গ্রামবাসীদের বাধায় ফের বন্ধ হল এসার অয়েলের ভূগর্ভস্থ মিথেন উত্তোলন প্রকল্পের কাজ। ছাঁটাই হওয়া এক নিরাপত্তারক্ষীকে কাজে ফেরানো-সহ নানা দাবিতে রবিবার বর্ধমানে কাঁকসার আকন্দারা গ্রামে রাস্তা অবরোধ হয়। প্রকল্পের গাড়ি আটকে পড়ায় একটি নির্মীয়মাণ জলশোধন কেন্দ্র ও ছ’টি পিটে কাজ ব্যাহত হয়। বিকেলে সংস্থার রানিগঞ্জ অফিস থেকে আধিকারিকেরা গিয়ে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। যদিও এ দিন আর কাজ হয়নি।
‘কোল বেড মিথেন’ (সিবিএম) তুলতে বর্ধমানের অন্ডাল, পাণ্ডবেশ্বর, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ও কাঁকসা ব্লকে একশোরও বেশি কুয়ো বা পিট খুঁড়েছে এসার। লগ্নির পরিমাণ প্রায় সাতশো কোটি টাকা। গত চার মাসে নানা দাবিতে বারবার এই কাজে বাধা দিয়েছেন বাসিন্দারা।
|
আজ, সোমবার দুর্গাপুরের গাঁধী মোড়ে আইটি পার্কে এসারের ‘সিবিএম এবং অপ্রচলিত শক্তি কেন্দ্রের’ উদ্বোধন করার কথা রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এসার কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিষয়টি ‘বড় কিছু নয়’ বলেই জানিয়েছেন। আকন্দারা গ্রামে প্রকল্পের একটি জলশোধন কেন্দ্র গড়া হচ্ছে। আশপাশে রয়েছে ছ’টি পিট। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিয়মমাফিক কাজ না করার অভিযোগে শনিবার ঠিকা নিরাপত্তাকর্মী শেখ আনারুল মিদ্যাকে বরখাস্ত করা হয়। প্রতিবাদে রবিবার সকালে পথ অবরোধ করেন এলাকার কিছু লোকজন। আনারুলের দাবি, “জলশোধন কেন্দ্রের পাশে আমার পরিবারের প্রায় এক বিঘা জমি রয়েছে। এসার কর্তৃপক্ষ তা কিনতে চান। ভাল দাম দেওয়ার কথাও বলেছেন। কিন্তু বাড়ির সবাই জমি বিক্রিতে সহমত নন। তার বদলা নিতেই আমাকে ছাঁটাই করা হল।”
স্থানীয় বাসিন্দা আয়ুব ঘোষ,
রবি ঘোষদের দাবি, “আনারুলকে কাজে ফেরাতে হবে। প্রকল্পের গাড়ি যাতায়াতে রাস্তাও খারাপ হচ্ছে। তা সারাতে হবে। প্রতিশ্রুতি মতো এলাকায় জলের পাম্পও বসাতে হবে এসার কর্তৃপক্ষকে।”
রাস্তা ব্যবহার করতে হলে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, এই দাবিতে জানুয়ারিতে কাঁকসার জাটগোড়িয়ায় এসারের প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেন বাসিন্দারা। নেতৃত্বে ছিল তৃণমূল। তিন দিন পরে শিল্পমন্ত্রী পার্থবাবুর হস্তক্ষেপে সমস্যা মেটে। ফেব্রুয়ারিতে ফরিদপুরের লবণাপাড়া ও ধবনি গ্রামেও নানা দাবিতে কাজে বাধা দেওয়া হয়। তার পরপরই কাঁকসার মলানদিঘিতে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান কিছু বাসিন্দা, যাঁদের অধিকাংশই তৃণমূল সমর্থক। |