দু’জন ভিন্ন ধরনের বোলার, ওদের স্কিলও একেবারে আলাদা। কিন্তু ওরা যে আমাদের দলের সম্পদ, তা প্রমাণের ব্যাপারে ওরা একই মেরুতে। ঠিকই ধরেছেন, মিচেল জনসন এবং লাসিথ মালিঙ্গার কথাই বলছি।
মিচের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সুইং। আক্ষরিক অর্থেই একজন উইকেট শিকারি। নিখুঁত বল করার ক্ষমতা মিচের ঈশ্বর-প্রদত্ত। ঠিক জায়গায় বল রাখতে পারলে ওকে রোখা মুশকিল। ওর পেস ও দুরন্ত সুইং-এর ‘ফিউশন’ ব্যাটসম্যানদের পক্ষে সর্বদাই বিপজ্জনক।
লাসিথ আবার অনেক দিক থেকেই মিচের সম্পূর্ণ বিপরীত। হ্যাঁ, লাসিথও সুইংয়ের উপর নির্ভর করে ঠিকই। কিন্তু প্রথাগত সুইংয়ের থেকে রিভার্স সুইং ওর বেশি পছন্দ। নতুন বল হোক বা পুরনো, স্লো ইয়র্কার বা কুইক ইয়র্কার এবং দুর্দান্ত স্লো ডেলিভারি দিয়ে ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্ত করতে ওস্তাদ। এ বছর তো অনেক বেশি বাউন্সারও দিচ্ছে। সে জন্য ডেথ ওভারে ওর বল বোঝা বেশ কঠিন হয়ে ওঠে। |
যে ভাবে প্র্যাক্টিস করে লাসিথ, সেটাও দুর্দান্ত। অন্য প্রান্তের পপিং ক্রিজে দুটো জুতো রেখে দিয়ে তাতে বল ছোঁয়ানোর চেষ্টাই ওর ইয়র্কারের অনুশীলন। বেশ কয়েক দিন ধরে ওকে খুব কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা হওয়ায় এটুকু বলতে পারি, বেশির ভাগ বলই কিন্তু ও ছুঁইয়ে দেয়, ফস্কায় কম। বাইরে থেকে তো আর এই অধ্যাবসায় দেখার সুযোগ হয় না আপনাদের, চূড়ান্ত ফলটাই দেখেন। তাই বেশির ভাগ মানুষই বুঝতে পারেন না, কত পরিশ্রম রয়েছে এর নেপথ্যে।
প্রত্যেক সেশনে প্র্যাক্টিস করা ফাস্ট বোলারদের পক্ষে সম্ভব নয়। মিচ আর লাসিথকে কিন্তু সব সময় প্র্যাক্টিসে দেখা যায়। হয়তো প্র্যাক্টিসে দু’তিন ওভারের বেশি বল করে না। নির্দিষ্ট কিছু ডেলিভারি আর বোলিং দক্ষতায় শান দেওয়ার উপরই জোর দেয়। প্রত্যেক দু-তিন দিন অন্তর ম্যাচ। তার ওপর আবার সফরের ধকল। এ সবের পরও ম্যাচে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে তরতাজা রাখাটা খুব জরুরি।
এত লম্বা টুর্নামেন্টে যে কোনও সময়ে ক্রিকেটারের শারীরিক বা মানসিক ক্লান্তি আসতেই পারে। এখানেই দলের সাপোর্ট স্টাফের কাজ শুরু হয়। এমন অবস্থায় কী করতে হবে, তা অবশ্য বেশির ভাগ ক্রিকেটারই জানে। আত্মবিশ্বাসটুকু ফিরিয়ে দেওয়াই আমাদের আসল কাজ।
আজ ম্যাচ পুণেতে। লো, স্লো উইকেট। আমাদের বোলিং পরিকল্পনাতেও সেই হিসেবে পরিবর্তন আসবে। পরিবেশের সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নেওয়াটাও জরুরি। কী ভাবে বল করতে হবে, কোন লেংথে বল করতে হবে, কোন ফিল্ড এই লেংথের সঙ্গে খাপ খাবে, এটাই আসল ব্যাপার। এতগুলো ম্যাচ খেলার পর অবশ্য আমাদের দলের ছেলেদের কাছে ব্যাপারটা বেশ সহজ হয়ে গিয়েছে। আজও তা সমস্যা হবে বলে মনে হয় না। |