বেআইনি মদের কারবার রুখতে গিয়ে বাধা পেল পুলিশ। অভিযোগ, পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোড়ে ওই কারবারীরা। শনিবার রাতে দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার জেসপ কারখানা সংলগ্ন ভবানি পল্লিতে ঘটনাটি ঘটে। পরে অবশ্য অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তল্লাশি চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় আট জনকে। ধৃতদের মধ্যে একজন সিপিএমের দলীয় সদস্যও রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, শহরের ভবানী পল্লি, রবীন্দ্রপল্লি প্রভৃতি এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই বেআইনি মদের কারবার চলছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে অভিযোগ পেয়ে শনিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ কোকওভেন থানার পুলিশ অভিযানে যায়। পুলিশের দাবি, আগে থেকে খবর পেয়ে বেশ কয়েকজন ইট পাটকেল নিয়ে প্রস্তুত হয়েছিল। ফলে পুলিশের গাড়ি যেতেই তা লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়তে শুরু করে তারা। পুলিশ কর্মীরা নেমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলেও বিশেষ লাভ হয়না। বেগতিক দেখে এলাকা ছেড়ে চলে যান পুলিশ কর্মীরা। ঘটনার খবর পেয়ে কোকওভেন থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী গিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তখন অভিযুক্তেরা পালিয়ে যায়। এরপরেই পুলিশ তল্লাশি শুরু করে এলাকায়। ধরা হয় আট জনকে। তাদের বিরুদ্ধে বেআইনি মদের কারবার চালানো এবং পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
|
ধৃতদের মধ্যে প্রভাকর সাহা নামে একজন আবার সিপিএমের দলীয় সদস্য। রবিবার সকালে তাদের দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক প্রত্যেকের জামিন না মঞ্জুর করে দেন। বাকিদের জেল হেফাজতে পাঠানো হলেও পুলিশ প্রভাকর সাহা-সহ তিনজনকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানায়। বিচারক ওই তিনজনকে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে শনিবার রাতের ঘটনায় আর কারা জড়িত রয়েছে তা জানার চেষ্টা করে হবে। পাশাপাশি, এলাকার আর কোথায় বেআইনি মদের কারবার চলছে তাও খোঁজ নেওয়া হবে। বছর দু’য়েক আগে কোকওভেন থানা এলাকারই স্টেশন রোডের ধারে একাধিক লরি দাঁড় করিয়ে তার পিছনে চলা বেআইনি মদের কারবার রুখতে গিয়েও আক্রান্ত হয় পুলিশ। পরে সংলগ্ন নেপালিপাড়ায় অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
ধৃতদের একজন সিপিএমের দলীয় সদস্য হওয়ায় তৃণমূল বিষয়টির সঙ্গে সিপিএমের যোগাযোগের অভিযোগও তুলছে। তৃণমূলের দুর্গাপুরের ৩ নম্বর ব্লক সভাপতি সুনীল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বছরের পর বছর ধরে ওই এলাকায় বেআইনি মদের কারবার চলছে। পুলিশ অভিযান চালালে কিছুদিন বন্ধ থাকে। ফের শুরু হয়।” তাঁর অভিযোগ, বাম আমলে কিছু স্থানীয় সিপিএম নেতার প্রশ্রয়ে এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ এই বেআইনি কারবারে জড়িত ছিল। মাঝে কিছুদিন চুপচাপ থাকার পরে ইদানিং ফের তারা সক্রিয় হয়েছে। তিনি বলেন, “সিপিএম বরাবরই এই ধরণের বেআইনি কারবারে মদত দিয়ে এসেছে। শনিবারের ঘটনায় তা আরও একবার প্রমাণিত হয়ে গেল।” তবে দুর্গাপুর পূর্ব জোনাল কমিটির সম্পাদক নরেন শিকদার বলেন, “পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় ওই কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে বিষয়টি ঠিক জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।” |