বার্নপুরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের ছেলে অর্পণ মুখোপাধ্যায়ের খুনের তদন্তভার নিল আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ। শুক্রবার থেকেই তদন্তের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানান গোয়েন্দা বিভাগের এসিপি চন্দ্রশেখর বর্ধন। |
বৃহস্পতিবার ভোরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র তথা হিরাপুরের প্রাক্তন বিধায়ক বামাপদ মুখোপাধ্যায়ের ছেলে, সিপিএম কর্মী অর্পণ। ঘটনার প্রতিবাদে ও দুষ্কৃতীদের ধরার দাবিতে শুক্রবার ১২ ঘণ্টা বার্নপুর বন্ধের ডাক দেয় সিপিএম। শুক্রবার সকাল থেকেই দোকান, বাজার খোলেনি। যাত্রীবাহী বাস ও অন্য যানবাহনও বিশেষ চলেনি। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ ছিল। তবে বন্ধের আওতার বাইরে রাখা হয় বড় শিল্প কারখানা ও সরকারি দফতর।
খুনের ঘটনার পরপরই সিপিএম কর্মীরা হিরাপুর থানায় বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ আশ্বাস দিয়েছিল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই খুনের কারণ খুঁজে বের করা হবে। আসানসোলের এডিসিপি (পশ্চিম) সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশ তদন্তে নামে। তবে তার মধ্যেই তদন্তভার দেওয়া হয় গোয়েন্দা বিভাগের হাতে। |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইস্কোর ‘স্ক্র্যাপ’ লোহার নিলাম সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই এই খুন হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে অনুমান করা হচ্ছে। এ বিষয়ে খোঁজখবর করার জন্য পুলিশ ইস্কো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে। পুলিশ জেনেছে, ইস্কোর আধুনিকীকরণের কাজ প্রায় শেষের মুখে। পুরনো কারখানাটির কিছু বাতিল লোহা দু’এক দিনের মধ্যেই ‘অনলাইনে’ নিলাম হওয়ার কথা। তাতে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন জমা দেন ৯ জন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম অর্পণবাবু। বর্তমানে এই আবেদনকারীদের যোগত্যা ও আর্থিক ক্ষমতা পরীক্ষা করছিলেন ইস্কো কর্তৃপক্ষ। দু’এক দিনের মধ্যেই সেই কাজ শেষ করে ‘অনলাইন’ নিলাম হওয়ার কথা। বিভিন্ন জায়গা থেকে তথ্য সংগ্রহের পরে পুলিশের অনুমান, আবেদনপত্র জমা দেওয়া ওই ন’জনের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো চাইছিলেন না, অর্পণবাবু নিলামে যোগ দিন। সে কারণেই তাঁকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। এসিপি চন্দ্রশেখর বর্ধন বলেন, “এখনও পর্যন্ত আমাদের মনে হচ্ছে, ব্যবসায়িক রেষারেষি থেকেই এই খুন হয়েছে।” |
সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, কারণ যাই হোক না কেন, খুনিদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবিতে লাগাতার আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। শুক্রবার বর্ধমান জেলা কমিটির সভায় অন্য সব বিষয়ের পাশাপাশি অর্পণবাবুকে খুনের বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়েছে। দলীয় কর্মী খুনের বিষয়টি প্রচারে এনে শিল্পাঞ্চলের সংগঠন মজবুত করে তোলা তাদের অন্যতম উদ্দেশ্য। |