আশাব্যঞ্জক নয়। বড় শিল্পের সম্ভাবনা বিশেষ তৈরি হয়নি। বরং জমি-নীতি অপরিবর্তিত থাকায় সরকারের নয়া শিল্পনীতির খসড়াতেও বড় শিল্প না-হওয়ার প্রবণতা মোটামুটি স্পষ্ট।
মমতা অবশ্য মনে করেন, শিল্প মানে শুধু বড় বড় কারখানা নয়, ক্ষুদ্র-মাঝারি থেকে শুরু করে গ্রামীণ কুটির-হস্তশিল্প, সব মিলিয়েই হয় অগ্রগতি। তাঁর কথায়, “বড় কলকারখানার আমি বিরোধী নই। তবে যাঁরা মনে করেন, শিল্পায়ন মানেই শত শত একর জমিতে হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ, আমি তাঁদের সঙ্গে পুরোপুরি সহমত হতে পারি না।” পাশাপাশি, তাঁর দাবি, দুর্গাপুরে সেল-এর উদ্যোগে জাপানি সহায়তায় ২০ হাজার কোটি টাকার ইস্পাত প্রকল্প হচ্ছে, যা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম। রঘুনাথপুর, আলিপুরদুয়ার, কাটোয়ায় হচ্ছে বিদ্যুৎ প্রকল্প। এ ছাড়া, সাগর ও রসুলপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর, নয়াচর প্রকল্প, শিলিগুড়ি, উত্তরপাড়ায় ফিল্ম সিটি এ সব তো আছেই।

জমির সমস্যা হচ্ছে না?
মমতা বলেন, “না না, সব ঠিক আছে। সব হয়ে যাবে।”
তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ইনফোসিসের মতো সংস্থার আসা নিয়েও মমতা যথেষ্ট আশাবাদী। তিনি বলেন, “আমরা এসইজেডের মতো সকল সুবিধা দিয়ে যাতে ওদের আনতে পারি, শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সে ব্যাপারে আলোচনা চালাচ্ছেন। আমার দৃঢ় ধারণা, আমরা এটা পারব।”
মমতার আরও বক্তব্য, “রাজনৈতিক বিরোধিতা, সংবাদমাধ্যমের একাংশের অপপ্রচার-সহ যাবতীয় মিথ্যা ও কুৎসার জবাব দিতে আমরা মুখ বুজে কাজ করেছি। তাই দু’বছরেই রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে (এসজিডিপি) পশ্চিমবঙ্গ জাতীয় বৃদ্ধির হারকে ছাপিয়ে গিয়েছে। ২০১২-’১৩ তে জাতীয় বৃদ্ধির হার যেখানে ৪.৯৬%, রাজ্যে তা ৭.৬। শিল্পে তো জাতীয় হারের ঠিক দ্বিগুণ বৃদ্ধি আমাদের। সারা দেশে ৩.১২%, আমরা সেখানে ৬.২৪। ১০০ দিনের কাজে এই রাজ্য এখন এক নম্বরে। যোজনা কমিশনে এই সব তথ্য প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি আমরা।”
মমতা দাবি করেন, আগের সরকারের চাপানো কম করেও দু’লক্ষ কোটি টাকা ঋণের বোঝা, সেই বাবদ কেন্দ্রের টাকা কেটে নেওয়া, এ সব কিছুর পরেও আর্থিক শৃঙ্খলা জারি করে এবং আয় ও ব্যয়ের ক্ষেত্রগুলিকে পুনর্বিন্যাস করে, বিলাসী খরচ কমিয়ে যে ভাবে তাঁরা সরকার চালাচ্ছেন, তাতে মানুষের গায়ে আঁচ পড়ছে না। এটাই তাঁদের ‘ম্যাজিক’। উৎসব-অনুষ্ঠানে টাকা খরচকে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কর্তব্য বলেই মনে করেন। তাঁর কথায়, “সংস্কৃতির ঐতিহ্য রক্ষায় আমি দায়বদ্ধ। এটা আমি করবই।”
কিন্তু শুধুই সাফল্যের পরিসংখ্যান দিয়ে কিছু কিছু বাস্তবতাকে কি অস্বীকার করা যায়? যে সরকার উন্নয়নের লক্ষ্যে বদ্ধপরিকর, যে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যকে ‘স্বর্ণযুগে’ ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাঁর দল ও সরকারের গায়ে সারদা

