আলিপুরদুয়ারকে পৃথক জেলা গঠনের কথা বলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মানুষের মন জয়ের চেষ্টা করলেন তৃণমূলের নেতা ও মন্ত্রীরা। শুক্রবার আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভায় সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব একই সুরে ওই কথা বলেন। তাঁরা আলিপুরদুয়ার শীঘ্রই জেলা হবে বলে সভা জানিয়ে দেন।
আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে মূলত এই ইস্যুতে ৬টি ব্লক জুড়ে প্রচার চালানো হবে বলে তাঁরা কর্মী সভায় নেতাদের নির্দেশ দেন। পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে শুভেন্দুবাবুর মন্তব্য, “মামলার বিষয়টি মন্ত্রীরা দেখছেন। তবে যতই সামরিক বাহিনী আসুক আর আধা সামরিক বাহিনী আসুক, গ্রাম বাংলার মানুষ প্রস্তুত রয়েছেন। তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উজাড় করে ভোট দেবেন। পিছিয়ে থাকা উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য এক সময় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে বহু আবেদন নিবেদন করে ফল পাননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষমতায় আসার পর উত্তরবঙ্গের জন্য পৃথক দফতর গঠন করে ব্যাপক হারে উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হয়েছে।” |
মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারী ও গৌতম দেব।—নিজস্ব চিত্র। |
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতমবাবু অবশ্য গত দু’বছরে শুধুমাত্র জলপাইগুড়ি জেলার জন্য কী ধরণের কাজ হয়েছে এবং আগামীতে কী পরিকল্পনা রয়েছে তাই বিশেষ করে উল্লেখ করেন। বিশেষ জোর দেন আলিপুরদুয়ার জেলা গঠন নিয়ে। গৌতমবাবু বলেন, “আলিপুরদুয়ার মহকুমার মানুষকে দূরত্বের কারণে জলপাইগুড়ি জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সমস্যা হচ্ছিল। এলাকার মানুষের দাবি মেনে মুখ্যমন্ত্রী পৃথক জেলার ঘোষণা করেন।” তিনি জানান, দুইবার সর্বদল বৈঠক করে কোন ব্লক জেলার অন্তর্গত হবে তা ঠিক হয়েছে। কোথায় কোনও অফিস কাছারি হবে। সব ঠিক। ডিস্ট্রিক্ট সেশন জজের আদালত নিয়ে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সব সমস্যা কাটিয়ে শীঘ্র জেলা ঘোষণা করা যাবে। গৌতমবাবু আশারবানী শোনানোর পর তৃণমূলের নেতা কর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দেয়।
এর পরেই শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “উত্তরবঙ্গের মানুষের দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে রাজ্য সরকার যা কাজ করছে যা আগে হয়নি। আলিপুরদুয়ার জেলা হিসাবে ঘোষণা করেছে সরকার। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদ ও আলিপুরদুয়ার পুরসভা মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপহার দেবে বলে আমার বিশ্বাস। ধূপগুড়ি পুর নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না করে যে পদ্ধতিতে তৃণমূল একক শক্তিতে পুরসভা দখল করেছে। তার পুনরাবৃত্তি হবে আলিপুরদুয়ারে।”
এ দিনের সভায় রাজ্য যুব তৃণমূলের কার্যকারী সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী দিল্লিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলার নিন্দা করেন। তিনি বলেন, “যে নেতা আমাদের মন্ত্রীদের গায়ে হাত দিয়েছিলেন, তিনি কোনও কলেজে প্রচারে গেলে তাঁর নোংরামির জবাব দিতে হবে।” বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থা নিয়ে নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “সিপিএমের আমলে ওই সংস্থাগুলির জন্ম। সিপিএম-এর নেতা মন্ত্রীদের সঙ্গে তাঁদের মালিকদের কতটা মাখামাখি ছিল বা আছে তা বিভিন্নভাবে উঠে আসছে।” |