পূর্ব কলকাতা
বিলম্বিত প্রকল্প
মিটল না তৃষ্ণা
ধাপা জলপ্রকল্প থেকে জল সরবরাহের জন্য ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের ধারে পাইপলাইন বাসানো নিয়ে সমস্যায় পড়েছে কলকাতা পুরসভা। বছর চারেক আগেই কাজ শুরু হয়েছিল এই প্রকল্পের। গত বছরের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে এমনটাই ঠিক ছিল। কিন্তু এক বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এই কাজ এখনও শেষ হয়নি। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, চলতি বছরের শেষের দিকে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ধাপা জলপ্রকল্প নিয়ে কিছু সমস্যা থাকায় তা শেষ হতে একটু বেশি সময় লাগছে। তবে, কাজ দ্রুত এগোচ্ছে। এই প্রকল্প তাড়াতাড়ি শেষ হবে বলে আমরা আশাবাদী।”
পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল বিভাস মাইতি বলেন, “ধাপা জলপ্রকল্প থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানীয় জল বুস্টার পাম্পিং স্টেশনে সরবরাহের জন্য পাইপ বসানোর পরিকল্পনা ছিল পুরসভার। কিন্তু হঠাৎই বাইপাস সম্প্রসারণের কাজ শুরু হওয়ায় আমাদের এই পরিকল্পনা আটকে যায়। বর্তমানে এই প্রকল্প আবার শুরু হয়েছে। ফলে, স্বাভাবিক ভাবেই ধাপার জলপ্রকল্পের সামগ্রিক কাজ বিলম্বিত হচ্ছে।”
পুরসভার জল সরবরাহ দফতর ধাপা জলপ্রকল্পের জন্য দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব কলকাতার অনেক জায়গায় বুস্টার পাম্পিং স্টেশন এবং ওভারহেড জলাধার তৈরি করেছে। ধাপা জলপ্রকল্প থেকে পরিস্রুত পানীয় জল পাইপলাইনের মাধ্যমে এই জলাধারগুলিতে আসবে। এই প্রকল্পে জল সরবরাহের জন্য গোলাম জিলানি খান রোডে একটি বুস্টার পাম্পিং স্টেশন এবং ১১টি ভিন্ন জায়গায় ওভারহেড জলাধার নির্মাণের কাজ চলছে। এই জায়গাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য পাটুলি, আনন্দপুর এবং মুকুন্দপুর। এই বুস্টার পাম্পিং স্টেশনগুলি থেকেই তিলজলা, তপসিয়া, ঢাকুরিয়া, পরিকল্পনা করেছে দফতর।
সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান সভাপতি তৃণমূলের ভাস্কর চক্রবর্তী বলেন, “পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন জায়গায় পানীয় জলের সমস্যার একটা বড় কারণ হল জলের বেআইনি সংযোগ। সমস্যার কথা জেলা পরিষদকে জানিয়েছি।” এই সমিতির প্রাক্তন সভাপতি সিপিএমের সিরাজ খান বলেন: “আমরা ক্ষমতায় থাকার সময়ে এই সমস্যার সুরাহার জন্য একটা মাস্টারপ্ল্যান করেছিলাম। রাজনৈতিক পালাবদলের পরে তা আর কার্যকর করা হয়নি।”
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুর এলাকা ও সংলগ্ন এলাকাগুলিতে ভূগর্ভস্থ জলস্তর অনেক নেমে গিয়েছে। তাই নলকূপ বসিয়েও গরমের সময়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যচ্ছে না। একটি মাত্র ভূগর্ভস্থ পাম্পের উপরে গোটা পুর এলাকার জল সরবরাহ নির্ভরশীল হওয়ায় সর্বত্র সমান ভাবে জল সরবরাহ করাও যাচ্ছে না।
পুরসভার বিরোধী দলের কাউন্সিলর এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান কমল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের সময়ে এই সমস্যা মেটাতে লস্করপুরে একটা ভূগর্ভস্থ জলাধার বানিয়েছিলাম। এই বোর্ডের সময়ে নতুন কিছু হয়নি।”
এ কথা অস্বীকার করে বর্তমান উপ-পুরপ্রধান এবং সোনারপুরের (উত্তর) বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম বলেন, “ক্ষমতায় আসার পরে পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে আমরা নতুন করে পরিকল্পনা করেছি। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজও শুরু হয়েছে।”

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.