কেলেঙ্কারির মতো ঘটনার ছিটে লাগবে কেন? কী কারণে তৈরি হল এই ধর্মসঙ্কট?
“কীসের ধর্মসঙ্কট? কোনও সঙ্কট নেই।” দার্জিলিং সফর সেরে শুক্রবার সুকনার বনবাংলো থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দরের পথে গাড়িতে বসে তীব্র প্রতিবাদ মমতার। তাঁর বক্তব্য: “আমাদের দল স্বচ্ছ। সরকার চলছে স্বচ্ছতার সঙ্গে। চ্যালেঞ্জ করে বলছি, আমাদের লুকোনোর কিছু নেই। কোনও অবৈধ টাকায় আমরা চলি না। এটাই আমাদের গর্ব। তাই দু’এক জন কে কী বলল, কী কুৎসা রটাল, তাতে আমাদের আসে-যায় না। দল চালাতে গিয়ে আজ পর্যন্ত কারও কাছে এক পয়সার জন্য হাত পাতিনি। আমাদের সরকারের ফাইলও পার্টি অফিসের নির্দেশে নড়ে না। আগে তো মহাকরণ থেকে আলিমুদ্দিন ঘুরে ফাইল সই হত। ৩৫ বছর ক্ষমতায় থেকে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি করেছে যে দল, তারা টাকা তোলার নানা কৌশল জানে। দুঃখিত, আমার সেটা শেখা হয়ে ওঠেনি। দলের জন্য টাকা তুলতে ছবি আঁকি, বই লিখি।”

কিন্তু সারদা কাণ্ডে আপনার দলের সাংসদের নাম যে ভাবে জড়িয়েছে, আরও কয়েক জন নেতা-মন্ত্রীর নাম যে ভাবে আলোচিত হচ্ছে, তাতে কি তৃণমূলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় না?
মুখ্যমন্ত্রী: “আপনাকে খুশি করতে পারলাম না। কারণ, আমার উত্তর হল, কোনও ক্ষতি হয়নি, হবেও না। একটা কথা মনে রাখতে হবে, ১০০ জনের মধ্যে দু’এক জনকে নিয়ে কোনও বিচার বা সিদ্ধান্তে পৌঁছতে চাইলে সেটা ভুল। তাই কেউ এক জন কোনও সভায় গেল বা কারও সঙ্গে ছবি বেরোল, তাতেই কি প্রমাণ হয়ে যায় যে সবাই চিটফান্ডের টাকা নিচ্ছে! তা হলে তো নেতা-মন্ত্রীদের কোনও সভা-সমিতিতেই যাওয়া চলে না। তবে হ্যাঁ, দু’এক জন একটু অন্য রকম হতেই পারে। আবার বলছি, তদন্ত হচ্ছে। কারওকে আড়াল করার কোনও অভিসন্ধি সরকারের নেই।”
• অবৈধ টাকায় আমরা চলি না। দু’এক জন কে কী বলল, তাতে আমাদের আসে-যায় না।
• বিশ্বাস করুন, চিটফান্ড-সিপিএম যোগ নিয়ে মুখ খুলতাম না। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বাধ্য করলেন।
• আমরাই কিন্তু মুন্না এবং শম্ভু কাওকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে এনেছি। জেলে আছে ওরা।
• ইট-বালি-সিমেন্টের ব্যবসা তো খারাপ নয়। তবে জোর করা যাবে না। যার নিতে ইচ্ছে হয় নেবে।
• শিল্পায়ন মানে শুধু শত শত একর জমিতে হাজার হাজার কোটির লগ্নি এর সঙ্গে সহমত নই।

তৃণমূলের সাংসদ কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে সারদা-মালিক সুদীপ্ত সেন সিবিআই-কে যে অভিযোগ জানিয়েছেন, সেটা তো লিখিত নথি। সে সম্পর্কে কী বলবেন?
মুখ্যমন্ত্রী: “কেন এ ভাবে কুণালের নাম টানা হচ্ছে? সে ওখানে শুধু মিডিয়ার চাকরি করেছে। তাকে কত লক্ষ টাকা মাইনে দেওয়া হয়েছে, তা তো মালিক এবং কর্মীর ভিতরকার বিষয়। আমি যত দূর জেনেছি, তাকে চেক মারফৎ বেতন দেওয়া হত। তাই যদি হয়, তা হলে সেই বেতন যত লক্ষ টাকাই হোক, সেটা অবৈধ টাকা বলা যাবে না। কেউ বলতেই পারেন, মাসে ১৫/১৬ লাখ টাকার অঙ্কটা অনেক বেশি। সে তো আমিও বলি। এত টাকা এক জনের কীসে লাগে? কিন্তু সেটা অন্য প্রশ্ন। কুণালকে এক সঙ্গে পাঁচ রকম মিডিয়ার কাজ করতে হতো। হয়তো তাই তাকে বেশি টাকা দিয়েছে ওরা। তার বিরুদ্ধে কারও ব্যক্তিগত রাগ থাকতেই পারে। কিন্তু এক জন একটা চিঠি লিখে কারও নাম করলেই সব প্রমাণ হয়ে গেল!”

