দক্ষিণ কলকাতা
সুরাহা কবে
পারদ চড়ছে সঙ্কটের
তাপমাত্রার পারদ চড়তেই রাজপুর-সোনারপুর পুর এবং গ্রামীণ এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট তীব্র হতে শুরু করেছে। বিস্তীর্ণ এই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ফি বছর গরমের সময়েই এই সমস্যা হয়। বিভিন্ন মহলে আবেদন জানিয়েও সুরাহা হয়নি।
গড়িয়া, বোড়াল, সোনারপুর, রাজপুর, হরিনাভি, চৌহাটি, জগদ্দল, মালঞ্চ, সুভাষগ্রাম, রায়পুর, প্রতাপনগর, সাহেবপুর, পাঁচঘড়া, বনহুগলি এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, গরম পড়লেই রাস্তার পাশের কলগুলিতে জল আসা অনিয়মিত হয়ে যায়। কখনও বা আসেই না। ফলে জল নেওয়া নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে বচসা রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক এলাকায় নলকূপ দিয়ে লাল জল ওঠে বলেও বাসিন্দাদের অভিযোগ।
শুকনো পুকুর
জগদ্দলের বাসিন্দা অরূপ সান্যালের কথায়: “পানীয় জল না এলে দূরের নলকূপ থেকে জল আনতে হয়। কিন্তু সেই জলও কিছু ক্ষণ পরে লালচে হয়ে যায়।” বাসিন্দাদের একাংশ জানান, সঙ্কট কখনও কখনও এমন জায়গায় পৌঁছয় যে জল কিনে খেতে হয়।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জনস্বাস্থ্য-কারিগরি বিভাগ সূত্রে খবর, গরমে নোদাখালি-সংলগ্ন গঙ্গার জলের স্তর নেমে যাওয়ায় কিছু কিছু জায়গায় সরবরাহের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কোথাও কোথাও গভীর নলকূপ বসানোর পরিকল্পনা করেছে দফতর।
সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান সভাপতি তৃণমূলের ভাস্কর চক্রবর্তী বলেন, “পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন জায়গায় পানীয় জলের সমস্যার একটা বড় কারণ হল জলের বেআইনি সংযোগ। সমস্যার কথা জেলা পরিষদকে জানিয়েছি।” এই সমিতির প্রাক্তন সভাপতি সিপিএমের সিরাজ খান বলেন: “আমরা ক্ষমতায় থাকার সময়ে এই সমস্যার সুরাহার জন্য একটা মাস্টারপ্ল্যান করেছিলাম। রাজনৈতিক পালাবদলের পরে তা আর কার্যকর করা হয়নি।”
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুর এলাকা ও সংলগ্ন এলাকাগুলিতে ভূগর্ভস্থ জলস্তর অনেক নেমে গিয়েছে। তাই নলকূপ বসিয়েও গরমের সময়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যচ্ছে না। একটি মাত্র ভূগর্ভস্থ পাম্পের উপরে গোটা পুর এলাকার জল সরবরাহ নির্ভরশীল হওয়ায় সর্বত্র সমান ভাবে জল সরবরাহ করাও যাচ্ছে না।
পুরসভার বিরোধী দলের কাউন্সিলর এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান কমল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের সময়ে এই সমস্যা মেটাতে লস্করপুরে একটা ভূগর্ভস্থ জলাধার বানিয়েছিলাম। এই বোর্ডের সময়ে নতুন কিছু হয়নি।”
এ কথা অস্বীকার করে বর্তমান উপ-পুরপ্রধান এবং সোনারপুরের (উত্তর) বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম বলেন, “ক্ষমতায় আসার পরে পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে আমরা নতুন করে পরিকল্পনা করেছি। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজও শুরু হয়েছে।”

ছবি: সুব্রত রায়




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.