|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
নতুনত্বের ছাপ লক্ষ করা যায় |
ঠাকুরবাড়ির লেখিকাদের মধ্যে স্বর্ণকুমারী, সরলা দেবী, ইন্দিরা দেবী, হেমলতা, জ্ঞানদানন্দিনী, বা এ রকম কাউকে-কাউকে নিয়ে বিচ্ছিন্ন আলোচনা হয়েছে। কিন্তু আরও অনেকেই আছেন, যাঁদের নাম বা সৃষ্টি খ্যাতির মহিমা পায়নি, অন্তরালে রয়ে গিয়েছে। অনুজা শেঠ তাঁর সাহিত্যে আত্মমুক্তি: ঠাকুরবাড়ির নারী-তে (বঙ্গীয় সাহিত্য সংসদ, ২৫০.০০) সামগ্রিক আলোচনা করেছেন কী ভাবে পারিবারিক ঐতিহ্য, অনুপ্রেরণা আর আত্মপ্রতিষ্ঠার বাসনায় সাহিত্যচর্চায় এগিয়ে এসেছিলেন ঠাকুরবাড়ির মেয়েরা। প্রস্তাবনা-য় অনুজা জানাচ্ছেন: ‘বোধহয় সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই, যেখানে তাঁদের কলম পৌঁছয়নি। কবিতা, নাটক, গল্প, ছাত্রপাঠ্যগ্রন্থ, বক্তৃতামালা, রূপকথা ও প্রবাদ সংগ্রহ, অনুবাদ সাহিত্য প্রভৃতি বিভিন্ন শাখায় তাঁদের কৌতূহলী পদসঞ্চার অবশ্যই উৎকর্ষের তারতম্য ভেদ সহ। সেই সময়ের অন্যান্য লেখিকাদের থেকে তাঁদের লেখার বিষয় এবং আঙ্গিকে যথেষ্ট নতুনত্বের ছাপ লক্ষ্য করা যায়...’।
রামকৃষ্ণের জীবনের অবিন্যস্ত ঐতিহাসিক উপাদানের সঙ্গে রবীন্দ্রজীবনপর্বের বিন্যস্ত তথ্যের মেলবন্ধন ঘটিয়ে ইতিহাস রচনার অভিপ্রায় বিজন ঘোষালের প্রসঙ্গ: রামকৃষ্ণ রবীন্দ্রনাথ-এ (পত্রলেখা, ২২০.০০)। ভূমিকা-য় তিনি লিখছেন: ‘রামকৃষ্ণের বচন যেমন ছিল তাঁর একান্ত আত্মগত, তেমনি রবীন্দ্রলেখনীর ভাব ছিল রবীন্দ্রনাথের ব্যক্তিগত। পার্থক্য যা ছিল তা আঙ্গিকে, প্রকাশভঙ্গির পদ্ধতিতে, ভাষায়— এককথায় বহিরঙ্গে।’
রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে লেখার অনুবাদ রবীন্দ্রনাথ ২২-এ (সম্পা: পূর্ণেন্দু মিত্র, ৫০.০০)। যেমন রামচন্দ্র গুহ ‘তিনি জাতীয়তাবাদ ও আন্তর্জাতিকতাবাদকে অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে সম্যক বিশ্লেষণ করেছেন এবং সংস্কৃতির মধ্যে যে সহযোগ ও সংঘাতের দিকটি রয়েছে তা তাঁর রচনায় স্পষ্ট হয়েছে।’
পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি থেকে নব সংস্করণে প্রকাশ পেল অজিতকুমার চক্রবর্তীর মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর (সম্পা: রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তী, ৪০০.০০)। ১৯১৪-য় এই জীবনী রচনার দায়িত্ব নেন অজিতকুমার, শেষ করেন ১৯১৬-য়। ভূমিকা-য় অজিতকুমার ও তাঁর এই জীবনী লেখার বৃত্তান্ত নিয়ে চমৎকার আলোচনা করেছেন সম্পাদক। রুদ্রপ্রসাদবাবু অজিতকুমার-বিশেষজ্ঞ হিসেবে সুবিদিত, এই জীবনী সম্পর্কে তাঁর মত: ‘গ্রন্থটি ঊনবিংশ শতাব্দীর সামাজিক রাজনৈতিক এবং ঐতিহাসিক দলিল’।
অন্য দিকে বারিদবরণ ঘোষের সম্পাদনায় পুনশ্চ থেকেও পুনঃপ্রকাশ হল অজিতকুমার চক্রবর্তীর মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর (২৭৫.০০)। ‘গ্রন্থপ্রসঙ্গে’ বিস্তারিত আলোচনা করেছেন বারিদবরণ, তাতে তথ্যের সমাহার পাঠকের প্রাপ্তি। যেমন এ-জীবনী প্রথম প্রকাশের পর অজিতকুমারকে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ জানান “তোমার রচিত ‘মহর্ষির জীবনচরিত’ পাইয়াছি।... ঘটনার সঙ্গে তোমার ব্যাখ্যা ও চিন্তা আলোচনা থাকায়, পাঠকের মনে চিন্তার উদ্রেক করে। এবং সে সময়ের যথার্থ অবস্থাও হৃদয়ঙ্গম হয়। উহাতে অনেক কথা আছে যাহা আমাদের পক্ষেও নূতন।”
রবীন্দ্রনাথের গল্প নিয়ে নানা রচনায় ঋদ্ধ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্পের আকার প্রকার ও ভিন্নতা বেরিয়েছে আসানসোল গার্লস কলেজের বাংলা বিভাগ থেকে। সংগ্রহযোগ্য সংকলন।
রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পে আধুনিক নারী চরিত্র, পল্লী-প্রকৃতি, বিজ্ঞান ইত্যাদি কী ভাবে এসেছে, বা রবীন্দ্রনাট্যের সংলাপে সমাজতত্ত্ব এ সব নিয়ে অনুসন্ধানী বিশ্লেষণ সুনেত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নানা রবীন্দ্রনাথ-এ (অক্ষর, ১২০.০০)। |
|
|
|
|
|