পুর নির্বাচন ২০১২
জোট বানচাল, স্বস্তিতে সিপিএম
শেষমেশ ভেস্তেই গেল জোট।
কংগ্রেস ও তৃণমূলের নিচুতলার বহু কর্মীই শেষ পর্যন্ত আশায় ছিলেন, একটা রফাসূত্র ঠিক বেরোবে। দু’পক্ষই মনোনয়ন জমা দিয়ে বসে থাকলেও শেষ পর্যন্ত আলোচনার মাধ্যমে প্রার্থী প্রত্যাহার করা হবে। শুক্রবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরে পরিষ্কার, ৪৩টির মধ্যে ৩৫টি আসনে পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামছে শাসকজোটের দুই শরিক।
রাজ্যের অন্য পাঁচ পুরসভায় জোট হবে না বলে আগেভাগে বোঝা গেলেও দুর্গাপুরে এক সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেস ও তৃণমূল দুই দলের নেতারাই দাবি করেছিলেন, জোট হচ্ছেই। কংগ্রেস সূত্রের খবর, প্রথমে ১৫টি আসন দাবি করলেও শেষ পর্যন্ত তারা ১১টি নিতে রাজি ছিল। কিন্তু তৃণমূল ৯টির বেশি আসন ছাড়তে চায়নি। জোট ভেস্তে যাওয়ার জন্য দু’পক্ষই এখন পরস্পরের ঘাড়ে দায় চাপানোর চেষ্টা করছে।
কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট হবে বলে ঘোষণার সময়েই ‘মেয়র পদপ্রার্থী’ হিসেবে তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি তথা দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের নাম জানানো হয়েছিল। এ দিন তিনি বলেন, “জোট হবে ধরে নিয়েই আমরা এগিয়েছিলাম। কিন্তু কংগ্রেস ৯টির বেশি প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে না পারায় জোট বানচাল হয়ে গিয়েছে।” কংগ্রেসের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি সুদেব রায়ের পাল্টা বক্তব্য, “শিল্পনগরীর মানুষের ইচ্ছাকে মর্যাদা দিতে জোটের বার্তা দিয়েছিলাম। কিন্তু তৃণমূলের অনমনীয় মনোভাবের জন্যই জোট হল না।”
দুর্গাপুর দীর্ঘ দিন ধরেই বামেদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। গত ১৫ বছর ধরে পুরবোর্ডের দখল তাদেরই হাতে। কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনে দুর্গাপুরের দু’টি আসনই তাদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল। ফলে জোট ভেস্তে যাওয়ায় বামেরা যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে, তাতে সন্দেহ নেই। যদিও দলের জেলা নেতারা প্রকাশ্যে তা কবুল করছেন না। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদার বলেন, “আমাদের লক্ষ্য, সমস্ত বামপন্থী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করা, গণতন্ত্রকে রক্ষা করা। বিরোধীরা জোটবদ্ধ ভাবে লড়ছে কি না, তাতে কিছু যায় আসে না।” তাঁর অভিযোগ, ইতিমধ্যেই বামপ্রার্থীদের দেওয়াল লিখনে বাধা, বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন, “নির্বাচনের দিন সমস্ত মানুষ নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন কি না, সেটা দেখতে হবে।”
শুক্রবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা পার হওয়ার পরে জানা যায়, দুর্গাপুরের ৪৩টি ওয়ার্ডে এ বার মোট ১৬৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। বামফ্রন্ট ও তৃণমূল সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। এ ছাড়া কংগ্রেস ৩৫টি, বিজেপি ৩০টি, জনতা দল (ইউনাইটেড) ৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। নির্দল প্রার্থী রয়েছেন মোট ১৩ জন। মোট দু’শো জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। কংগ্রেস সর্বোচ্চ ৫১টি মনোনয়ন দাখিল করেছিল। এ ছাড়া তৃণমূল ৪৭টি, সিপিএম ৪০টি, বিজেপি ৩৬টি মনোনয়ন দাখিল করে। কংগ্রেসের ১৩টি, তৃণমূলের ৪টি, সিপিএম এবং বিজেপি-র দু’টি করে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। শুক্রবার বিজেপি-র ৪ জন, কংগ্রেসের ৩ জন এবং ৫ জন নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন।
সর্বোচ্চ ৫ জন করে প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, এ বার এমন আসনের সংখ্যা ৮টি। এই ওয়ার্ডগুলি হল ৮, ১২, ১৩, ২৪, ২৬, ২৯, ৩৬ ও ৩৭ নম্বর। বামফ্রন্ট, কংগ্রেস, তৃণমূল, বিজেপি ছাড়াও হয় জনতা দল (ইউনাইটেড) অথবা নির্দল প্রার্থীরা রয়েছেন এই সমস্ত ওয়ার্ডে। তিন জন করে প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, এমন ওয়ার্ডগুলি হল ২, ১৫, ১৮, ১৯, ২১, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৭ নম্বর। বামফ্রন্টের সঙ্গে তৃণমূলের মুখোমুখি লড়াই হচ্ছে ১০, ১৭ ও ২০, এই তিনটি ওয়ার্ডে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.