ভারতের প্রথম মহিলা জওয়ান শান্তি টিগ্গাকে ‘অপহরণের’ অভিযোগ ও উদ্ধারের ঘটনার তদন্তে নেমে স্পষ্টই ধন্দে পুলিশ।
ওই মহিলার দাবি এবং প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ যা জানতে পারছে, দু-য়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক বলে পুলিশেরই একটা সূত্রের দাবি। ফলে ওই মহিলা জওয়ানের ‘অপহরণ কাণ্ডে’ কাউকেই সন্দেহের উর্ধ্বে রাখছেন না তদন্তকারী অফিসারেরা।
তদন্তকারী এক অফিসারের কথায়, “শান্তিদেবী দাবি করেছিলেন, তাঁকে অপহরণের পরে দুষ্কৃতীরা বেঁধে রেখে চলে যাওয়ার পরে তিনি জ্ঞান হারিয়েছিলেন। কিন্তু গ্রামবাসীদের একাংশ পুলিশকে জানান, তাঁরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে শান্তি দেবীর তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। তখন তাঁর কথায় কোনও জড়তা ছিল না। এমনকী, এক গ্রামবাসীকে তাঁর দড়ি খুলতে গেলে প্রথমেই তিনি মোবাইলে ছবি তুলে রাখার অনুরোধ করেন। ওই অবস্থায় সে কথা তাঁর মনে থাকল কী করে?” |
তাঁরা মনে করেন জ্ঞান হারানোয় শান্তিদেবীর মাথাও ঝুলে থাকার কথা ছিল। শান্তিদেবী বলেন, “আমাকে যখন উদ্ধার করা হয়, তখন আমার জ্ঞান ছিল না। কাজেই ছবি তোলার কথা বলার প্রশ্ন নেই। কেউ তুলেছে কি না জানিও না।” তবে, উদ্ধারের আগে যে ছবি গ্রামবাসীরা তুলেছেন সেখানে শান্তিদেবীর মুখ উঁচু।
তদন্তকারীরা জানান, মহাবাড়ি-দেওপানির যে এলাকায় তাঁকে বেঁধে রাখা হয়েছিল, সেখানে রাতভর বৃষ্টি হয়েছিল বলে ওই মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন। তাঁর পোশাকও ঈষৎ ভিজে ছিল। কিন্তু এলাকায় খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে রাতে ওই এলাকায় বৃষ্টির ছিটেফোঁটাও হয়নি। জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, যে কাপড় দিয়ে শান্তি দেবীর মুখ ও চোখ বাঁধা হয়, তা একেবারে নতুন। সেটি ওড়না কিংবা সালোয়ার-কামিজের টুকরো। অথচ, শান্তিদেবীর কথায়, দুষ্কৃতীরা পুরুষ। তা হলে তাঁরা নতুন ওড়না কিংবা সালোয়ার-কামিজের টুকরো পেলেন কোথায়? বেশ কিছু অসঙ্গতির কথা মেনে নিয়েছেন জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগিও। তিনি বলেন, “অনেক তথ্যই মিলেছে। তবে, তদন্তের স্বার্থে সব কথা এখনই ভেঙে বলছি না।” শুক্রবার ভোরে মেটেলির চালসা এলাকার জঙ্গলে হাতি তাড়ানোর মাচার স্তম্ভের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায় শান্তিদেবীকে। তিনি সেনা জওয়ান হলেও বর্তমানে রেলের কর্মী। তাঁর অভিযোগ, ওই দিন রাতেই চালসা বাজারের কাছ থেকে তাঁকে অপহরণ করে দুষ্কৃতীরা। তারপর, পকেটে একটি চিঠি গুঁজে চলে যায়।
|