শুধু সামরিক প্রশিক্ষণ নয়। ভারতের কাছ থেকে অস্ত্র এবং ‘অন্যান্য’ সাহায্যও প্রয়োজন কাবুলের। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের কাছে এই দাবি জানাতেই আগামী সোমবার তিন দিনের সফরে ভারতে আসছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। আজ নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত শাহিদা আব্দালি এ খবর দিয়ে জানান, দু’দেশের মধ্যে চলতি নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা সমঝোতা আরও জোরদার করা নিয়ে আলোচনা হবে কারজাইয়ের আসন্ন সফরে।
স্বাভাবিক ভাবেই কারজাইয়ের সফরের আগে সামরিক সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়টি বিশদে ব্যাখ্যা করতে চাননি আব্দালি। কাবুল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সময় আসন্ন। এই অবস্থায় ভারতের সাহায্যের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আব্দালি বলেন, “ভারত গত কয়েক বছর ধরে আফগান সেনাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু এখন যে সময়, তাতে শুধু মাত্র একটি অ্যাকাডেমি গড়া বা প্রশিক্ষণ দেওয়াটাই যথেষ্ট নয়। আফগান সেনা এবং পুলিশের হাতে সরঞ্জাম চাই। সে জন্য আমরা ভারতের মুখাপেক্ষী।” তাঁর যুক্তি, আফগানিস্তানে যদি তালিবানি সন্ত্রাস ফিরে আসে তা হলে তার ভুক্তভোগী হবে ভারতও। তাই নিরাপত্তার স্বার্থেই আফগানিস্তানের সামরিক ব্যবস্থায় বিনিয়োগ করাটা নয়াদিল্লির কাছে জরুরি।
পাকিস্তানে সদ্য পালাবদল ঘটেছে। তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদের দায়িত্ব নেওয়ার আগে নওয়াজ শরিফ সরাসরি আইএসআই এবং পাক সেনার অবস্থানের বিপরীতে গিয়ে জানিয়েছেন, তিনি চান ভারত এবং আফগানিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য হোক। এ জন্য পাকিস্তানের জমি ব্যবহার করতে দিতেও রাজি তিনি। নওয়াজের বক্তব্যকে এখনই গুরুত্ব দিতে চাইছে না নয়াদিল্লি বা কাবুল। আফগান রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য, “যদি তা হয়, তা হলে খুবই ভাল। কিন্তু ভবিষ্যৎই এ ব্যাপারে শেষ কথা বলবে।” কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ভারতের সঙ্গে সামরিক ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করে ইসলামাবাদের নতুন নেতৃত্বের কাছে একটা বার্তা দিতে চাইছেন কারজাই। জারদারি সরকারের আমলে আফগানিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে অপ্রাসঙ্গিক করে ইসলামাবাদ যে ভাবে তালিবান জঙ্গিদের সঙ্গে কথা শুরু করেছিল, তা ভাল ভাবে নেয়নি কাবুল। একই সঙ্গে আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে ভারতের সক্রিয়তা পছন্দ করেনি পাকিস্তান। এই অবস্থায় ভারত-আফগানিস্তান সামরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি কি ভাল ভাবে নেবে ইসলামাবাদ? আব্দালির কথায়, “সেটা নিয়ে চিন্তিত নই। ভারত কেন চিন্তায় পড়ছে!” |