কুর্সিতে বসা নিশ্চিত। এ বার ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক স্বাভাবিক করা নিয়ে আরও উদ্যোগী হলেন পিএমএল(এন) নেতা নওয়াজ শরিফ। আজ শরিফ জানিয়েছেন, তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি।
পাকিস্তানে ভোটের ফল স্পষ্ট হওয়ার পরেই কূটনৈতিক সৌজন্য দেখিয়ে শরিফকে ভারতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মনমোহন। গত কালই ফোনে তাঁর সঙ্গে কথা হয় মনমোহনের। ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করা নিয়ে তিনি যে ব্যগ্র, তাও গত কালই জানাতে চেয়েছিলেন শরিফ। জানিয়েছিলেন, তাঁর আমলেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নানা বিষয়ে আলোচনা কিছু দূর এগিয়েছিল। ফের সেই আলোচনার সূত্র ধরেই এগোতে চান তিনি। প্রায় একই সুরে বলেছেন শরিফের এক বিদেশনীতি সংক্রান্ত পরামর্শদাতাও।
তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর যে এখনই পাকিস্তানে আসার অসুবিধা আছে, তা জানেন শরিফ। তাই বলেছেন, “মনমোহনকে খুশি মনেই আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তবে তিনি আসতে পারবেন কি না সেটা অন্য বিষয়। আমরা চাই মনমোহন শীঘ্রই পাকিস্তানে আসুন। ওঁর আদি বাড়িও তো পাকিস্তানেই।” পঞ্জাব প্রদেশের গাহ শহরের বাসিন্দা ছিলেন মনমোহনের পরিবার।
এখনও পাকিস্তানের তরফে শরিফের শপথগ্রহণের কোনও আমন্ত্রণবার্তা হাতে পায়নি নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকের অফিসারদের মতে, আমন্ত্রণ পেলেও শপথগ্রহণে মনমোহনের যাওয়ার সম্ভাবনা দূর অস্ত। সম্প্রতি বেশ কিছু বিষয়ে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েন হয়েছে পাকিস্তানের। লাহৌরের জেলে সর্বজিৎ সিংহ ও জম্মুর জেলে সানাউল্লা রাঞ্জের মৃত্যু তো আছেই। তা ছাড়া সংসদে হামলায় যুক্ত জঙ্গি আফজল গুরুর ফাঁসির নিন্দা করে প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল পাকিস্তানের পার্লামেন্ট।
এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে হঠাৎই বেশি হইচই করলে মনমোহন সিংহ সরকারকে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়তে হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই শরিফকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে তাড়াহুড়ো করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা বলবীর পুঞ্জের বক্তব্য, “পাকিস্তানের ভারতের প্রতি আচরণ বদলাচ্ছে কি না তা আগে দেখা উচিত ছিল।” তবে এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা।
কেবল ভারত নয়, বিদেশনীতির অন্য দিক নিয়েও জোরদার বার্তা দিতে চাইছেন শরিফ। আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকায় মার্কিন ড্রোন বিমানের হামলা নিয়ে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ পাক জনমত। শরিফ জানিয়েছেন, আমেরিকাকে বুঝিয়ে ড্রোন হামলা থামানোর ব্যবস্থা করবে তাঁর সরকার।
পাক ভোটের এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত ফল অনুযায়ী ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ২৭২টি আসনের ১২৪টি পেয়েছে শরিফের পিএমএল (এন)। হার স্বীকার করে নিলেও প্রাক্তন শাসক দল পিপিপি-র দাবি, অনেক ক্ষেত্রেই তারা সমানে সমানে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পায়নি। জঙ্গি হুমকি ছিল। সেই সঙ্গে কয়েকটি জেলার সীমানা বদল করে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সুবিধা করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। পিপিপি প্রতিবাদ করলেও নির্বাচন কমিশন ও তদারকি সরকার তা গ্রাহ্য করেনি। |
নতুন চিনা প্রধানমন্ত্রীর জোর সীমান্তেই
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
সীমান্তই যাতে ভারত ও চিনের আসন্ন শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকের মূল বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে তার জন্য চাপ বাড়াতে শুরু করল বেজিং। চিনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের নয়াদিল্লি সফরের মাত্র এক সপ্তাহ বাকি। ভারতীয় ভূখণ্ডে চিনা সেনাদের অনুপ্রবেশের উত্তাপ এখনও টাটকা। সেই আবহেই চিনের মুখপাত্র কিন গাং আজ দিল্লিতে বললেন, “সীমান্ত নিয়ে দরকষাকষির প্রশ্নে দ্রুত একটি সমাধান সূত্র তৈরি করতে আমাদের চেষ্টা দ্বিগুণ করা প্রয়োজন। এমন সূত্র বার করতে হবে যেখানে দু’দেশই ঐকমত্যে পৌঁছতে পারে।” সেই সঙ্গে লাদাখে অনুপ্রবেশকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করে কিছুটা হুঁশিয়ারির ভঙ্গিতেই চিনা মুখপাত্র জানিয়েছেন, আর একটু হলেই ওই ঘটনা ‘হাতের বাইরে’ চলে যেত। ভারত-চিন সীমান্তে যার প্রভাবও পড়ত।
|