তা হলে ওঁকে ক্লিন চিট দিচ্ছেন?
মুখ্যমন্ত্রী: “ঘুরিয়ে প্রশ্ন করে কী বলাতে চাইছেন আমার মুখ দিয়ে? শুনে রাখুন, আমি কাউকে ডিফেন্ড করছি না, করবও না। তদন্ত তার মতো এগোবে। আমি শুধু আজকের পরিপ্রেক্ষিতে এটাই বলছি যে, কুণালকে একা শিখণ্ডি খাড়া করে এবং সেই সূত্রে দল ও সরকারকে জড়িয়ে যে নোংরামো শুরু হয়েছে, সেটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমিও কয়েকটি সংবাদমাধ্যম, দু’এক জন সম্পাদকের নাম বলে দিতে পারি, যাঁদের পকেটে চিটফান্ডের টাকা ঢুকেছে। কিন্তু ও সব নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে চাই না।”

সিপিএমের বিরুদ্ধেও তো বিভিন্ন লগ্নি সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার অভিযোগ তুলছেন আপনি। অনেকে বলছেন, ‘ওরা-আমরা’ এক নৌকায়।
মুখ্যমন্ত্রী: “বিশ্বাস করুন, সিপিএমের নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে চিটফান্ডের যোগ নিয়েও আমি মুখ খুলতাম না। আমাকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বাধ্য করলেন। সভায় দাঁড়িয়ে বললেন, উনি নাকি কোনও চিটফান্ড মালিককে কাছে ঘেঁষতে দেননি। কত বড় মিথ্যে! আমি তাই বাধ্য হলাম মুখ খুলতে, কিছু ছবি দেখাতে। আমি জানতে চাই, কোনও মন্ত্রী বা নেতা কোনও সভা-সমিতিতে বা কিছুর উদ্বোধনে গেলে তাঁর পাশে চিটফান্ডওয়ালার ছবি বেরোনো, আর কোনও চিটফান্ডওয়ালার মেয়ের বিয়েতে নিমন্ত্রণ খেতে যাওয়া এক হল? তা ছাড়া, আমাদের সরকার তো দ্রুত একটা বিল আনল। যাতে চিটফান্ডের অবৈধ ব্যবসা বন্ধ হয়। আগের সরকার কী করেছিল? কাদের আমলে একের পর এক চিটফান্ড গজিয়েছে? কেন চিটফান্ড আটকাতে একটা ভুলে ভরা অসম্পূর্ণ বিল করা হল? কেন সেটা দিল্লি থেকে ফেরত আসার পরে ওরা এত বছরেও তা সংশোধন করে যেতে পারে নি? কেন চিটফান্ডদের ব্যবসা করার অনুমতি দিয়েছিল কেন্দ্র? কার কী স্বার্থ কাজ করেছে, সে সব নিয়েও আমি তদন্ত চাই। আজ পর্যন্ত কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আমাদের সরকারি ভাবে জানানো হয়নি যে, এই রাজ্যে কতগুলি চিটফান্ড অবৈধ ব্যবসা করছে। ৭৩টি কোম্পানির তালিকা তো আমরা নিজেদের উদ্যোগে জোগাড় করেছি। কমিশন গড়ে তদন্তও চালু করেছি। আমানতকারীদের স্বার্থরক্ষা করছি। সরকার নিজে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে আমানত রাখার ব্যবস্থা চালু করতে চায়। যাতে লোকে সর্বস্বান্ত না হয়।”
নানা কারণে ইদানীং ঈষৎ বিব্রত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে তৃতীয় বছর শুরুর মুখে একান্ত সাক্ষাৎকারে অবশ্য উন্নয়নের দাবির পাশাপাশি সারদা থেকে সিন্ডিকেট, কোনও প্রসঙ্গেই প্রশ্ন এড়ালেন না তিনি।

