|
|
|
|
সতর্ক থাকতে বললেন দলকে |
জনাদেশ দেখে জবাবের মঞ্চ ২১ জুলাই
দেবাশিস ভট্টাচার্য • কলকাতা |
হাওড়া থেকে পঞ্চায়েত। আগে জয়, তার পরেই জবাব আপাতত এই লক্ষ্য নিয়ে দলকে অবিলম্বে মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সব ঠিকঠাক থাকলে পঞ্চায়েত ভোটের ফল বেরোবে ১৩ জুলাই। তার আগেই হাওড়ার লোকসভা উপ-নির্বাচন হয়ে যাবে। জয় সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী মমতা ঘনিষ্ঠমহলে জানাচ্ছেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর জবাব দেওয়ার মঞ্চ হবে ২১ জুলাইয়ের সভা। তাঁর সরকারের দু’বছর পেরোনোর সময়টি নানা কারণে বারবার জটিলতায় জড়িয়েছে। বিশেষ করে সারদা-কেলেঙ্কারি ঘিরে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন বিতর্ক। রাজ্যে অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির হঠাৎ বাড়বাড়ন্ত এবং শাসক তৃণমূলের একাধিক নেতা-সাংসদ-মন্ত্রীর সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। এমনকী, পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীরা বিষয়টিকে কাজে লাগাতেও কোমর বাঁধছে।
মমতা অবশ্য সারদা-কেলেঙ্কারির পরে তদন্ত কমিশন বসিয়েছেন। আমানতকারীদের টাকা ফেরতের জন্য ৫০০ কোটির তহবিল গড়েছেন। বিধানসভায় বিল পাশ করেছেন, যাতে এই ধরনের ব্যবসা বন্ধ হয়। পাশাপাশিই রাজনৈতিক মোকাবিলায় নেমে শ্যামবাজার, পানিহাটি ও বর্ধমানে তিনটি সভা করে অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির ব্যবসাবৃদ্ধির জন্য সিপিএম এবং কেন্দ্রের কংগ্রেস মন্ত্রীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। তবু বিষয়টি তাঁর দল এবং সরকারকে যে বিড়ম্বনায় ফেলেছে, দলের অন্দরে অনেকেই তা মেনে নেন।
এই অবস্থায় প্রথমে হাওড়া লোকসভার উপ-নির্বাচন, তার পরে পঞ্চায়েত ভোট জিতে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে ‘যাবতীয় কুৎসার যোগ্য জবাব’ দিতে চান মমতা। তাই মাঝের এই মাস দুয়েক সব দিক দেখেশুনে সতর্ক পদক্ষেপ করার জন্যও দলের সর্বস্তরে নির্দেশ দিচ্ছেন তিনি। মন্ত্রীদের ঘোরাফেরা, উৎসব-অনুষ্ঠানে যাওয়া ইত্যাদি কার্যকলাপেও নিয়ন্ত্রণ রাখার কথা বলা হয়েছে। অকারণ জটিলতা এড়াতে ছ’মাসের মেয়াদ ফুরোনোর পরে ভোটে পরাজিত হুমায়ুন কবীরের মন্ত্রিত্বের মেয়াদও আর বাড়ানো হবে না বলে স্থির করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করেন, দল বা সরকারের বিরুদ্ধে যত প্রচারই হোক, পরপর দু’টি নির্বাচনে জিততে পারলে সব কার্যত ধুয়েমুছে যাবে। কারণ জনমত পক্ষে গেলে কোনও বিরুদ্ধ প্রচার ধোপে টেকে না। দলীয় নেতা মুকুল রায়ের কথায়, “হাওড়া লোকসভা ও রাজ্যব্যাপী পঞ্চায়েত ভোট, দু’টিতেই জয় নিয়ে আমাদের কোনও সংশয় নেই। আর গণতন্ত্রে মানুষের রায়ই শেষ কথা বলে।”
রাজ্য নির্বাচন কমিশন পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করার পরই মমতার জেলাসফরের কর্মসূচি চূড়ান্ত হবে। দলীয় সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী প্রতি জেলায় গড়ে দু’দিন সময় দিতে পারেন। প্রচারের জন্য কত দিন হাতে পাওয়া যাবে, তাও বিচার্য। তবে সব জেলাতেই যাতে তিনি যেতে পারেন, সেই চেষ্টাই করা হবে। হাওড়া লোকসভার উপ-নির্বাচনী প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী গোটা দুয়েক সভা ও একটি পদযাত্রা করতে পারেন।
রেজিনগর থেকে উপনির্বাচনে হেরে যাওয়া হুমায়ুন কবীরকে আর মন্ত্রিত্বে রাখতে চান না মমতা। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসে মন্ত্রী হওয়ার পরে তিনি উপনির্বাচনে দাঁড়ান এবং হারেন। তবু মূলত অধীর চৌধুরীর মোকাবিলা করতে তাঁকে পদত্যাগ করানো হয়নি। বিধি অনুযায়ী ছ’মাসের বেশি কেউ ওই ভাবে মন্ত্রী থাকতে পারেন না। তাঁকে ফের ভোটে জিততে হবে, বা ইস্তফা দিয়ে আবার মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে হবে ছ’মাসের জন্য। হুমায়ুনের ছ’মাসের মেয়াদ শেষ হবে ১৯ মে। তৃণমূল সূত্রে খবর, তাঁকে আরও এক দফা মন্ত্রী করে কোনও ‘অহেতুক’ বিতর্ক বাধানো হবে না। তবে তাঁকে জেলা পরিষদে প্রার্থী করা হতে পারে।
|
পুরনো খবর: পুজোর পর পঞ্চায়েত ভোট, ঘোষণা মমতার |
|
|
|
|
|