শিল্পাঞ্চলে তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের খুনের ঘটনার তদন্ত ঠিক মতো এগোচ্ছে না বলে অভিযোগ তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও অবনতি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি। বার্নপুরে শনিবার দলের এক সমাবেশে তিনি বলেন, “শিল্পাঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। অর্পণ মুখোপাধ্যায়, নির্গুণ দুবে হত্যার তদন্তে পুলিশ কোনও কিনারা করতে পারেনি। সাধারণ মানুষ প্রশাসনের উপরে আস্থা রাখতে পারছেন না।” পুলিশ অবশ্য জানায়, অর্পণ-খুনের তদন্তভার রয়েছে সিআইডি-র হাতে।
গত বছর ১০ মে ভোরে হিরাপুরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বামাপদ মুখোপাধ্যায়ের ছেলে অর্পণবাবুকে বার্নপুর ইস্কোর স্টেডিয়ামের কাছে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। অর্পণবাবু নিজেও সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য ছিলেন। অপরাধীদের ধরার দাবিতে সিপিএম নেতারা বেশ কয়েক বার সমাবেশ করেছেন। শহরজুড়ে মিছিলও করেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। বছর দুয়েক আগে হিরাপুরে নরসিংহ বাঁধ এলাকায় বাড়ির কাছে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন সিপিএমের সদস্য নির্গুণ দুবেও। এই ঘটনায় পুলিশ কয়েক জনকে ধরেছে।
গত ১০ মে সিপিএমের একটি প্রতিনিধি দল আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (পশ্চিম)-র কাছে অর্পণ-খুনে দ্রুত কিনারার দাবিতে স্মারকলিপি দেয়। সূর্যকান্তবাবু শনিবার অভিযোগ করেন, তদন্তের কাজ ঠিক মতো না হওয়ায় অপরাধীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অর্পণ হত্যার তদন্তে পুলিশ যে বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি, তা একপ্রকার স্বীকার করেছে পুলিশও। এডিসিপি (পশ্চিম) সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সে জন্যই তো প্রথমে কমিশনারেটের গোয়েন্দা দফতর, পরে সিআইডি-কে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে।” অপরাধীদের প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে এডিসিপি (পশ্চিম)-র বক্তব্য, “আমি ওঁদের বলেছি, আপনারা গোপনে সে সব নাম আমাদের জানান, আমরা তা যথাস্থানে জানিয়ে দেব।”
জনসভায় সূর্যকান্তবাবু দাবি করেন, শাসকপক্ষ পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের মনোনয়নই জমা করতে দেবে না বলে তাঁদের আশঙ্কা। আসানসোল মহকুমায় চারটি পঞ্চায়েত সমিতি আছে। সেগুলির নির্বাচনে তিনি বাম দলগুলিকে জোটবদ্ধ ভাবে যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানান। বিরোধী দলনেতার আরও দাবি, তৃণমূল সমর্থকদের নিজের দলের লোকদের হাতে আক্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচাতেই এ বার ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী দরকার। তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) কার্যকরী সভাপতি ভি শিবদাসনের পাল্টা বক্তব্য, “সিপিএম বুঝেছে, গ্রামাঞ্চলে ওদের কোনও সমর্থন নেই। নিজেরা প্রার্থী দিতে পারবে না বুঝে এখন নানা রকম ধুয়ো তুলছে। আর আমাদের দলের নিচুতলায় কিছু সমস্যা রয়েছে বটে, তবে তা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয়।”
|