দক্ষিণ কলকাতা
নিত্য দুর্ভোগ
বিপন্ন যাতায়াত
ভোর থেকেই শুরু হয় যানজট। চলে প্রায় দুপুর পর্যন্ত। তার পর ঘণ্টাখানেকের জন্য হাল্কা হলেও আবার দুপুর ৩টে থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত যানজট লেগেই থাকে। রাস্তার দু’পাশের ফুটপাথ, এমনকী, রাস্তার খানিকটা অংশও চলে গিয়েছে দখলদারির গ্রাসে। ডায়মন্ড হারবার রোড এবং নিবারণ দত্ত রোডের সংযোগস্থল নিয়ে এমনটাই অভিযোগ নিত্যযাত্রী এবং এলাকার বাসিন্দাদের।
বজবজ, মহেশতলা, বাখরাহাট, মহিষগোট, চটা, চড়িয়াল-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে ডায়মন্ড হারবার রোডের যোগাযোগ রক্ষা করছে নিবারণ দত্ত রোড। এই এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা নিয়মিত আলিপুর, আমতলা এবং বারুইপুরে যাতায়াত করেন এই অংশ দিয়ে। বাসিন্দা দেবু সামন্তের কথায়: ‘‘দিনের ব্যস্ত সময়ে নিবারণ দত্ত রোডের মোড় দিয়ে হাঁটা যায় না। দু’ধারে দখলদারির জন্য রাস্তাটা খুব বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।”
অনেকে আবার রাস্তার পাশে গাড়ি রেখে দীর্ঘ ক্ষণের জন্য উধাও হয়ে যান। সকাল থেকেই রাস্তার উপরে পাইকারি বাজার বসে। রাস্তার উপরেই লরি বা ট্রাক থেকে পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজ চলে। সারা দিন বিকিকিনিও চলে রাস্তার উপরেই। রাস্তায় আটকে পড়ে একের পর এক গাড়ি। ট্রাফিক পুলিশ থাকলেও তাতে কার্যত লাভ হয় না কিছুই।
ডায়মন্ড হারবার রোড এবং নিবারণ দত্ত রোডের সংযোগস্থল হল দক্ষিণ শহরতলির অন্যতম ব্যস্ত এলাকা। বাসিন্দারা জানান, এই সংযোগস্থল দিয়ে এলাকার অনেক স্কুলপড়ুয়া নিয়মিত যাতায়াত করে। তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে অনেক বার এই সমস্যার কথা বিভিন্ন মহলে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। উল্টে রাস্তার দুই পাশে দিনের পর দিন দখলদারি বেড়েই চলেছে। যে যেখানে পারছেন পসরা সাজিয়ে বসে পড়ছেন। কেউ কিছু বলে না। পথচারীদের অভিযোগ, ছোটখাটো দুর্ঘটনা এই এলাকায় লেগেই থাকে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিবারণ দত্ত রোড পূর্ত দফতরের আলিপুর ডিভিশনের আওতায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, “শুধু নিবারণ দত্ত রোড নয়, জেলায় পূর্ত দফতরের অনেক রাস্তার পাশেই এই ধরনের দখলদারি রয়েছে। রাস্তার দুই পাশে দখলদারি গজিয়ে ওঠার পিছনে অনেক সময় রাজনৈতিক মদতও থাকে। তাই বার বার চেষ্টা করেও এই ধরনের সমস্যার কোনও সুরাহা করে ওঠা যায় না।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের আবু তাহের সর্দার বলেন, “নিবারণ দত্ত রোডের এই সমস্যা দীর্ঘ দিনের। আমরা ওই এলাকার সমস্যা নিয়ে পূর্ত দফতরের সঙ্গেও আলোচনা করেছি। আশা করছি, দ্রুত ওখানকার পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”

ছবি: অরুণ লোধ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.