উলুবেড়িয়া মহকুমা সংশোধনাগারে বিচারাধীন মহিলা বন্দিদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড নেই। ফলে একদিকে যেমন মামলার কাজে সমস্যা হচ্ছে, অন্য দিকে বিপাকে পড়েছে পুলিশও। কারামন্ত্রী হায়দর আজিজ সফি বিষয়টির গুরুত্বের কথা স্বীকার করে বলেন, “রাজ্যের অনেক সংশোধনাগারেই মহিলাদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড নেই। সংশোধনাগারগুলিতে যাতে বিচারাধীন মহিলা বন্দিদের জন্য পৃথক ওর্য়াড তৈরি হয়, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।”
উলুবেড়িয়ামহকুমা সংশোধনাগারে বাগনান, উলুবেড়িয়া, শ্যামপুর, উদয়নারায়ণপুর, জয়পুর, বাউড়িয়া এবং আমতা এই সাতটি থানার বিচারাধীন বন্দিদের রাখার ব্যবস্থা আছে। উলুবেড়িয়া জিআরপি থানার বন্দিদেরও রাখা হয় এখানে। কিন্তু থাকার ব্যবস্থা আছে শুধু পুরুষ বন্দিদেরই। মহিলাদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড নেই। বিশেষ করে বধূ নির্যাতন, বধূকে আত্মঘাতী হতে প্ররোচনা দেওয়া এবং বধূ হত্যা-সংক্রান্ত মামলায় অনেক মহিলা ধরা পড়েন। তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর প্রয়োজন হলেও উলুবেড়িয়ায় রাখার কোনও ব্যবস্থা নেই।
এক সময়ে বিচারাধীন মহিলা বন্দিদের রাখা হত হাওড়া জেলা সংশোধনাগারে। কিন্তু কয়েকব ছর হল এই সংশোধনাগারেও মহিলাদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন কোনও মহিলার জেল হাজতের আদেশ হলে বা জামিনের আবেদন নাকচ হলে তাঁদের পাঠাতে হয় আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে। এখানে মহিলাদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড রয়েছে।
কিন্তু এই ব্যবস্থার ফলে বেশ অসুবিধা হয় বলে পুলিশ ও আইনজীবীরা জানিয়েছেন। তাঁদের বত্তব্য, সকাল ১০টার সময় কোনও মামলা শুরু হওয়ার কথা থাকলে অনেক সময় মহিলাদের কলকাতা থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আনতে পারা যায় না। মামলার শুনানি পিছিয়ে যায়। তা ছাড়া, মামলাটি যে থানা এলাকার সেই থানার পুলিশকেই বিচারাধীন মহিলা বন্দিদের আলিপুর থেকে নিয়ে আদালতে হাজির করাতে হয়। আবার কোনও মহিলার জামিনের আবেদন নাকচ হয়ে গেলে আদালত থেকে ফের ওই বন্দিকে আলিপুরে পৌঁছে দিয়ে আসতে হয়। এতে পুলিশের সময় নষ্ট হয়। দিনভর একটি কাজেই আটকে থাকতে হয়।
জেলা গ্রামীণ পুলিশের এক কর্তা জানান, উলুবেড়িয়া মহকুমা সংশোধনাগারে মহিলাদের জন্য একটি পৃথক ওয়ার্ড খোলা হলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। উলুবেড়িয়া মহকুমা সংশোধনাগারে মহিলাদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড খোলার দাবি জানান আইনজীবীরাও।
কারামন্ত্রী বলেন, “যে সব জেলা ও মহকুমা সংশোধনাগারগুলিতে মহিলাদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড নেই সেখানে তা চালু করার বিষয়টি সরকার গুরুত্ব দিয়েই বিবেচনা করছে। তবে এর জন্য প্রচুর টাকার প্রয়োজন। টাকা হাতে পেলে প্রকল্পটি অবশ্যই বাস্তবায়িত করা হবে।” |