|
|
|
|
অভিযোগ জানাতে ভিড় উপচে পড়ছে কমিশনে |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
কেউ ক্ষোভে ফেটে পড়লেন, কেউ ভেঙে পড়লেন কান্নায়। শুক্রবার শিলিগুড়ির হিমাঞ্চল বিহারে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি শ্যামল সেনের নেতৃত্বাধীন কমিশনের অফিস খুলতেই সেখানে দেখা গেল এমনই নানা দৃশ্য।
কলকাতার রাজারহাটের নিউটাউনে ভিড় সামলাতে হিমশিম খেয়ে যান প্রশাসন ও পুলিশের কর্মীরা। সেখানে প্রথমে ওই কমিশনের ২০টি কাউন্টার খোলা হয়েছিল। পরে ভিড় সামলাতে আরও ১৪টি কাউন্টার খুলতে হয়।
শিলিগুড়িতে ওই অভিযোগ গ্রহণ কেন্দ্র খোলার পরে প্রথম দিনেই এজেন্ট, আমানতকারী মিলিয়ে উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার ২৩৪ জন আবেদন করেছেন। উপস্থিত ছিলেন পুলিশ-প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা।
এদিন সকাল ৯টাতে শিলিগুড়িতে কমিশনের অফিস শুরু হওয়ার সময় থেকেই উপস্থিত ছিলেন প্রমোদনগরের বাসিন্দা পেশায় রাজমিস্ত্রি ভগীরথ চন্দ্র রায়। তিনি ৪১ হাজার টাকা জমা রেখেছিলেন সারদা-য়। পাঁচ বছর পরে ১ লক্ষ ৪ হাজার টাকা ফেরত পাওয়ার কথা। তিনি বলেন, “বড় মেয়ের বিয়ের জন্য একটু একটু করে টাকা জমিয়েছিলাম। আশা করি সুবিচার পাব।”
তারবান্দার আমানতকারী বিমল মণ্ডল ক্ষোভে ফেটে পড়ে জানান, অ্যানেক্স-এ ৫০ হাজার টাকা রেখেছেন, এখন এজেন্টকে খুঁজে পাচ্ছেন না।
প্রধাননগরের মনিকা সাহা সারদা গোষ্ঠীর এজেন্ট। এলাকার আমানতকারীদের থেকে ৯ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা তুলে জমা রেখেছেন। তিনি অভিযোগপত্র জমা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁর কথায়, “আত্মীয়, প্রতিবেশীরা আমাকে বিশ্বাস করে টাকা রেখেছিলেন।
এখন সবাই অবিশ্বাসের চোখে দেখছেন।” শিলিগুড়ির ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আনন্দ হালদার জানান, মুখ্যমন্ত্রী টাকা ফিরিয়ে দেবেন আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “তাঁর কথার উপর ভরসা রাখছি।”
দার্জিলিঙের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “প্রথম দিন ৮টি কাউন্টারে অভিযোগপত্র জমা নেওয়া হয়েছে। এই গরমে যাঁরা অভিযোগ জমা দিতে আসছেন তাঁদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও রয়েছে। রোজ সংগৃহীত অভিযোগ, তথ্য কলকাতায় কমিশনের অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।” তিনি জানান, আগামী ২৯ জুন পর্যন্ত অভিযোগপত্র জমা নেওয়া হবে।
এই দিন সকাল ন’টা থেকেই নিউটাউনে ওই কমিশনের কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন পড়ে যায়। এরপরেই আরও চোদ্দটি কাউন্টার খোলা হয়। আসে বিধাননগর কমিশনারেটের অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনীও। বিভিন্ন কাউন্টারে কমিশনের কর্মী ছাড়াও বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশকর্মীদেরও কাউন্টারে অভিযোগপত্র জমা নিতে দেখা যায়।
অন্য দিন তিনটে নাগাদ কাউন্টার বন্ধ হয়ে গেলেও এ দিন রাত আটটা পর্যন্ত দেখা যায় আমানতকারীদের লাইন। এ দিন প্রায় কুড়ি হাজারেও বেশি অভিযোগপত্র জমা পড়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ দিন দুপুরে তীব্র গরমে এক আমানতকারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে পুলিশ অ্যাম্বুল্যান্স করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই দিন ২৯ হাজারের মতো অভিযোগ জমা পড়ে এখানে। |
|
|
|
|
|