আইপিএলের পাঁচ চমকের
মধ্যে দু’টো কিন্তু আমাদের
ই নিয়ে তিন-তিনটে আইপিএল আমার ডাগআউটে কাটল। চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি, টুর্নামেন্টটা কী ভাবে বদলে যাচ্ছে। আগে আইপিএল মানে স্বাভাবিক ধারণাটা ছিল, চোখ বুজে চালানোর ক্রিকেট। বলের গুণাগুণ বোঝার দরকার নেই, তুমি টেকনিক মেনে ব্যাটিং করছ কী করছ না সেটাও বড় কথা নয়, শুধু রানটা করলেই চলবে। এত দিন আইপিএল মানে ছিল তারুণ্যের বিস্ফোরণ। বিশ্ব কাঁপানো ক্রিকেটার যারা, যাদের আমরা কিংবদন্তি ধরি, তারা অনেকেই আইপিএলে সে ভাবে সাফল্য পায়নি। উদাহরণ তেন্ডুলকর। উদাহরণ দ্রাবিড়। উদাহরণ লক্ষ্মণ।
কিন্তু এ বার দেখছি টুর্নামেন্টটা শুধুই তরুণদের নেই। সিনিয়রদেরও হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রাবিড়ের মতো ক্রিকেটার, যাঁরা কিনা এত দিন টেস্ট ক্রিকেটে দুধর্র্র্ষ ছিল, তারাও ফর্ম্যাটটার সঙ্গে সুন্দর মানিয়ে নিয়েছে। আসলে ব্যাপারটা কী জানেন, টুর্নামেন্টটা ছ’বছর হয়ে গেল। এত দিন আইপিএল বস্তুটা কী, বুঝতে লেগেছিল সবার। যখন বোঝা গেল এটাও আসলে ক্রিকেট, এখানেও টেকনিকের ততটাই দরকার যতটা টেস্ট ক্রিকেটে, সচিন-দ্রাবিড়দের ব্যাপারটা ধরতে আর সমস্যা হল না।
টেকনিকেই টেক্কা
আরও একটা জিনিস দেখছি। আইপিএল ফাইভ পর্যন্ত টুর্নামেন্টে এক জন করে এমন ক্রিকেটার উঠে আসত, যাকে তার আগে কেউ চিনত না। জানত না। কিন্তু সে মহাতারকাদের কাছ থেকে প্রচারের যাবতীয় আলো কেড়ে নিয়ে চলে যেত। পল ভলথাটিকে নিশ্চয়ই এখনও ভোলেননি? অনেকে হয়তো প্রশ্ন তুলবেন, কেন, সঞ্জু স্যামসনও তো এ বার উঠে এল। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে সঞ্জুর এটা প্রথম আইপিএল নয়। আগের বারই তো ও কেকেআরে ছিল। ম্যাচ না পেলেও ব্যাপারটার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ভাল সুযোগ পেয়েছে। তবে গেইল, ডে’ভিলিয়ার্স, দ্রাবিড়, সচিন এদের কারও উপর থেকে কিন্তু ও স্পটলাইট কেড়ে নিতে পারেনি। তাই বলছি, এ বারের আইপিএলটা একটু আলাদা। মহাতারকাদের এ বার মহাতারকার মতোই দেখাচ্ছে।
সঞ্জুকে নিয়ে আমার একটা কথা বলারও আছে। মনে হয় না ভলথাটির মতো অবস্থা ওর হবে। ও যা মারে, সব ক্রিকেটীয় শট। ভলথাটিদের মতো আনঅর্থোডক্স শট মারার ব্যাপার নেই ওর মধ্যে। যার জন্য বলব, ও ভবিষ্যতের সম্পদ। এ বার যদিও ব্যাটসম্যানদের শট বাছাইয়ে ‘আননোন ফ্যাক্টর’ বিশেষ দেখছি না। রিভার্স সুইপ, প্যাডল সুইপ এগুলো হাতেগোনা কয়েক জন মারতে পারত। যেমন প্যাডল সুইপ মারাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল সচিন। এ বার কিন্তু অনেকের ব্যাটেই এ সব স্ট্রোক দেখলাম। মানে আগে যেটা বিরিয়ানি ছিল, এখন সেটা ডালভাত হয়ে গিয়েছে!
পাঁচ বিশেষত্ব
• ভুবনেশ্বরের ‘নাকল’ বল
• আনঅর্থোডক্স ব্যাটিং কম, ক্লাস বেশি
• ভারতের ক্রিকেট ম্যাপে জম্মু ও কাশ্মীর
• ব্যাটিং-বিরিয়ানি এখন ডালভাত
• স্পটলাইটে মহাতারকারাও
ব্যাটসম্যানদের কথা অনেক হল। এ বার বোলারদের কথায় আসি। পেপসি আইপিএলে বোলারদের নিয়ে একটা কথা বলতেই হবে। ওরা খুব স্মার্ট হয়ে গিয়েছে। নিত্যনতুন ভেরিয়েশন নিয়ে আসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সমানে। স্লোয়ার, ইয়র্কার, বাউন্সার এক জন পেসারের যা যা অস্ত্র থাকা সম্ভব, বিনয় কুমার বা অশোক দিন্দাদের সে সব বার করতে দেখছি। ভুবনেশ্বরকে আবার পুণের নেটে দেখি রোজই কিছু না কিছু নতুন করতে চায়। ওর দু’দিকে বল মুভ করানোর ক্ষমতাটা জন্মগত। এ বার তো দেখলাম নক্ল’ বল করার চেষ্টাও করছে। মানে যেটা কেকেআরের নারিনের সেরা অস্ত্র।
এ বারের আইপিএলে আরও একটা চমক আছে। সেটা আমাদের ফ্র্যাঞ্চাইজিই দিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে এর আগে কোনও ক্রিকেটার আইপিএলে খেলেনি। বৃহস্পতিবার পুণেতে কেকেআরের বিরুদ্ধে পারভেজ রসুলকে আমরা খেলালাম। চার ওভারে খুব টাইট বল করল। কালিসের উইকেটও পেল। ছেলেটার টেকনিক, টেম্পারামেন্ট, সবই একদম ঠিকঠাক। ভারতীয় ক্রিকেটের ম্যাপে না থাকা একটা রাজ্যের ক্রিকেটার কালিসের উইকেট তুলছে, এটা কত বড় বিজ্ঞাপন বলুন তো! এর পর কাশ্মীর থেকে যদি কোনও ক্রিকেটার ভারতীয় দলেও ঢুকে যায়, অবাক হব না।

বিরল অভিনন্দন
আইপিএলের ছ’বছরের ইতিহাসে বুধবারই জম্মু ও কাশ্মীরের সর্বপ্রথম ক্রিকেটার হিসাবে কোটি টাকার বিনোদন ক্রিকেটে আবির্ভাব ঘটান পারভেজ রসুল। পুণে ওয়ারিয়র্সের হয়ে কেকেআরের বিরুদ্ধে। ম্যাচে বিশেষ কিছু দাগ রাখতে না পারলেও রসুলকে রাজ্যের প্রথম আইপিএল ক্রিকেটার হওয়ার নজির গড়ার জন্য এ দিন ২৪ বছরের স্পিনারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। পুণের প্রথম ১২টা ম্যাচে বসে থাকার পর নাইটদের বিরুদ্ধে তেরোতম ম্যাচে রসুল সুযোগ পান। “আমার জীবনের সবচেয়ে গর্বের দিন,” বলেন রসুল।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.