কিন্তু লোকের কাছ থেকে টাকা আমানত নিয়ে সেই টাকা সরকার খাটাবে এবং সুদ-সহ ফেরত দেবে এটা তো এক অর্থে ব্যাঙ্কিং পদ্ধতি। এটা কি সরকারের কাজ? এই কাজে যে পেশাদারি দক্ষতা দরকার, সরকারের তা থাকবে কেন?
মুখ্যমন্ত্রী: “আমরা তো সকলের মতামত চেয়েছি। সর্বস্তরের মানুষ, বিশেষজ্ঞরা মতামত দিন না। সকলের সব কথা শুনে তার পরে সিদ্ধান্ত হবে। তবে আমরা চাই, মানুষ টাকা গচ্ছিত রেখে যেন মার না খায়। সরকারি সুরক্ষায় হয়তো সুদ একটু কম দেওয়া হবে। কিন্তু টাকা হারানোর ভয় নেই।”

আপনার পরিবারকে জড়িয়েও তো এখন নানা অভিযোগ উঠছে।
মুখ্যমন্ত্রী: “এ সব বিষয়ে কথা বলতেই ঘৃণা হয়। আমার নিজের পরিবার বলে আলাদা কিছু নেই। মানুষ নিয়ে আমার বৃহৎ পরিবার। যারা কুৎসা করে, তাদের জন্য বলব, ‘ঝড়কে আমি করব মিতে, ডরব না তার ভ্রূকুটিতে’। আমি টর্নেডো, আয়লার সঙ্গে লড়তে অভ্যস্ত। আর সিপিএমের এক প্রাক্তন মন্ত্রীর অসত্য কুৎসার বিরুদ্ধে তো মানহানির মামলা করেছে আমার ভাইপো অভিষেক।”

এক দিকে যদি থাকে সারদা কাণ্ড, অন্য দিকে প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল এবং কলকাতার দুই কাউন্সিলর মহম্মদ ইকবাল ও শম্ভু কাও। সরকার ও দলকে তাঁরা তো অস্বস্তিতে ফেললেন?
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, “আমরাই কিন্তু মুন্না (ইকবাল) এবং শম্ভু কাওকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে এনেছি। জেলে আছে ওরা। খুনের অভিযোগে মামলা চলছে। দল ওদের সাসপেন্ড করেছে। এটাই বাম সরকারের সঙ্গে আমাদের তফাত। ওরা সুশান্ত ঘোষ, লক্ষ্মণ শেঠদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সৎ সাহস দেখাতে পেরেছিল?” তবে আরাবুলের বিষয়টি একটু অন্য ভাবে দেখেন মমতা। তাঁর মতে, আরাবুলকে যদিও দীর্ঘদিন জেল খেটে জামিনে বেরোতে হয়েছে, তবু কার্যত লঘু পাপে গুরুদণ্ড হয়েছে তাঁর। কারণ, রেজ্জাক মোল্লার উপরে হামলা করতে আরাবুল যাননি। তৃণমূলের সভায় রেজ্জাকদের মিছিল ঢুকে গণ্ডগোল বাধিয়েছিল। “আমরা অবশ্য তাতেও কোনও কথা বলিনি। আরাবুলকেই পুলিশ ধরে।” মন্তব্য মমতার।
আরাবুল, শম্ভু কাওদের অনুষঙ্গে সিন্ডিকেট-রাজ এবং তোলাবাজির প্রসঙ্গ উঠল। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “সমস্যাটা পুরো মিটেছে, বলব না। তবে আগের চেয়ে কমেছে। কেউ যদি ইট-বালি-সিমেন্টের ব্যবসা করে, সেটা তো খারাপ নয়। তবে জোর করতে পারবে না। যার নিতে ইচ্ছে হয়, নেবে। আর তোলাবাজি নিয়েও আমি বারবার বলে দিয়েছি, আমাদের দলের নাম করে কেউ কোথাও এমন কোনও কাজ করলেই আমাদের জানান। একেবারে নির্মূল করার দাবি করছি না। তবে যত দূর সম্ভব এগুলি দমন করবই।”
কথায় কথায় লম্বা পথ পেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় বাগডোগরা পৌঁছে গেল। এ বার কলকাতার বিমান ধরবেন তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.