রাহুলকে পাঠিয়ে নওয়াজকে বার্তা দিতে উদ্যোগী নয়াদিল্লি
পাকিস্তানে নওয়াজ শরিফের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের বদলে যাওয়ার কথা তাঁর মন্ত্রিসভার অন্য কোনও সদস্যের। কিন্তু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নওয়াজের এই জয়ের পর ইসলামাবাদে সদর্থক বার্তাই পাঠাতে চাইছে সনিয়া গাঁধীর দল। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, রাহুল গাঁধীকে কয়েক মাস পরে ইসলামাবাদ সফরে পাঠানোর কথা ভাবছেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। তৈরি হচ্ছেন রাহুলও। দু’দিন আগে কাশ্মীরের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নয়াদিল্লিতে একটি বৈঠক সেরেছেন তিনি। সেই বৈঠকে কাশ্মীরে শান্তি ফেরানো এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ফেরানো প্রসঙ্গে ইতিবাচক পদক্ষেপ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাহুল। কেন কংগ্রেস নেতৃত্ব রাহুলকে দিয়ে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরুর কথা ভাবছেন? কেনই বা তার জন্য কিছুটা সময়ও নেওয়া হচ্ছে?
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, জয়ের পর নওয়াজ শরিফের পক্ষ থেকে দিল্লিকে একের পর এক সদর্থক বার্তা পাঠানো হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু এগোনোর আগে নওয়াজ সরকারের প্রথম কয়েক মাসের পদক্ষেপ দেখে নিতে চাইছে সাউথ ব্লক। দু’দেশের মধ্যে গত বছর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার পর থেমে রয়েছে সামগ্রিক আলোচনা। সীমান্তে ভারতীয় সেনার মুণ্ডচ্ছেদ এবং তারও পরে সর্বজিৎ সিংহের হত্যার ঘটনার পর সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা থমকে গিয়েছে। তাই ভারত এখন দেখতে চাইছে, মোল্লাতন্ত্র এবং জঙ্গি-প্রভাব এড়িয়ে শান্তি প্রক্রিয়ায় কতটা এগোতে পারে পাকিস্তানের নতুন সরকার।
পাশাপাশি এটাও মনে করা হচ্ছে, মনমোহন সিংহ পাক সফরে গেলেই জনমানসে এক বিপুল প্রত্যাশা তৈরি হবে। সন্ত্রাস দমনে হাতে-কলমে কিছু করে না-দেখাতে পারলে অথবা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ প্রধানমন্ত্রীর সফরের পরেও বহাল থাকলে, মনমোহন ফিরে এসে চাপে পড়ে যাবেন। লোকসভা ভোটের আগে তাঁর সরকার ও দলের কাছে এটা আদৌ কাঙ্ক্ষিত নয়। আবার পালাবদলকে কাজে লাগিয়ে পাকিস্তানের কাছ থেকে শান্তি চুক্তি আদায় করে, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে কৃতিত্ব নেওয়াটাও ভোটের আগে কংগ্রেসের অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে। তাই সরকারের শীর্ষ কর্তাকে না পাঠিয়ে দলের শীর্ষ নেতা হিসাবে রাহুলকে ইসলামাবাদে পাঠানোই ভাল বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে তাঁর সফরের কোনও সরকারি দায়বদ্ধতা থাকবে না, কিন্তু রাহুলকে দেশের নতুন প্রজন্মের প্রতীক হিসাবে
তুলে ধরে পাকিস্তানে সদর্থক বার্তা পাঠানো যাবে।
এই পরিস্থিতিতে দু’দিন আগে কাশ্মীরের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাহুলের বৈঠকটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সেই প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক এবং বিভিন্ন পেশাদার। সূত্রের খবর সেই বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন, শরিফ যে ভাবে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছেন, তার প্রত্যুত্তর দেওয়াটা ভারতের ‘নৈতিক দায়িত্বের’ মধ্যে পড়ে। কাশ্মীরি সমাজের প্রতিনিধিদের রাহুল অনুরোধ করেছেন বিজেপির সঙ্গেও আলোচনা করতে।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির জন্য নওয়াজের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গিদের শান্ত রাখা। একই কারণে জম্মু ও কাশ্মীরকে শান্ত রাখতে হবে মনমোহন সরকারকেও। এই কাজে এ বার অগ্রণী রাহুল নিজেই। গত বছরের শেষে তিনি উপত্যকায় গিয়ে বলেছিলেন, “আমি এক জন কাশ্মীরি। কাশ্মীরি পরিবার থেকে আমি এসেছি। এখানকার মানুষের সঙ্গে আমার প্রাণের সম্পর্ক।” এখানেই না থেমে রাহুল বলেন, এক সময়ে জওহরলাল নেহরু যে ভাবে শেখ আবদুল্লার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলেন, তিনিও চেষ্টা করছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার পাশে দাঁড়াতে।
আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে সনিয়া-পুত্র পাক এবং কাশ্মীর-নীতিতে তারুণ্যের কোনও গতি আনতে পারেন কি না, সেটাই এখন দেখার।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.