|
|
|
|
নির্দেশ হাইকোর্টের
|
অবৈধ লাল বাতি রুখতে
ফৌজদারি-অস্ত্র পুলিশকে
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
|
লাল বাতির অবৈধ ব্যবহার রুখতে পুলিশের হাতে এ বার ফৌজদারি আইনের হাতিয়ার তুলে দিল আদালত।
এত দিন কেউ নিয়ম ভেঙে গাড়িতে লাল বাতি ব্যবহার করলেও পুলিশ ছিল কার্যত নিরূপায়। বিধিভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে প্রয়োগ করার অস্ত্র বলতে মোটরযান আইন (মোটর ভেহিক্লস অ্যাক্ট) ছাড়া তাদের হাতে কিছু ছিল না। ফলে কড়া শাস্তিও হতো না, নিয়ম লঙ্ঘন করে স্রেফ জরিমানা দিয়ে রেহাই মিলত। কিন্তু শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অসীম রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এক নির্দেশে জানিয়েছে, এ বার বেআইনি ভাবে লাল বাতি ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও পরিচয় ভাঁড়ানোর মামলা করতে পারবে পুলিশ। এবং এতে পুলিশের হাত অনেক বেশি শক্ত হল বলেই মনে করছেন লালবাজারের কর্তারা। হাইকোর্ট এ দিন কী বলেছে?
ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ: লাল বাতি-বিধি ভাঙলে ভারতীয় ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২০ ধারা (প্রতারণা) ও ৪১৯ ধারায় (পরিচয় ভাঁড়ানো) অভিযোগ আনতে পারবে পুলিশ। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিন বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।
গাড়িতে যথেচ্ছ লাল বাতির প্রবণতা রোখার উপায় খুঁজতে আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়কে আদালত-বান্ধব হিসেবে নিয়োগ করেছিল হাইকোর্ট। জয়ন্তবাবু কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের সঙ্গে কথা বলে আদালতকে জানিয়েছিলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে কর্তাদের কোপে পড়ার ভয়ে ট্র্যাফিক পুলিশ লাল বাতির গাড়ি আটকাতে ভয় পায়। এ দিন আদালত জানিয়েছে, কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তি নিয়ম ভেঙে লাল বাতি ব্যবহার করলে উচ্চকর্তাদের অনুমতি ছাড়াই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা যাবে। অনেক সময়ে দেখা যায়, লাল বাতি ব্যবহারের অযোগ্য ব্যক্তিরা লালবাতি লাগিয়ে ঘুরছেন। আবার অনেকে গাড়িতে লাল বাতি লাগানোর অধিকারী হলেও তা ঠিকঠাক ব্যবহার করছেন না। আদালতের মতে, এটাও দস্তুরমতো অপরাধ।
সাধারণত লাল বাতি দু’ধরনের গাড়ির মাথায় ঘুর্ণায়মাণ (ফ্ল্যাশার) এবং বনেটে লাগানো সাধারণ বাতি। অনেক কর্তাব্যক্তি সাধারণ বাতি ব্যবহারের অধিকারী হলেও দিব্যি ফ্ল্যাশার লাগিয়ে ঘোরেন। এর প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারকে আদালতের নির্দেশ: কারা কারা কী ধরনের লাল বাতি ব্যবহারের যোগ্য, তা সংবাদপত্র ও টিভি-তে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচার করতে হবে। বিচারপতি রায়ের বক্তব্য: শুধুমাত্র সরকারি কাজে বা কাজের প্রয়োজনে গাড়িতে লাল বাতি ব্যবহার করা যাবে। ব্যক্তিগত কাজে নয়। অন্য সময়ে বাতিটিকে কাপড় বা অন্য কিছুতে ঢেকে রাখতে হবে। এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিবার-পরিজন কোনও মতেই গাড়িতে লালবাতি জ্বালিয়ে ঘুরতে পারবেন না বলে পরিষ্কার জানিয়েছে হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের নির্দেশে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন লালবাজারের কর্তারা। নির্দেশের প্রতিলিপি না-দেখে তাঁরা সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করতে না-চাইলেও ট্র্যাফিকের এক অফিসার বলেন, “এত দিন ফৌজদারি আইন ব্যবহারের সুযোগ না-থাকায় অবৈধ লাল বাতি ধরেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া যেত না। আশা করি, কোর্টের নির্দেশে কাজ হবে।”
|
পুরনো খবর: অবাধে ছুটছে অনধিকার লালবাতি, জরিমানা ১০০ টাকা, তোয়াক্কাই করে না কেউ |
|
|
|
|
|